ফেসবুকে একের পর এক পোস্ট সুশান্ত চৌধুরীর। —নিজস্ব চিত্র।
একের পর এক ফেসবুক পোস্টে শুধুই প্রতিহিংসার বার্তা। সে পোস্ট ভিডিয়ো হোক বা লেখা, সর্বত্রই ক্ষোভের আঁচ। কোনও কোনও পোস্টে স্পষ্ট ঘৃণার কথা। বহরমপুরে কলেজ পড়ুয়া খুনে ধৃত সুশান্ত চৌধুরীর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট দেখে তাজ্জব হয়ে গিয়েছেন তদন্তকারীরা। গত প্রায় এক বছর ধরেই সুশান্তের ওয়াল ভরে উঠেছে হুমকি, ঘৃণা, ক্ষোভ, প্রতিহিংসার আবহে। অথচ তার আগে এমনটা ছিল না। সেখানে তখন পোস্ট করা হত শুধুই প্রেমের কথা, ছবি, ভিডিয়ো। গত বছরখানেক ধরে সুশান্ত ফেসবুকে যে সমস্ত পোস্ট করেছেন, তা পর্যবেক্ষণ করে তদন্তকারীদের ধারণা, এই সময়টা জুড়ে তার মনে অস্থিরতা চলছিল। তারই প্রকাশ দেখা গিয়েছে ফেসবুকে। সুতপা চৌধুরী খুনের পর সেই সব পোস্ট খতিয়ে দেখে তদন্তকারীদের ধারণা, বেশ কিছু দিন ধরেই ওই ছাত্রীকে খুনের পরিকল্পনা করছিল সুশান্ত।
সুশান্তের ফেসবুকের ‘বায়ো’তে নিজের সম্পর্কে সে লিখেছে, ‘আই অ্যাম অ্যান ইন্ডিয়ান’ (আমি এক জন ভারতীয়)। এর পরেই লেখা, ‘এই বেবফা তোর উপর এক দিন অনেক ভারী পড়বে, এমন কী তোর জান পর্যন্ত যেতে পারে ম্যাডামজি।’ তদন্তকারীদের ধারণা, ‘ম্যাডামজি’ সম্বোধনে ফেসবুকে এই হুমকি সুশান্ত হয়তো সুতপার উদ্দেশেই লিখেছিল। তবে এই ‘বায়ো’ সুশান্ত কবে লিখেছিল, তা বোঝার কোনও উপায় নেই।
এ ছাড়াও প্রেম সংক্রান্ত বহু ছবি, ভিডিয়ো নিজের ফেসবুকের প্রোফাইলে একাধিক বার পোস্ট করেছে সুশান্ত। ‘পাড়ার মেয়ে’র সঙ্গে বিয়ে নিয়ে সে নিজের অভিব্যক্তিও জানিয়েছে ফেসবুকে। আবার কখনও কখনও প্রতিহিংসার ভিডিয়োয় পোস্ট করেছে সে। সেই ভিডিয়োয় দেখানো হয়েছে, প্রেমিক বিশ্বাসঘাতকতার জন্য প্রেমিকাকে খুন করছে গুলি করে। ঘটনাচক্রে সুশান্তও সোমবার সন্ধ্যায় সুতপাকে কুপিয়ে খুন করে।
সুশান্তের পরিবার থেকে প্রতিবেশী, সকলেরই দাবি, ওই যুবকের সঙ্গে সুতপার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সোমবার সন্ধ্যায় সুতপাকে ছুরির আঘাতে খুন করে সুশান্ত। সেখান থেকেই তদন্তকারীদের একাংশের ধারণা, সম্পর্কের টানাপড়েন তৈরি হওয়াতেই হয়তো ফেসবুক ‘বায়ো’তে সুশান্ত ওই হুমকি দিয়েছিল। সুতপা বুঝতে পেরেছিলেন কি না, তা যদিও জানার উপায় নেই। এক তদন্তকারীর কথায়, ‘‘ধৃতের মানসিক অবস্থার একটা আভাস তার ফেসবুক পোস্ট থেকেই মিলছে। সেখান থেকে তার পরিবার এবং কাছের লোকজনের সতর্ক হওয়া জরুরি ছিল। তা হলে হয়তো এমনটা না-ও হতে পারত!’’
মালদহের ইংরেজবাজারে পিসির বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করত সুশান্ত। তার পিসির বাড়ির কাছেই সুতপার বাড়িও। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকের দাবি, সপ্তম শ্রেণিতে পড়াশোনার সময় সুতপার বাড়িতে প্রাইভেট পড়তেও যেত সুশান্ত। সেই সুশান্ত কী ভাবে সুতপাকে খুন করল, তা এখনও অনেকের কাছে অবিশ্বাস্য ঠেকছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy