Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪

তাজপুর-জট কাটাতে আজ বৈঠক নবান্নে

উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যের ভোটের ফলাফল যা-ই হোক, কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক যেন ধাক্কা না-খায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৭ ০৩:২৩
Share: Save:

উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যের ভোটের ফলাফল যা-ই হোক, কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক যেন ধাক্কা না-খায়।

এমনই বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবং তাতে সাড়া দিতে চলেছে কেন্দ্রীয় জাহাজ মন্ত্রকও। কেন্দ্র যে সাড়া দিতে তৈরি, তার হাতে-গরম প্রমাণও মিলেছে। প্রায় চার মাস থমকে থাকার পরে তাজপুরে প্রস্তাবিত বন্দরের নির্মাণ নিয়ে ফের আলোচনা শুরু হচ্ছে। আজ, ব়ৃহস্পতিবার নবান্নে মুখ্যসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনায় বসছেন কলকাতা বন্দরের চেয়ারম্যান এম টি কৃষ্ণবাবু। ওই বৈঠকে তাজপুর বন্দর অন্যতম আলোচ্য ঠিকই, তবে একমাত্র আলোচ্য নয়। সেখানকার প্রস্তাবিত বন্দর নিয়ে জট ছাড়ানোর চেষ্টার সঙ্গে সঙ্গে বন্দরের কাছে কলকাতা পুরসভার প্রাপ্য কর মেটানো, বন্দর এলাকায় রাস্তা সারাই, নয়াচর দ্বীপে পলি ফেলার মতো বিষয়েও আলোচনা হবে আজকের বৈঠকে।

বুধবার কলকাতা বন্দরের সদর দফতরে কৃষ্ণবাবু জানান, কেন্দ্র ও রাজ্য যৌথ ভাবে তাজপুরে বন্দর নির্মাণ করুক, এটাই তাঁদের প্রস্তাব। সে-ক্ষেত্রে ওই বন্দরে কেন্দ্রের ৭৪ ভাগ এবং রাজ্যের ২৬ ভাগ অংশীদারি থাকবে। ‘‘মাস তিনেক আগে এই নিয়ে আলোচনার জন্য রাজ্যের তরফে প্রতিনিধি পাঠানোর কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই বৈঠক হয়নি। বৃহস্পতিবার মুখ্যসচিবের সঙ্গে আলোচনায় আমরা তাজপুর বন্দরের প্রসঙ্গ তুলব,’’ বললেন বন্দরের চেয়ারম্যান।

তাজপুরে প্রস্তাবিত বন্দর নিয়ে সমস্যা ঠিক কোথায়? বন্দরের খবর, দিঘার কাছে তাজপুরে একশো শতাংশ বেসরকারি বিনিয়োগে ১৬ মিটার নাব্যতার একটি বন্দর গড়তে চায় রাজ্য। কিন্তু জাহাজ মন্ত্রকের প্রস্তাব, কেন্দ্র-রাজ্য যৌথ উদ্যোগে গড়া হোক ওই বন্দর। এবং তাতে মূল অংশীদারি থাক কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু এই নিয়ে আপত্তি তোলে রাজ্য সরকার। নবান্ন প্রস্তাব দেয়, তাজপুরে কেন্দ্র সামান্য অংশীদারি রাখুক। বেশি অংশীদারি থাক বেসরকারি সংস্থার হাতেই। রাজ্যের আপত্তির কথা জেনে কেন্দ্র জানিয়ে দেয়, রাজ্য তাজপুরে বেসরকারি বন্দর নির্মাণে আগ্রহ দেখালে তারা সাগরের প্রস্তাবিত বন্দর নির্মাণ থেকে পিছিয়ে যাবে। কারণ, পাশাপাশি দু’টি বন্দর বাণিজ্যিক ভাবে লাভবান হতে পারে না। সাগর বন্দর নির্মাণের জন্য ৫১৫ কোটি টাকা অনুদান দেওয়ার ক্ষেত্রেও একই শর্ত চাপায় কেন্দ্র। এই চাপান-উতোরে সাগর ও তাজপুর— দু’টি বন্দর তৈরির কাজই থমকে যায়।

এর মধ্যেই বাংলা-ওড়িশা সীমানায় সুবর্ণরেখা বন্দর নির্মাণে পরিবেশের ছাড়পত্র পেয়ে গিয়েছে চেন্নাইয়ের একটি সংস্থা। ওই প্রকল্পে বিনিয়োগ করছে টাটা গোষ্ঠী। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সুবর্ণরেখার পাশে তাজপুর বন্দর নিয়ে ফের চর্চা শুরু হয়েছে জাহাজি মহলে। পাশাপাশি, তাজপুরের জন্য রাজ্যও বেসরকারি সংস্থা বাছাইয়ে আগ্রহপত্র চাওয়ার কাজ পিছিয়ে দিয়েছে।

‘‘রাজ্য যদি মন্ত্রকের প্রস্তাব মেনে নেয়, তা হলে সাগর-তাজপুর দু’টি বন্দরই হতে পারে। নইলে সাগর বন্দরের দিনের আলো দেখা বেশ মুশকিল,’’ বলছেন বন্দর-প্রধান।

অন্য বিষয়গুলি:

Tajpur Nabanna
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE