অবরোধের ভোগান্তি।— নিজস্ব চিত্র
তাঁর গড়ে ফাটল ধরেছে।
ভাদুড়ে বর্ষায়, ‘তৃণমূলের দখল অভিযানে’র জেরে একের পর এক পুরসভার মতোই আস্ত মুর্সিদাবাদ জেলা পরিষদই ধুয়ে মুছে যাওয়ার জোগাড়। মঙ্গলবার, সেই দখলদারির স্রোতে বাঁধ দিতে সটান রাস্তায় নেমে পড়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।
সঙ্গে নিয়েছেন দলীয় বিধায়ক আর জেলা পরিষদের সদস্যদের, তার পর রাস্তার মোড়ে, মানুষের সামনেই তুলে ধরেছেন প্রশ্ন— ‘‘এই দেখুন, ওঁদের সঙ্গে করে এনেছি। ওঁরা দলীয় প্রতীকে জিতলেও তৃণমূলের হুমকি কিংবা প্রলোভনের চাপে বিকিকিনির মুখে।’’
দলের সেই সব জনপ্রতিনিধিরা যাতে দলত্যাগের পথে না হাঁটেন, পরোক্ষে মানুষের সামনে দাঁড় করিয়ে এ দিন সকালে, তাঁদের সে কথাই স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন অধীর চৌধুরী।
বহরমপুরের আনাচকানাচে ঘুরে চেষ্টা করেছেন, মানুষের মধ্যেও রাজনৈতিক ‘বিকিকিনির’ বিরুদ্ধে ঘৃণা সঞ্চার করাতে।
মুশির্দাবাদ জেলাপরিষদ যে চলতি বছরের মধ্যেই ‘হাতবদল’ হয়ে য়াবে, দলের জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী তা দিন কয়েক আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন। বস্তুত, ভাঙনটা সুরু হয়েছিল তার জেরেই। এ দিন, সেই ভাঙনে বাঁধ দিতেই অধীরের এই মরিয়া চেষ্টা।ইতিম্যেই হারিয়েছে, জঙ্গিপুর-আজিমগঞ্জ-বেলডাঙা, টলমল করছে জেলা পরিষদ। কানাঘুষোয় সোনা যাচ্ছে উল্টে য়াওরা মুখে খোদ বহরমপুর পুরসভাও। নিজের শহরের মানুষের সামনেই তাই এ দিন ‘বিচার’ চাইতে রাস্তায় নেমেছেন অধীর।
সোমবার শহরের, গোরাবাজার, নিমতলা মোড়ে সভা করেছিলেন তিনি। এ দিন, কল্পনা সিনেমা মোড়েও পথসভা করেন তিনি। আজ, বুধবার রয়েছে খাগড়া চৌরাস্তা মোড়ে সভা।। তাঁর অনুগামীরা জানাচ্ছেন, ‘‘কর্মসূচুর তালিকা দীর্ঘ।’’
অধীর বলছেন, ‘‘আপনারা ভোট দিয়েছেন ‘হাত’ প্রতীকে। তারপর কেউ শাসক দলের ভয়ে, কেউ বা প্রলোভনে দলবদল করছেন। মনে রাখবেন, আপনারাই ওঁদের (জনপ্রতিনিধি) কংগ্রেসের চিহ্নে জিতিয়ে এনেছেন। যাঁরা দল ছাড়ছেন, তাঁদের আগে জনপ্রতিনিধির পদ থেকে সরে দাঁড়াতে আরৃপনারাই বলুন। পদত্যাগ না করে দল বদল করা মানে ভোটারদের ইচ্ছা, আকাঙ্খা, সম্মানকে পদদলিত করা।’’
অবরোধ তুলতে পুলিশের অনুরোধ। বহরমপুরে তোলা নিজস্ব চিত্র।
বামফ্রন্টের দখলে থাকা জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ ও জঙ্গিপুর পুরসভা, কংগ্রেসের বেলডাঙা পুরসভা তৃণমূলে রূপান্তরিত হওয়ার সময় অনেকে কাউন্সিল যুক্তি দেখিয়েছিলেন— এলাকার উন্নয়ন করার জন্য মানুষ আমাদের ভোট দিয়ে জিতিয়ছেন। শাসক দলে নাম না লেখালে উন্নয়ন করা সম্ভব হচ্ছে না।
সেই প্রসঙ্গ টেনে অধীর বলেন, ‘‘উন্নয়নমূলক কাজ করার জন্য মানুষ নির্দিষ্ট দলীয় প্রতীকের প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন। সেই ইচ্ছাপূরণ না করতে পারলে মানুষের সামনে গিয়ে বলুন কি কারণে পারছেন না। তার পর নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির পদ ত্যাগ করে দলবদল করুন। নইলে মানুষ ভাববে মানুষের উন্নয়নের জন্য নয়, নিজেদের উন্নয়নের জন্য আপনারা দলবদল করছেন।’’
তৃণমূলের মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি মান্নান হোসেন অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘অধীরের নাটকে কাজ দেবে না। জেনে রাখুন, জেলাপরিষদ ও বহরমপুর পুরসভার অনেকেই তৃণমূলের যোগ দেওয়ার জন্য লাইন দিয়ে আছে। সময়ে তার প্রমাণ পাবেন।’’ কী প্রমাণ?
‘বিকিকিনি’ না মানুষের ভোটের ‘মর্যাদা’ দেওয়া— কে জিতবে?
ভাঙন রোধে বুক দিয়ে বাঁধ দেওয়ার চেষ্টা করা অধীর সে দিকেই তাকিয়ে আছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy