পুজোর মুখে উপহার। প্রতীকী ছবি।
নিয়োগপত্রটা হাতে পাওয়ার পর বারবার ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখছিলেন নবদ্বীপের অর্পিতা দে। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর প্রাথমিক স্কুলে চাকরির এই নিয়োগপত্র! এক সময়ে তো আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে সেই অধর চাকরিই এত দিনে ধরা দিয়েছে। তা-ও আবার পুজোর মুখে।
সোমবার কৃষ্ণনগরে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ দফতরে দাঁড়িয়ে সঙ্গে নিয়ে আসা বছর ছয়েকের মেয়েকে আদর করতে করতে অর্পিতা বলেন, “বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় রক্তমাংসের ভগবান। আমাদের রক্ষা করলেন।” এ দিন নিয়োগপত্র নিতে আসা প্রায় সকলের মুখেই একই কথা শোনা গিয়েছে।
মায়াপুরের রীনা মণ্ডল বলেন, “ছ’বছর ধরে আদালতের দরজায় কড়া নাড়ছিলাম। কিছু হচ্ছিল না। মামলা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের হাতে যাওয়ার পর সুরাহা হল। এটাই আমার জীবনে সেরা পুজো উপহার।”
ঘটনাচক্রে এই নদিয়া জেলারই এক বিধায়ক, রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা পর্যদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের নাম জড়িয়েছে টেট দুর্নীতি মামলায়। তাঁকে একাধিক বার ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি।
২০১৪ সালে টেট পরীক্ষা দিয়েছিলেন অর্পিতা-রীনারা। ২০১৭ সালে ফল প্রকাশের পর আরও অনেকের মত তাঁরাও দেখেন, উত্তীর্ণ হতে পারেননি। কিন্তু সেটা তাঁরা মেনে নিতে পারেননি।
রীনা বলেন, “পাশ করার বিষয়ে আমি প্রায় নিশ্চিত ছিলাম। পরে আরটিআই করে দেখি, দেড় নম্বর কম। এর পর অন্যদের সঙ্গে প্রশ্ন ভুলের মামলা করি। সেই মামলার জেরেই নিয়োগপত্র হাতে পেলাম।”
এই দফায় রাজ্যে ১৮৭ জনকে চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। তার মধ্যে নদিয়ায় আছেন ২০ জন। এ দিন তাঁদের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দিলেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান বিমলেন্দু সিংহ রায়।
কৃষ্ণনগরের রাধানগরের বাসিন্দা দীপঙ্কর ঘোষ বলেন, “সব আশাই ছেড়ে দিয়েছিলাম। এখন আমার বয়স ৩৮। হাতে মাত্র দু’টো বছর। এত দিন গৃহশিক্ষকতা করে সংসার চালিয়েছি। এ বার অবস্থার পরিবর্তন হবে।”
নাকাশিপাড়ার জালশুখা-গলায় দড়ির বাসিন্দা আসান শেখের পুজো নেই, কিন্তু উৎসব আছে। ২০১৭ সাল থেকে তাঁর জীবনও বদলে গিয়েছিল। চাকরির দাবি নিয়ে আদালত আর বাড়ি করতে-করতে পাঁচটা বছর পার করে দিয়েছেন। আসান বলেন, “আশপাশে সকলে মেতে উঠবে শারদ উৎসবে। আমরাও তাদের সঙ্গে মেতে উঠতে পারব।”
বিমলেন্দু বলেন, “নিয়োগপত্র হাতে পেয়ে শুধু যে চাকরিপ্রার্থীরাই খুশি তা নয়, আমরাও খুশি। ভীষণ একটা ভাল লাগা কাজ করছে ওদের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দিতে পেরে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy