মৃত জওয়ানের শোকার্ত পরিবার। সোমবার কালীগঞ্জে। নিজস্ব চিত্র
তখন সবে সকাল ৭টা।
একটা অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন এল কালীগঞ্জের খোর্দ বেঘিয়া গ্রামে সিআরপি জওয়ান বিশ্বজিৎ দত্তের (৩৭) বাড়িতে। ফোন ধরেছিলেন বিশ্বজিতের স্ত্রী পম্পা। তাঁকে জানানো হল, “আপনার স্বামীর গুলি লেগেছে।“ ফোন কেটে গেল।
সোমবার সকালে কথাটা শুনেই বাড়ির সবাই চমকে উঠেছিলেন। গুলি লাগল কী ভাবে? শ্রীনগরের পান্থ চকে পোস্টিং বিশ্বজিতের, সেখানে কি তবে কোনও জঙ্গি হামলা হয়েছে? যে নম্বর থেকে ফোন এসেছিল, সেখানেই ফোন করলেন পম্পারা। এ বার শুনলেন— “উনি নিজেই নিজেকে গুলি করেছেন।“ আবার ফোন কেটে গেল। ফের ফোন করতে বলা হল, “ফোনে কথা বলতে বলতে ডিউটি থেকে বেরিয়ে বাথরুমে চলে গিয়ে নিজের মাথায় গুলি করেছেন বিশ্বজিৎ।“
সোমবার দুপুরে বাড়ির উঠোনে সাত বছরের ছেলে আদিত্য আর দু’বছরের মেয়ে প্রত্যুষাকে সঙ্গে নিয়ে বসে এই বৃত্তান্তই সবিস্তার বলছিলেন পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রাম থেকে বিয়ে হয়ে আসা পম্পা। শুধু তিনি নন, পরিবারের কেউই বুঝে উঠতে পারছেন না, শান্ত স্বভাবের বিশ্বজিৎ কেন আত্মহত্যা করতে যাবেন। পম্পা জানান, গত চার বছর ধরে তাঁর স্বামী শ্রীনগরের কাছে পান্থচকে রয়েছেন। প্রতি দিন নিয়ম করে ফোন করতেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই বাড়ি ফিরবেন বলে জানিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন, কনস্টবেল থেকে তাঁর হাবিলদার হওয়ার কথা চলছে। ছেলেমেয়ের পড়ার সুবিধার জন্য দেবগ্রামে বাড়ি করেছেন তাঁরা। ছুটিতে এসে সেই বাড়িতে উঠে যাওয়ার কথাও হয়েছিল।
আত্মীয়-পড়শিদের মধ্যে বসে পম্পা বলেন, “ও এমন কাজ করতেই পারে না। কেউ ওকে মেরে দিয়েছে। এর তদন্ত চাই।“ সিআরপিএফের তরফ থেকে আসা ফোনে বারবার বয়ান বদল করা হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন। পম্পার কথায়, “ওরা এক বার বলছে ডিউটি থেকে এসে নিজেকে গুলি করেছে, আবার বলছে ডিউটি যাওয়ার সময়ে গুলি করেছে। সত্যিটা তা হলে কী?” ভাইয়ের অপমৃত্যুর তদন্ত দাবি করেছেন বিশ্বজিতের মেজদা সুবল দত্তও। গ্রামের বাসিন্দা প্রহ্লাদ দত্তও বলেন, “ও বাড়ি এলেই সকলের সঙ্গে বসে গল্প করত। ও আত্মহত্যা করেছে, এটা মেনে নিতে পারছি না। এই মৃত্যুর তদন্ত চাই।“
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy