
প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। — নিজস্ব চিত্র।
ব্রাত্য-বৈঠকে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নিয়েও আলোচনা করেছেন চাকরিহারারা। রিভিউয়ের আবেদন করার আগে কী ধরনের আলোচনা করা হবে, কথা হয়েছে সে সব নিয়েও। চাকরিহারাদের তরফে মেহেবুব মণ্ডল বলেন, ‘‘তবে এখনই আমাদের স্বস্তি নেই। স্বস্তি সেদিনই পাব, যে দিন আমরা আইনি ভাবে জিতে ফিরব।’’
বৈঠকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, ২২ লক্ষ পরীক্ষার্থীর ওএমআরের প্রতিলিপি প্রকাশ করা হবে। আগামী ২১ তারিখের মধ্যে যোগ্য-অযোগ্যর তালিকাও প্রকাশ্যে আনা হবে। তবে রাজ্যের সঙ্গে বৈঠকের পর চাকরিহারারা জানালেন, শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাস সত্ত্বেও এখনই স্বস্তি পাচ্ছেন না তাঁরা। যত ক্ষণ পর্যন্ত তাঁদের দাবি আদায় না-হচ্ছে, তত ক্ষণ পর্যন্ত চলবে আন্দোলন।
বিকাশ ভবন থেকে বেরিয়ে চাকরিহারারা জানালেন, বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে মূলত দু’টি বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তাঁরা। এক, যোগ্য-অযোগ্যদের নামের তালিকা এবং ওএমআরের মিরর ইমেজ প্রকাশ্যে আনা। এবং দুই, আইনি প্রক্রিয়াগুলি নিয়ে আলোচনা। চাকরিহারাদের প্রতিনিধিরা বলেন, ‘‘শিক্ষামন্ত্রীর উপস্থিতিতে এসএসসি চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, তাঁরা যোগ্য ও অযোগ্যদের তালিকা ইতিমধ্যেই তৈরি করতে শুরু করে দিয়েছেন। আগামী রবিবারের মধ্যে সেই কাজ শেষ হয়ে যেতে পারে। আইনি পরামর্শ নিয়ে আগামী ২১ এপ্রিলের মধ্যে তা প্রকাশ্যে আনার চেষ্টা করা হবে।’’ তবে জানানো হয়েছে, ওএমআরের প্রকৃত মিরর ইমেজ নেই। যদি তা থাকত, তা হলে সিবিআই তা খুঁজে পেত। সিহিআইয়ের কাছে যে প্রতিলিপি আছে, সেটিই প্রকাশ্যে আনা হবে।
তিন ঘণ্টা পর শেষ হল শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে চাকরিহারাদের বৈঠক। আপাতত নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছেন চাকরিহারাদের প্রতিনিধিরা। আলোচনার পর বিকাশ ভবন থেকে বেরিয়ে তাঁরা নিজেদের বক্তব্য জানাবেন।
অভিজিৎকে কটাক্ষ করে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘শুনলাম চাকরিহারাদের অনশনমঞ্চে গিয়ে অভিজিতকে গো ব্যাক শুনতে হল। এটা তো হওয়ারই ছিল! উনি তো গর্বের সঙ্গে বলেছিলেন, আমি এঁদের চাকরি খেয়েছি। কত বড় পৈশাচিক উল্লাস! তার পর তিনি ওখানে গিয়েছেন, চাকরিহারারা ওঁকে তাড়িয়ে দেবে না তো কী করবে? এই দ্বিচারিতার রাজনীতি যাঁরা করেন, তাঁদের মুখোশ খুলে দিন।’’
এসএসসি দফতরের সামনে চাকরিহারাদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হল অভিজিৎকে। উঠল ‘গো ব্যাক’ স্লোগানও। তার মাঝেই নিজের বক্তব্য জানালেন তিনি।
চাকরিহারাদের অবস্থানে অভিজিৎ। — নিজস্ব চিত্র।
এসএসসি দফতরের সামনে পৌঁছলেন প্রাক্তন বিচারপতি তথা বর্তমান সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেখান থেকে চাকরিহারাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘গত পরশু আমরা চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করে বলেছিলাম দ্রুত যোগ্য-অযোগ্যদের তালিকা তৈরি করুন। বলেছিলাম সেই তালিকা নিয়ে আমরা সুপ্রিম কোর্টে যাব, যাতে যোগ্যদের গায়ে কোনও আঁচ না লাগে। আশা করেছিলাম দু’দিনের মধ্যে হয়তো সেই তালিকা প্রকাশ্যে আসবে। কিন্তু তা হয়নি। আমরা রাজ্য সরকারকে আর দু’ঘণ্টা সময় দিচ্ছি। তার মধ্যে যদি তারা এসএসসিকে নির্দেশিকা পাঠান, তা হলেই বোঝা যাবে চাকরি ফেরানোর সদিচ্ছা তাঁদের রয়েছে।’’ অন্যথায় তাঁরা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটবেন বলেও জানিয়েছেন অভিজিৎ।
বিকাশ ভবনের ছ’তলায় চাকরিহারাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন শিক্ষামন্ত্রী। ১২ জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর সঙ্গে আলোচনা চলছে।
বৈঠকে উপস্থিত শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। শুক্রবার বিকাশ ভবনে। — নিজস্ব চিত্র
চাকরিহারাদের আন্দোলনকে সংহতি জানাতে এসএসসি দফতরের সামনে পৌঁছোলেন চিকিৎসকেরাও। গিয়েছেন চিকিৎসক পুণ্যব্রত গুণ। আরজি কর আন্দোলনেও ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্স ফোরামের তরফে বার বার সরব হয়েছিলেন তিনি। অনশনকারীদের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছেন পুণ্যব্রত।
বৈঠকে পৌঁছোলেন ব্রাত্য। এ ছাড়়াও, রয়েছেন এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার। রয়েছেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি এবং রাজ্যের আইন শাখার আধিকারিকেরাও। দুপুর ২টোর সময় বৈঠক শুরু হওয়ার কথা ছিল। অথচ নির্ধারিত সময়ের দু’ঘণ্টা দেরিতে শুরু হচ্ছে বৈঠক।
চাকরিহারাদের দাবি মেনে শেষমেশ ১২ জনকেই ভিতরে প্রবেশের অনুমতি দিল বিকাশ ভবন।
অবস্থান মঞ্চ থেকে ১২ জনের নাম পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু ভিতরে ঢুকতে পারবেন আট জন। তাতে বেঁকে বসেছেন চাকরিহারারা। তাঁরা স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, ১২ জনকে ঢুকতে না দেওয়া হলে তাঁরা বৈঠকে যাবেন না।
বিকাশ ভবনে ঢুকছেন চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশ। শুক্রবার। — নিজস্ব চিত্র
বিকাশ ভবনের সামনেও অবস্থানে বসলেন চাকরিহারাদের একাংশ।
বিকাশ ভবনের সামনের দৃশ্য। — নিজস্ব চিত্র
বিকাশ ভবনে পৌঁছে গিয়েছেন চাকরিহারারা। কিন্তু ১২ জনের প্রতিনিধি দলকে পাঠানো হলেও আট জন ভিতরে প্রবেশের অনুমতি পেয়েছেন।
বিকাশ ভবনের বৈঠকে চাকরিহারাদের আট জন প্রতিনিধি যেতে পারেন বলে রাজ্যের তরফে জানানো হয়। কিন্তু চাকরিহারাদের তরফে প্রাথমিক ভাবে ১৩ জনের নাম পাঠানো হয়েছে। ১৩ জনের প্রতিনিধি দলে রয়েছেন হুমায়ুন ফিরোজ মণ্ডল, সঙ্গীতা সাহা, আবদুল্লা মণ্ডল, চিন্ময় মণ্ডল, সুজয় সরদার, প্রলয়কুমার জামাদার, আজহারউদ্দিন, সেলিনা আখতার, স্বপন বিশ্বাস, মেহবুব মণ্ডল, দিথিশ মণ্ডল, মৃন্ময় মণ্ডল এবং তাপস সাঁতরা। এঁদের মধ্যে নবম-দশমের ছ’জন, একাদশ-দ্বাদশের চার জন এবং গ্রুপ-সি ও গ্রুপ-ডি-র এক জন করে চাকরিহারা প্রতিনিধি রয়েছেন। অন্য দিকে, বিকাশ ভবনেও চলছে বৈঠকের তোড়জোড়।
বিকাশ ভবনে পৌঁছোলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। চাকরিহারাদের সঙ্গে বৈঠকের আগে তাঁরা নিজেরা বৈঠক করবেন। বৈঠকে থাকবেন এসএসসির চেয়ারম্যান, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি, রাজ্যের আইন শাখার আধিকারিকেরা। চাকরিহারাদের তরফে সাত জন প্রতিনিধির বৈঠকে থাকার কথা।
এসএসসি দফতরের সামনে এখনও ঠায় অনশনে বসে রয়েছেন তিন শিক্ষক।
চলছে অনশন। এসএসসি দফতরের সামনে। শুক্রবার। — নিজস্ব চিত্র
ওএমআরের প্রতিলিপি, নিয়োগের যাবতীয় নথিও নিয়ে এসেছেন চাকরিহারারা।
চাকরিহারাদের প্রতিবাদ। — নিজস্ব চিত্র
আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে মাইকে ঘোষণা করা হচ্ছে, ‘‘বাইরের কাউকে কোনও রকম বিশৃঙ্খলা বাধাতে দেবেন না। কেউ বিশৃঙ্খলা বাধাতে গেলেই তাঁদেরকে চিহ্নিত করুন।’’ যাতে কোনও ভাবেই কসবার ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, সে দিকেও খেয়াল রাখছেন চাকরিহারারা।
এসএসসি দফতরের সামনে বসে রয়েছেন শিক্ষকেরা। — নিজস্ব চিত্র
এসএসসি ভবনের সামনে বসেই আন্দোলনের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করবেন চাকরিহারা শিক্ষকেরা। আলোচনার পর জানানো হবে পরবর্তী সিদ্ধান্ত। তবে পুলিশকে কারও গায়ে হাত না দেওয়ার বার্তাও দিয়েছেন তাঁরা। শান্তিপূর্ণ ভাবেই তাঁরা নিজেদের দাবিদাওয়া জানাতে এসেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy