Advertisement
E-Paper

আর বাড়ি পাব কোথায়, আমরা কি কোটিপতি?

আমাদের পুরনো, ভগ্নপ্রায় বাড়ি-সহ ওই জমি প্রোমোটারকে দিয়েছিলাম। আবাসনের বয়স সবে এক বছর সাত মাস। এরই মধ্যে বিপজ্জনক ভাবে হেলে পড়ল!

তড়িঘড়ি: হেলে পড়া বাড়ি থেকে জিনিসপত্র বার করে আনছেন আতঙ্কিত আবাসিকেরা। বুধবার, ক্রিস্টোফার রোডে।

তড়িঘড়ি: হেলে পড়া বাড়ি থেকে জিনিসপত্র বার করে আনছেন আতঙ্কিত আবাসিকেরা। বুধবার, ক্রিস্টোফার রোডে। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

রীনা সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:৩৭
Share
Save

কী যে করব, কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না! যে জমিতে ছ’তলা ফ্ল্যাটবাড়িটি তৈরি হয়েছে, সেটি আমাদেরই জায়গা ছিল। আমাদের পুরনো, ভগ্নপ্রায় বাড়ি-সহ ওই জমি প্রোমোটারকে দিয়েছিলাম। আবাসনের বয়স সবে এক বছর সাত মাস। এরই মধ্যে বিপজ্জনক ভাবে হেলে পড়ল! এতে আমাদের তো কোনও দোষ নেই! বুধবার বিকেলে পুলিশ ঘোষণা করল, সবাইকে ফ্ল্যাট ছেড়ে যেতে হবে। পুরসভা নাকি পুরোটাই ভেঙে ফেলবে!

হ্যান্ড মাইকে পুলিশের ওই ঘোষণা শুনেই আমরা ফ্ল্যাট ছেড়ে নীচে নেমে আসি। তার পরেই জানতে পারি, আমাদের গোটা আবাসনই ভেঙে দিতে চায় পুরসভা। বিকেলে জল, বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। আমরা তা হলে কোথায় থাকব? স্থানীয় পুরপ্রতিনিধির কাছে গিয়েছিলাম। তাঁকে বললাম, পুরসভা বলছে, পুরো আবাসন ভেঙে ফেলা হবে। তা হলে আমাদের বাসস্থান কোথায় হবে?

সহমর্মিতা দেখানো তো দূর, উল্টে পুরপ্রতিনিধি প্রশ্ন করলেন, ‘‘আপনাদের অন্য কোনও থাকার জায়গা নেই?’’ ভাবুন, এটা কোনও কথা হল? আমরা কি সব কোটিপতি? আমাদের দিন আনি, দিন খাই অবস্থা। আমাদের বাড়িটা অনেক পুরনো হয়ে গিয়েছিল। বাড়ি সংস্কারের মতো টাকা ছিল না। তাই বাধ্য হয়ে প্রোমোটারকে দিয়েছিলাম। দু’দিন আগে নিজের চোখে বাড়ি হেলে পড়েছে দেখে সোজা প্রোমোটারের কাছে গিয়েছিলাম। উনি আমাদের আশ্বস্ত করে জানান, কোনও সমস্যা হবে না। বাড়ি যাতে ঠিক থাকে, তার ব্যবস্থা করা হবে।

কিন্তু, আজ তো পুরসভার তরফে ঘোষণা করা হল, তারা গোটা আবাসনই ভেঙে ফেলবে। তা হলে আমাদের ভবিষ্যৎ কী হবে? আমরা ঘোর অন্ধকারে আছি। বিদ্যুৎ, জল না থাকায় পাশের মাঠে আশ্রয় নিয়েছি। জানি না, রাতটা কী ভাবে কাটাব? পাশের আবাসনটি যখন তৈরি করা শুরু হয়েছিল, তখন নির্মাণকারীদের অনেক বার বলেছিলাম, বিধি অনুযায়ী জায়গা ছেড়ে নির্মাণকাজ করতে। কিন্তু কে কার কথা শোনে!

আমাদের বক্তব্য, বেআইনি নির্মাণ হলে তা ঠেকানোর দায়িত্ব তো পুরসভার। তা হলে নিয়ম না মেনে আমাদের আবাসনের গা ঘেঁষে ছ’তলা আবাসনটি এক বছর আগে তৈরি হলেও পুরসভার বিল্ডিং দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের নজরে এল না কেন? গার্ডেনরিচে নির্মীয়মাণ বেআইনি বহুতল ভাঙার পরে মেয়র শহরে বেআইনি নির্মাণ ঠেকাতে কঠোর অবস্থানের কথা ঘোষণা করেছিলেন। আমাদের বক্তব্য, নির্মীয়মাণ বেআইনি আবাসনের বিরুদ্ধে পুরসভা আগেভাগে ব্যবস্থা নিলে আমাদের এ ভাবে পথে বসতে হত

(রীনা সেনগুপ্ত- ট্যাংরার হেলে পড়া বহুতলের বাসিন্দা)                                                                            

(রীনা সেনগুপ্ত- ট্যাংরার হেলে পড়া বহুতলের বাসিন্দা)                                                                            —নিজস্ব চিত্র।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

KMC Building Collapse

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}