—ফাইল চিত্র।
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় রীতিমতো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে প্রশাসনকে। যত দিন যাচ্ছে, ততই জোরদার হচ্ছে মারণ ভাইরাসের দাপট। ব্লকে ব্লকে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। বর্তমানে একই সঙ্গে প্রতিটি ব্লকে বাড়ছে কোয়রান্টিন সেন্টারের চাহিদাও। এই সময়ে যৌথ উদ্যোগে মসজিদ ও মাদ্রাসায় কোয়রান্টিন সেন্টার হিসাবে মানুষের থাকার ব্যবস্থা করেছেন এলাকার স্থানীয় মানুষজন।
বিভিন্ন জায়গায় বাইরে থেকে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে বিক্ষোভ তৈরি হয়েছে। সংক্রমণের ভয়ে তাঁরা অনেকেই নিজের গ্রামে ঢুকতে পারছেন না। প্রশাসনিক ভাবে কোয়রান্টিন সেন্টারের সংখ্যাও সীমিত। স্থানীয় স্কুলগুলিকে কোয়রান্টিন কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহার করার প্রশাসনিক নির্দেশ এলেও স্থানীয় মানুষ অনেকেই নিজেদের স্বাস্থ্যসুরক্ষার কথা ভেবে তাতে বাধা দিচ্ছেন। এমন সঙ্কটের সময়ে মানুষের প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে এ বার নাগাদি এলাকায় এক অভিনব ব্যবস্থা করা হল। বিক্রমপুর দারুল উলম মাদ্রাসা ও তারই সংলগ্ন মসজিদ কোয়রান্টিন সেন্টার হিসাবে গড়ে তোলা হল। যেখানে ভিন্ রাজ্য থেকে বাড়ি ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকেরা থাকবেন। ভাগা গ্রামের স্থানীয় সকল সম্প্রদায়ের মানুষ সেখানে থাকতে পারবেন বলে জানানো হয়েছে। এ ছাড়াও মসজিদ কর্তৃপক্ষই ওই সকল পরিযায়ী শ্রমিকের খাওয়ার ও প্রয়োজনীয় জিনিসের দায়িত্ব নিচ্ছেন বলে জানা গিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য প্রশাসন যে শ্রমিকদের ট্রেনে জেলায় ফিরিয়ে নিয়ে আসছে, তাঁদের সকলকে কোয়রান্টিন কেন্দ্রে রাখা হচ্ছে না। অনেককেই থার্মাল স্ত্রিনিং করে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। আবার, অনেক ক্ষেত্রে ভিন্ রাজ্যের শ্রমিকেরা নিজেরাই গাড়ি ভাড়া করে চলে আসছেন। এই সময়ে ভাগা গ্রামের শ্রমিকেরা ফিরে আসায় চিন্তিত হয়ে পড়েন স্থানীয় লোকজন। স্থানীয় সকলে মিলে আলোচনা করে তাঁরা ভাগা গ্রামের একটি স্কুলকে কোয়রান্টিন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ওই স্কুল লোকালয়ের মধ্যে হওয়ার কারণে পরে সিদ্ধান্ত বদল করা হয়। তখনই গ্রামের সকলে মিলে মসজিদ ও মাদ্রাসাকে কোয়রান্টিনের কাজে যুক্ত করার কথা ভাবেন। ওই শ্রমিকদের থাকা-খাওয়ার যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেই কারণে গ্রামের পক্ষ থেকে একটি কমিটিও তৈরি করা হয়।
ওই কমিটির পক্ষ জানানো হয়েছে, বুধবার বিকেল পর্যন্ত মোট ১৯ জন পরিযায়ী শ্রমিক রয়েছেন সেখানে। নিজেদের সুবিধার জন্য মহারাষ্ট্র থেকে আসা শ্রমিকদের আলাদা করে রাখা হয়েছে। এছাড়াও তাঁদের একটি ঘরে এক থেকে দুই জনকে রাখা হয়েছে। সকলকে রান্না করার আনাজ, সরঞ্জাম সহ গ্লাভস, মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার, শৌচালয়ে ব্যবহারের জন্য ফিনাইল দেওয়া হয়েছে।
ওই গ্রাম-নির্মিত কোয়রান্টিন কেন্দ্রে রয়েছেন ভাগাচাঁদপুর গ্রামের এক পরিযায়ী শ্রমিক আশিস হাজরা। তিনি এ দিন বলেন, ‘‘আমাদের কোনও সমস্যা হচ্ছে না। গ্রামে যেমন একসঙ্গে থাকি, এখানেও একই সঙ্গে আছি। আমরা নিজেরাই রান্না করছি মিলেমিশে।’’
গ্রাম কমিটির সভাপতি মহিউদ্দিন মণ্ডল বলেন, ‘‘সকলেই যাতে সুস্থ থাকেন, সেই জন্য গ্রামের সকল সম্প্রদায় মিলে বসে এই পরিকল্পনা করা হয়েছে। শুধু এই গ্রামের লোকজন নন, অন্য কেউ এসে থাকতে চাইলেও থাকতে পারবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy