Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
কল্যাণী

কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে চিঠি দিয়ে ‘বিধিভঙ্গ’ পূর্ণেন্দুর

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি বলছে, কোনও মন্ত্রী মর্জিমাফিক কোনও বিধায়ককে প্রতিষ্ঠানের কর্মসমিতিতে (এগজিকিউটিভ কাউন্সিল, সংক্ষেপে ইসি) বসাতে পারেন না। তার জন্য আচার্যের অনুমোদন লাগে।

সুপ্রকাশ মণ্ডল
শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:২৩
Share: Save:

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি বলছে, কোনও মন্ত্রী মর্জিমাফিক কোনও বিধায়ককে প্রতিষ্ঠানের কর্মসমিতিতে (এগজিকিউটিভ কাউন্সিল, সংক্ষেপে ইসি) বসাতে পারেন না। তার জন্য আচার্যের অনুমোদন লাগে।

অথচ, গত সোমবার কল্যাণীর বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিসিকেভি) উপাচার্যকে চিঠি পাঠিয়ে কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু জানিয়েছেন, হরিণঘাটার তৃণমূল বিধায়ক নীলিমা নাগ মল্লিককে তিনি কর্মসমিতির রাজ্য সরকারি প্রতিনিধি হিসেবে মনোনীত করেছেন। বর্তমানে কল্যাণীর বিধায়ক রমেন্দ্রনাথ বিশ্বাস ওই কর্মসমিতিতে প্রতিনিধি হিসেবে আছেন। কিন্তু তাঁর অপসারণের কথা চিঠিতে কিছু বলা হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের একাংশ মনে করছেন, এটা তাঁদের প্রতিষ্ঠানের স্বাধিকারে সরাসরি হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়। কেননা অন্তত তিনটি নিয়ম এ ক্ষেত্রে লঙ্ঘন করা হয়েছে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী — ১) কোনও বিধায়ককে ইসি সদস্য হিসেবে মনোনীত করতে হলে তা অনুমোদনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাজ্যপালের কাছে পাঠাতে হয়। ২) রাজ্যপাল অনুমোদন দিলে কৃষি দফতরের সচিব স্তরের কোনও আধিকারিক সরকারি ভাবে তা বিশ্ববিদ্যালয়কে জানান। ৩) মন্ত্রী নিজে কখনওই কাউকে মনোনীত করতে পারেন না।

ফলে, এ হেন চিঠি পেয়ে তাঁদের কী করণীয় তা নিয়ে ধন্দে পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। উপাচার্য ধরণীধর পাত্র নিজে বিষয়টি এড়িয়েই গিয়েছেন। তিনি শুধু জানান, সরকারি প্রতিনিধি হিসেবে দুই বিধায়ক এক সঙ্গে ইসি-তে থাকতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে এক জনকে সরতেই হবে। জলঘোলা হচ্ছে বুঝে দায় এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন মন্ত্রী নিজেও। মঙ্গলবার তিনি দাবি করেন, ‘‘কই, আমি তো তেমন কিছু শুনিনি আপনারা কোথা থেকে জানলেন?’’ তাঁর পাঠানো চিঠির প্রতিলিপি আনন্দবাজারের কাছে আছে জানানোর পরে মন্ত্রী বলেন, ‘‘তা হলে ওই চিঠি যে আপনাদের দিয়েছে, তাঁকেই জিজ্ঞাসা করুন। আমি কিছু বলব না।’’

শাসকদলের একাংশ মনে করছে, এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী সংগঠনে কল্যাণী বনাম হরিণঘাটা গোষ্ঠীর কোন্দলের বিষয়টিই আসলে ফের প্রকট হয়ে পড়ল। বেশ কয়েক বছর ধরেই হরিণঘাটার নেতারা দাবি করছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টি তাঁদের বিধানসভা এলাকায় পড়ায় স্থানীয় বিধায়কেরই ইসি-তে থাকা উচিত। এত দিন তা আমল পায়নি। এ বার আবার রমেন্দ্রনাথের প্রস্থান আসন্ন বলে আঁচ করে ক্ষুব্ধ কল্যাণী গোষ্ঠী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীদের একাংশ দাবি করছেন, আগে রমেন্দ্রনাথের সঙ্গে ভাতারের প্রাক্তন বিধায়ক বনমালি হাজরাও ইসি সদস্য ছিলেন। তবে কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা, বনমালিকে কৃষক প্রতিনিধি হিসেবে ইসি-তে নেওয়া হয়েছিল। রমেন্দ্রনাথ জানান, মন্ত্রীর পাঠানো চিঠি বা তার প্রেক্ষিতে কোনও রকম চিঠি তিনি পাননি। নীলিমাও বলেন, ‘‘চিঠি আমি হাতে পাইনি। তবে, বিষয়টি শুনেছি। এটাই স্থানীয়দের দাবি ছিল।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE