Advertisement
E-Paper

স্কুলে কোয়রান্টিন কেন্দ্র করতে বাধা, বিক্ষোভ তুলতে গিয়ে পুলিশ-জনতা ‘লড়াই’

সন্ধ্যায় শেষবারের মতো জেলা পুলিশের কর্তারা স্কুল ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো পাড়া-প্রতিবেশীদের বোঝাতে গিয়ে ফের ধাক্কা খায়।

গোরাবাজারে জনতা-পুলিশ ‘যুদ্ধ’। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

গোরাবাজারে জনতা-পুলিশ ‘যুদ্ধ’। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

বিদ্যুৎ মৈত্র

শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০২০ ০৬:১২
Share
Save

ঘন জনবসতির মধ্যে স্কুল। আর সেখানেই কোয়রান্টিন কেন্দ্র খুলতে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রবল বাধার মুখে পড়ল স্বাস্থ্য দফতর। রবিবার সকাল থেকে বহরমপুরের গোরাবাজার এলাকায় শহিদ নলিনী বাগচী প্রাথমিক স্কুলে কোয়রান্টিন কেন্দ্র খোলা নিয়ে আপত্তি তুলে স্কুলটিকেই আপাদমস্তক বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে ফেলেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ফলে নিভৃতবাসের ব্যবস্থা করতে প্রশাসনের কর্তাদের সেই স্কুলে পা দেওয়াই দায় হয়ে উঠেছিল। সকাল থেকে দফায় দফায় স্থানীয় বাসিন্দাদের এ ব্যাপারে বুঝিয়েও ফল মেলেনি। ওঠেনি বাঁশের বেড়া, খোলা যায়নি সেই স্কুলের গেট।

সন্ধ্যায় শেষবারের মতো জেলা পুলিশের কর্তারা স্কুল ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো পাড়া-প্রতিবেশীদের বোঝাতে গিয়ে ফের ধাক্কা খায়। আর তার পরেই পুলিশে্র সঙ্গে বচসা গড়ায় ধস্তাধস্তিতে। পুলিশ জোর করে সেই বেড়া ভাঙার চেষ্টা করলে মারমুখী হয়ে ওঠে গোরাবাজার এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ। পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠি চালায় পুলিশ বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দারা এলাকার মহিলাদের সামনে রেখে ব্যারিকেড গড়ে তুললেও কয়েকশো মহিলা পুলিশ নামিয়ে পাড়ার আটপৌরে মহিলাদের সেই বাধাও ভেঙে দেওয়া হয়। এই সময়ে পুলিশের লাঠির ঘায়ে বেশ কয়েক জন স্থানীয় বাসিন্দা আহত হয়েছেন বলে দাবি। তবে জেলা পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমার বলেন, ‘‘আমরা মোটেও লাঠিচার্জ করিনি, বড়জোর লাঠি উঁচিয়ে ভয় দেখিয়ে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ায় কয়েকজনকে আটকও করা হয়েছে।’’ রাতে ওই এলাকায় পুলিশি টহল শুরু হয়েছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক সিরাজ দানেশ্বর বলেন, ‘‘যাঁরা তিন-চার দিনের পথ ভেঙে জেলায় ফিরছেন, তাঁদের পরীক্ষা না করে কী করে সরাসরি গ্রামে পাঠাব। তা ছাড়া তাঁদের একটু বিশ্রামও দরকার। সেই জন্যই ওই কোয়রান্টিন সেন্টার করা হয়েছে। কোয়রান্টিন কেন্দ্র করতে কেউ বাধা দিলে প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ করতে বাধ্য হবে।’’

জেলার বিভিন্ন স্কুলে কোয়ারান্টিন কেন্দ্র খোলা নিয়ে প্রথম থেকেই বেঁকে বসেছে মানুষ। বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষও এ ব্যাপারে্ আপত্তি তোলে। তাঁদের যুক্তি ছিল— স্কুল এক দিন খুলবেই। খোলার পরে ঘটনাচক্রে পড়ুয়ারা কোভিড আক্রান্ত হলে অভিভাবকদের রোষ সামাল দেবে কে! তবে দিন কয়েক আগে, মুখ্যমন্ত্রী সরকারি স্কুলে কোয়রান্টিন কেন্দ্র খোলার সিলমোহর দেওয়ার পরে জেলা প্রশাসন স্থানীয় বাসিন্দাদের সেই ওজর-আপত্তি গায়ে না মেখে শুরু করে তোড়জোড়। জেলা স্কুল পরিদর্শকও ছাড়পত্র দিয়ে জানিয়েছিলেন, কোয়রান্টিন কেন্দ্র হিসেবে সরকারি স্কুলগুলি ব্যবহার করা যাবে। ফলে গত তিন দিন ধরে জেলার বিভিন্ন স্কুলে তড়িঘড়ি কোয়রান্টিন কেন্দ্র খুলতে তৎপর হয়েছিল প্রশাসন, সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছিলেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও।

তবে গোরাবাজারের স্কুলটি ছাড়াও স্কুলে কোয়রান্টিন কেন্দ্র খুলতে বাধার পাঁচিল তুলতে ভাকুড়ি, হরিদাসমাটি এলাকাতেও বাঁশ, কাঠের পাটাতনে পেরেক মেরে পাকাপোক্ত ভাবে ব্যরিকেড গড়ে তুলেছেন এলাকার বাসিন্দারা। কোথাও বা রাত জেগে শুরু হয়েছে প্রহরা, প্রশাসনের কর্তারা যাতে পুলিশ নিয়ে এলাকায় এসে তাদের ‘আপত্তি’ ভেঙে দিতে না পারেন।

Quarantine Center Police Coronavirus in West Bengal

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}