গ্যাসের লিংক করতে ২০০ টাকা লাগছে, সেই অভিযোগে মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাসের বাড়িতে বিক্ষোভ গ্রাহকদের। নদিয়ার কৃষ্ণনগরে। ২০ ডিসেম্বর ২০২৩। ছবি : সুদীপ ভট্টাচার্য।
রাজ্যের মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাসের স্ত্রী রাষ্ট্রায়ত্ত এক গ্যাস কোম্পানির ডিলার। ডিলারের অফিসে রান্নার গ্যাসের সঙ্গে আধারের বায়োমেট্রিক তথ্য জুড়তে গেলে গ্যাস ওভেনের পাইপ কেনা ‘বাধ্যতামূলক’ করা হয়েছে। তার জন্য গুনতে হচ্ছে দুশো টাকা। অভিযোগ, যাঁরা সেই টাকা দিতে অসম্মত হচ্ছেন, তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রতিবাদ করায় জোটে হুমকি। তাতেই আগুনে ঘি পড়ে। অফিসের পাশেই মন্ত্রীর বাড়ি। সেই বাড়ির সামনে বুধবার বিক্ষোভ দেখালেন গ্রাহকদের একাংশ। মন্ত্রীর বাড়িতে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীর সঙ্গে তাঁদের ধস্তাধস্তিও হয় বলে অভিযোগ। যদিও খানিক পরে বিক্ষোভ থেমে যায়।
কৃষ্ণনগর শহরে চূর্ণী গ্যাস সার্ভিসের মালিক মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাসের স্ত্রী মীনাক্ষী বিশ্বাস। কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ মতো ডিলারের অফিসে গ্রাহকদের আধারের বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। গ্রাহকদের একাংশ জানান, সেই তথ্য দেওয়ার সময় গ্রাহকদের গ্যাস ওভেনের পাইপ নিতে ‘বাধ্যতামূলক’ করা হয়েছে। তার দুশো টাকা নেওয়া হচ্ছে। তবে কোনও রসিদ দেওয়া হচ্ছিল না। বিষয়টি নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে অসন্তোষ দানা বাঁধে। বুধবার বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গেলে ডিলারের অফিসের কর্মীরা গ্রাহকদের একাংশকে হুমকি দেন বলে অভিযোগ। তার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। সংস্থার অফিসের পাশেই ডিলার মন্ত্রীর বাড়ি। গ্রাহকেরা বাড়ির সামনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। সেই সময় নিরাপত্তারক্ষীর সঙ্গে তাঁদের ধস্তাধস্তিও হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের কেউ কেউ জানিয়েছেন।
এক গ্রাহক সঞ্জিত দত্ত বলেন, “বায়োমেট্রিক তথ্য দিতে এলে আগে দুশো টাকা দিতে হচ্ছে। তবে কোনও রসিদ দেওয়া হচ্ছিল না। যাঁরা টাকা দিতে চাইছেন না, তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শুধু তাই নয়, প্রতিবাদ করায় গ্যাস বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দিচ্ছে।”
যদিও মন্ত্রীর স্ত্রী তথা ডিলার মীনাক্ষী বিশ্বাস বলেন, “ইন্ডিয়ান ওয়েলই ঠিক করেছে যে, বায়োমেট্রিক তথ্য দিতে এলে গ্যাস ওভেনের পাইপ নিতে হবে। যদিও আমরা কাউকে তা নিতে বাধ্য করছি না।” তিনি বলেন, “ভাড়া করা লোকেরা এ সব করছে। তাঁরা আমার গ্রাহকই নন। মন্ত্রীর বদনাম করতেই তারা এমনটা করছে।”
বিষয়টি সামনে আসার পরই ময়দানে নেমে পড়েছে বিজেপি। বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার মিডিয়া আহ্বায়ক সন্দীপ মজুমদার বলেন, “কেন্দ্র গ্যাসের কালোবাজারি রুখতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর জন্য কোনও টাকা দিতে হচ্ছে না। অথচ স্বয়ং মন্ত্রীর স্ত্রী হয়ে বেআইনি ভাবে টাকা আদায় করছেন। এটা অত্যন্ত লজ্জার।”
এই প্রসঙ্গে মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস বলছেন, “দেশের সর্বত্রই এটা হচ্ছে। বিজেপি সরকারের জন্য এমনটা হচ্ছে। অল্প সময়ের মধ্যে সকলের বায়োমেট্রিক তথ্য নিতে গিয়ে আমাদের মোটা টাকা পারিশ্রমিক দিয়ে চার-পাঁচ জন করে কর্মী নিয়োগ করতে হয়েছে। সেই টাকা কে দেবেন?”
তবে গ্যাস ডিলারদের সংগঠনের কর্তারা জানাচ্ছেন, আগামী দিনে নতুন ধরনের সিলিন্ডার ব্যবহার করা হবে। তবে তার জন্য ‘নতুন ধরনের’ পাইপ ব্যবহারের কথা গ্যাস কোম্পানিগুলি বলেনি। তেমন কোনও নির্দেশিকাও তাঁরা পাননি। নদিয়া জেলা এলপিজি ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন,“বায়োমেট্রিক তথ্য নেওয়ার সঙ্গে পাইপ কেনার কোনও সম্পর্ক নেই। এমন কোনও নির্দেশও নেই। তবে ওখানে কী হয়েছে, সেটা খোঁজ না নিয়ে বলতে পারব না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy