Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

কোতলের পাশাপাশি গণধর্ষণও, ছক ফাঁস মুসার

মাথা কেটে একাধিক লোককে খুনের ছক তো ছিলই। সেই সঙ্গে মুসা ও তার দুই শাগরেদ বীরভূমের লাভপুরে এক তরুণীকে গণধর্ষণেরও মতলব এঁটেছিল বলে বলে গোয়েন্দাদের একাংশের দাবি। তাঁরা জানাচ্ছেন, মুসারা চেয়েছিল মোবাইল ফোনে ওই পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড ও গণধর্ষণের ভিডিও তুলে আইএস-ঘনিষ্ঠ কিছু ওয়েবসাইট মারফত তা ছড়িয়ে দিতে।

সুরবেক বিশ্বাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৬ ০৩:২৬
Share: Save:

মাথা কেটে একাধিক লোককে খুনের ছক তো ছিলই। সেই সঙ্গে মুসা ও তার দুই শাগরেদ বীরভূমের লাভপুরে এক তরুণীকে গণধর্ষণেরও মতলব এঁটেছিল বলে বলে গোয়েন্দাদের একাংশের দাবি। তাঁরা জানাচ্ছেন, মুসারা চেয়েছিল মোবাইল ফোনে ওই পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড ও গণধর্ষণের ভিডিও তুলে আইএস-ঘনিষ্ঠ কিছু ওয়েবসাইট মারফত তা ছড়িয়ে দিতে। যাতে গোটা দুনিয়া আঁতকে ওঠে।

আইএস-সদস্য সন্দেহে লাভপুরের বাসিন্দা মহম্মদ মুসাউদ্দিন ওরফে মুসা ও তার দুই সহযোগী— সাদ্দাম হোসেন ওরফে কালো ও শেখ আবাসউদ্দিন ওরফে আমিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে তাদের জেরা চলছে। তাতেই নতুন তথ্যটি বেরিয়ে এসেছে বলে তদন্তকারী-সূত্রের খবর। এ বার আরও দু’জনকে খুনের ছকের পাশাপাশি গণধর্ষণের এ হেন পরিকল্পনার কথা জেনে দুঁদে গোয়েন্দারাও তাজ্জব। তাঁরা বলছেন, ইরাক-সিরিয়ায় বালিকা, কিশোরী-সহ অসংখ্য মহিলাকে অপহরণ-ধর্ষণ করে যৌনদাসী বানানোর অভিযোগ উঠেছে আইএসের বিরুদ্ধে। নারী নিগ্রহের তেমন কিছু ভিডিও ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। তবে পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতের কিছু যুবক এর আগে আইএস-যোগ সন্দেহে ধরা পড়লেও এ দেশে মেয়েদের উপরে অত্যাচারের কোনও পরিকল্পনার ইঙ্গিত তাদের কাছে পাওয়া যায়নি।

সেই হিসেবে মুসা-সাদ্দাম-আমিন কয়েক ধাপ এগিয়ে গিয়েছে বলে গোয়েন্দা মহলের পর্যবেক্ষণ। এক অফিসারের কথায়, ‘‘ধৃত জঙ্গিদের থেকে ফাঁস হওয়া নাশকতার ছক আমাদের অবাক করে। কিন্তু এ তো নাশকতা নয়! একটি মেয়েকে লালসার শিকার বানিয়ে সেই ছবি সাইবার দুনিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া!’’ কেন্দ্রীয় ইনটেলিজেন্স ব্যুরো (আইবি)-র মতে, আইএসের চাঁইরা মুসাদের কতটা মগজধোলাই করেছে, এতেই তার আঁচ মালুম হচ্ছে।

গোয়েন্দা-সূত্রের খবর: যে তরুণীকে অত্যাচারের ছক কষা হয়, তিনি লাভপুরের এক বাগানবাড়ির পরিচারিকা। বাগানবাড়িটির মালিক বেহালার প্রোমোটার। তিনি মাঝে-মধ্যে ওখানে যান। থাকেন এক রক্ষী। গোয়েন্দাদের একাংশের দাবি, ওই প্রোমোটার ও তাঁর দেহরক্ষীর গলা কেটে টাকাপয়সা, জিনিসপত্র লুঠপাট আর পরিচারিকাকে গণধর্ষণ করা— পুরো পর্বের ভিডিও তুলে ইন্টারনেটে পোস্ট করার ইচ্ছে ছিল মুসা-আমিনদের। তারা এ-ও ভেবেছিল, সিরিয়ায় আইএসের মাথারা তাদের ‘সাহসিকতা ও কৃতিত্বের’ এ হেন নমুনা দেখে বিলক্ষণ খুশি হবে।

তদন্তকারী-সূত্রের খবর: মুসা আগে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার অফিসারদদের চর হিসেবে কাজ করত। সেই সুবাদে ২০১৪ থেকে মুসা-আইএস যোগাযোগ সম্পর্কে নানা তথ্য আইবি’র হাতে ছিল। তবু এত দিন তাকে ধরা হয়নি।

অন্য বিষয়গুলি:

Musa Rape Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE