মৃতদেহ গ্রামে ফেরার পর। নিজস্ব চিত্র
দীর্ঘ প্রতীক্ষা শেষে মৃত্যুর দেড় মাস পর বিদেশ থেকে মৃতদেহ এসে পৌঁছল পরিবারের হাতে।সৌদি আরবের রিয়াধ শহরে কাজে গিয়ে গত দেড় মাস আগে মারা যান মুরুটিয়ার দীঘলকান্দির বাসিন্দা সিদ্দিক খান (৪০)। করোনা পরিস্থিতিতে তাঁর মৃতদেহ ফেরা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিল মৃতের পরিবার। সৌদি আরব থেকে কী ভাবে দেহ নিয়ে আসা সম্ভব, তা বুঝে উঠতে পারছিল না মৃতের পরিবার। শেষ পর্যন্ত পরিবারটির পাশে দাঁড়ান বীরভূমের যুবক সাদেকুল ইসলাম। তাঁরই উদ্যোগে এ দিন দেহ ফেরে বাড়িতে। এক সপ্তাহ আগেই প্রশাসন থেকে দেহ ফেরানোর ব্যাপারে পরিবারকে জানানো হয়। সেই মতো শুক্রবার রাতে সৌদি আরব থেকে বিমানে কলকাতায় ও শনিবার ভোরে স্থানীয় পুলিশের উপস্থিতিতে গ্রামের বাড়িতে সিদ্দিকের মৃতদেহ পৌঁছয়।
মৃতের ভাই মুস্তাকিন খান জানাচ্ছেন, গত প্রায় চার বছর ধরে সৌদি আরবে একটি কোম্পানির অধীনে দিনমজুরের কাজ করতে সিদ্দিক। দুই বছর আগে এক বার বাড়ি ফিরেছিলেন। দেড় মাস ছুটি কাটিয়ে আবার ফিরে গিয়েছিলেন। বাড়িতে তাঁর স্ত্রী, দশম শ্রেণির পড়ুয়া মেয়ে এবং এগারো বছরের এক ছেলে রয়েছে। ২৭ অগস্ট, বুধবার রাতে সৌদি আবর থেকে সিদ্দিকের এক সহকর্মী এবং এলাকার বাসিন্দা ফোন করে পরিবারকে তাঁর মৃত্যুর খবর জানান। তার পর থেকেই বাড়িতে শোকের পরিবেশ।
মৃতের ভাই বলেন, “করোনা পরিস্থিতিতে অন্য দেশ থেকে মৃতদেহ আনা নিয়ে সকলেই দুশ্চিন্তায় ছিলাম। সেই সময়ে আমাদের সঙ্গে সাদেকুল ইসলাম যোগাযোগ করেন। দাদার দেহ ফেরানোর ব্যাপারে সাহায্য করেন।” রাত থেকেই আত্মীয়-পরিজন ও আশেপাশের এলাকা মানুষ বাড়িতে মৃতদেহের অপেক্ষা করছিলেন। এ দিন সকালেই দেহ কবরস্থ করা হয়।
সাদেকুল ইসলাম জানাচ্ছেন, আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে তিনি এই পরিবারের দুর্দশার কথা জানতে পারেন। স্থানীয় বিডিওকে ফোন করে বাড়ির সমস্ত তথ্য বের করে মৃতের বাড়িতে ফোন করেন। মৃতের দুই সন্তান ও স্ত্রীর কাছে মৃতদেহ ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিজ্ঞা নিয়ে তিনি জেলা থেকে রাজ্য স্তরের পাশাপশি বিদেশ মন্ত্রকের কাছে আবেদন করতে থাকেন। ইমেল ও ফোন মারফত যোগাযোগ করেন সৌদি আরবের বিদেশ মন্ত্রকের কাছেও। সিদ্দিক যে কোম্পানিতে কাজ করতেন সেখানকার কর্মকর্তাদের কাছে অনুরোধ করেন ওই পরিবারটির জন্য ক্ষতিপূরণ বাবদ অর্থসাহায্য করতে। এর পরেই সৌদি আরবে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে আশ্বাস মেলে যে, ভারত সরকারের মাধ্যমে স্থানীয় জেলাশাসক মারফত সেই অর্থসাহায্য পাঠানো হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy