Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Murder

Berhampore Murder: বিয়ে করেছিলাম আমরা! সুশান্তের দাবি পুলিশের কাছে, সুতপাকে খুন করতে এক মাস ‘রেইকি’

পুলিশ জানিয়েছে, পালানোর সময় তিন বার গাড়ি বদল করে সুশান্ত। বদলায় নিজের জামাও। সুতপার মৃত্যু নিশ্চিত করতে বার বার ছুরি দিয়ে হামলা চালায় সে।

সুতপাকে খুনের আগে মাস খানেক ধরে রেইকি করে সুশান্ত চৌধুরী।

সুতপাকে খুনের আগে মাস খানেক ধরে রেইকি করে সুশান্ত চৌধুরী। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০২২ ১৬:২১
Share: Save:

বহরমপুরে কলেজ পড়ুয়া খুনে গ্রেফতার হওয়া যুবককে জেরা করে চাঞ্চল্যকর তথ্য জানা গিয়েছে বলে দাবি করল পুলিশ। যে মেসে থাকতেন ওই ছাত্রী, সেই এলাকায় মাসখানেক ধরে রেইকি করেছিল ধৃত সুশান্ত চৌধুরী। শুধু তাই নয়, যাকে খুন করেছে সেই সুতপা চৌধুরীকে সে বিয়েও করেছিল বলেও পুলিশের কাছে দাবি করেছে ওই যুবক।
সোমবার সন্ধ্যায় বহরমপুরের গোরাবাজার এলাকায় খুন হন সুতপা। রাত ১০টা নাগাদ সুতপাকে খুনের অভিযোগে সুশান্তকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের দাবি, যে রাস্তা দিয়ে সুশান্ত ঢুকে সুতপাকে খুন করেছিল, তার উল্টো রাস্তা দিয়ে সে ফিরে যায়। পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃত জানিয়েছে, সে খুনের আগে মাসখানেক ধরে গোরাবাজারের ওই এলাকায় রেইকি চালায়। পুলিশের দাবি, খুনের দিন যে মোটর বাইকে করে সুশান্ত বেরিয়েছিল তা অন্যত্র রেখে আসে।

পুলিশ আরও জানিয়েছে, জেরায় সুশান্ত স্বীকার করেছে, সোমবার সন্ধ্যায় বহরমপুর আসার সময় তার ব্যাগে ছুরি আর খেলনা বন্দুকের সঙ্গে ছিল দু’টি জামা। পরিকল্পনামাফিক খুনের পর রক্তে ভিজে যাওয়া জামা বদল করে নেয় সে। এর পর একটি লাক্সারি ট্যাক্সি ভাড়া করে বহরমপুর থেকে মালদহের উদ্দেশে রওনা দেয়। পুলিশ জানিয়েছে, পালানোর সময় সকলকে বিভ্রান্ত করতে তিন বার গাড়ি বদল করেছিল সুশান্ত। পুলিশের দাবি, সুতপার মৃত্যু নিশ্চিত করতেই বার বার ছুরি দিয়ে হামলা চালিয়েছিল সে।

তদন্তকারীদের দাবি, ধৃতের মোবাইল পরীক্ষা করে বিভিন্ন খুনের দৃশ্যের ভিডিয়ো পাওয়া গিয়েছে। জেরায় সুশান্ত জানিয়েছে, গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে সুতপাকে মন্দিরে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছিল সে। তবে গত চার মাস ধরে সেই সম্পর্ক আর এগিয়ে নিয়ে যেতে সুতপা ইচ্ছুক ছিলেন না বলেও জেরায় জানিয়েছে সুশান্ত। সে আরও জানিয়েছে, অন্য কারও সঙ্গে সুতপার ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়েছিল। তার জেরে সুশান্তের আচরণেও বদল আসে বলে তার পরিবারের দাবি। সুশান্তের ভাই শুভদীপ চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘মাসখানেক আগেও দাদা বাড়িতে এসেছিল। ও বাড়ির কারও কথা শুনত না। এমনকি, মা কিছু বললেও ধারালো অস্ত্র নিয়ে তেড়ে যেত। ওকে গত মাস দুয়েক ধরে এমন দেখছি। তার আগে ভাল ছিল।’’

পুলিশের দাবি, সুতপার আচরণের জন্য মানসিক অবসাদে ভুগছিল সুশান্ত। এ জন্য সে ওষুধও খেত। সুতপার ‘বেইমানি’ সে মেনে নিতে পারেনি বলেই পুলিশের কাছে জানিয়েছে। ‘প্রতিশোধ’ নিতেই ঠান্ডা মাথায় সে সুতপাকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে বলেই পুলিশি জেরায় জানিয়েছে সুশান্ত।

সুশান্তের এক প্রতিবেশী প্রমীলা সাহু বলেন, ‘‘ওদের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরেই প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তবে বেশ কিছু দিন ধরে মনে হচ্ছিল, এই সম্পর্ক থেকে বার হতে চাইছিল সুতপা। আমরা শুনেছি, সুশান্তের কাছ থেকে অনেক টাকাপয়সাও হাতিয়ে নেওয়া হয়। এক দিন সালিশি সভা বসিয়ে ছেলেটির কম্পিউটার থেকে অনেক ছবি মুছেও দেওয়া হয় আমাদের সামনে। তার পর থেকে আমরা সকলে এই সম্পর্কটা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সুশান্তকে বুঝিয়েছিলাম। কিন্তু ও পারল না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Death police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE