—প্রতীকী চিত্র।
নতুন বছর পড়তে না পড়তেই মাত্র ১৭ দিনে ৫৫টি তাজা বোমা উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে কান্দি মহকুমা জুড়ে। এর ফলে সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এলাকার বাসিন্দাদের কথায়, ভোটের সময় বোমা মজুত করার প্রবণতা দেখা যায়, কিন্তু এখন কোনও ভোট নেই কিন্তু তারপরেও কেন এত পরিমাণ বোমা মজুত করা হচ্ছে!
মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার সূর্যপ্রতাপ যাদব বলেন, “বোমা মজুত করার কারণ কী, সেটা নিয়ে আমরা তদন্ত করছি। তবে মূলত ভোটের সময়ই বোমা মজুত করা হয়। কিন্তু পুলিশের তৎপরতার কারণে ওই বোমা ব্যবহার করতে দুষ্কৃতীরা ব্যর্থ হয়। ফলে সেগুলি মজুত হয়েই থেকে যায়।”
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কান্দি মহকুমার পাঁচটি থানা কান্দি, বড়ঞা, খড়গ্রাম, ভরতপুর ও সালার এলাকায় গত ৭ জানুয়ারি থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত মাত্র দশ দিনে ৫৫টি তাজা বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার মধ্যে সব থেকে বেশি পরিমাণ বোমা উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে সালার থানার মালিহাটি অঞ্চলের চুনশহর গ্রামের বাঁশবাগান থেকে। ২১টি বোমা পাওয়া যায় সেখানে। ওই অঞ্চলের কান্দরা গ্রামের ডাঙাপাড়ার মাঠের ধারে একটি পুকুরের ধার থেকে ১৫টি বোমা মেলে। সব মিলিয়ে ৩৬টি বোমা এক দিনেই উদ্ধার করেছে পুলিশ। এরপর দফায় দফায় ভরতপুরের হরিশ্চন্দ্রপুর, তালগ্রাম, খড়গ্রাম থানার উপলাই ক্যানেল থেকে, বড়ঞা থানা এলাকার সুন্দরপুর ও বেলডাঙা গ্রামের মাঠ থেকে বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এ ছাড়াও বড়ঞা থানার পাঁচথুপি গ্রামের বাথানপাড়া থেকে আগ্নেয়াস্ত্র-সহ এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করার সঙ্গে অভিযুক্ত মীর রজব আলিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। খড়গ্রাম থানার পুলিশ এলাকার রতনপুর থেকে একটি ওয়ান সটার ও এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করার সঙ্গে আলম শেখকে পুলিশ গ্রেফতার করে। আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করার পাশাপাশি অভিযুক্তদের পুলিশ গ্রেফতার করতে পারলেও বোমা মজুত করে রাখার ঘটনায় অভিযুক্তদের নাগালের মধ্যেই আনতে পারেনি পুলিশ। যদিও পুলিশ সুপার সূর্যপ্রতাপ বলেন, “বোমা যারা মজুত করে তারা কেউ বাড়িতে মজুত করে না। কোনও পরিত্যক্ত এলাকায় বোমাগুলি মজুত করে রাখে। পুলিশ গোপনে জানতে পেরে বোমাগুলি উদ্ধার করে। তদন্ত করে দেখা হয়, কে বা কারা ওই বোমা মজুত করে রাখছে।”
পুলিশের একটি বৃহত্তর অংশের দাবি, বর্তমানে বোমা মজুত করার পিছনে রাজনৈতিক কারণ যেমন আছে, ঠিক একই সঙ্গে সাধারণ বিবাদের কারণেও বোমা মজুত করা হচ্ছে।
জমি সংক্রান্ত বিবাদ, পারিবারিক বিবাদ-সহ একাধিক কারণে বোমা মজুত করা হচ্ছে। বোমা মজুত করার পিছনে শাসক দল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে সরাসরি দায়ি করে কান্দি মহকুমা কংগ্রেসের সভাপতি শফিউল আলম খান বলেন, “কান্দি মহকুমা এলাকায় শুধু নয়, রাজ্য জুড়েই বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র মজুত করার প্রবণতা রয়েছে। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের বিরোধী শক্তিশালী কোনও দল নেই। সেই কারণে শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও বেশি, যার ফল পড়শি মালদহ জেলায় প্রকাশ্যে দু’টি খুনের ঘটনা ঘটে গেল। এতে সাধারণ মানুষ আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করছেন। পুলিশকে নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করে যে বা যারা বোমা মজুত করছে, তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করে শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করা জরুরি।” তৃণমূলের বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তথা কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকার বলেন, “বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র মজুত করে যারা জেলা ও কান্দি মহকুমার শান্তি শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করার চেষ্টা করছে, পুলিশ তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেবে, পুলিশের উপরে আমাদের সেই বিশ্বাস ও ভরসা আছে।” পুলিশ সুপার সূর্যপ্রতাপ বলেন, “আমরা তৎপর রয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy