Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

হোমে বিয়ে, নতুন জীবনে পা রাখলেন তিন অনাথিনী

জন্মের পর বাবা-মায়ের ভালবাসা জোটেনি। কে বা কারা রেখে গিয়েছিলেন হোমে। সেই হোম থেকেই সদ্য আঠারো পেরনো তিন অনাথ কন্যা নতুন জীবনে পা রাখল রবিবার। মেদিনীপুর বিদ্যাসাগর বালিকা হোমের তিন আবাসিক অরুণা দাস, রূপা দাস ও তুলি দাসের বিয়ে হল এ দিন।

বিয়ের আসরে বর-কনেরা। —নিজস্ব চিত্র।

বিয়ের আসরে বর-কনেরা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:০০
Share: Save:

জন্মের পর বাবা-মায়ের ভালবাসা জোটেনি। কে বা কারা রেখে গিয়েছিলেন হোমে। সেই হোম থেকেই সদ্য আঠারো পেরনো তিন অনাথ কন্যা নতুন জীবনে পা রাখল রবিবার। মেদিনীপুর বিদ্যাসাগর বালিকা হোমের তিন আবাসিক অরুণা দাস, রূপা দাস ও তুলি দাসের বিয়ে হল এ দিন।

অরুণার বিয়ে হচ্ছে দমদমে। পাত্র সঞ্জয় বণিকের স্টেশনারি দোকান রয়েছে। রূপার শ্বশুরবাড়ি বাঁকুড়া জেলার শালবনিতে। পাত্র রামগতি আটা পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি, চাষজমিও রয়েছে। তাছাড়া রূপা চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পরে সেলাইয়ের কাজ শিখেছেন। তুলির বিয়ে হল খড়্গপুর শহরের খরিদার বাসিন্দা পরবিন্দর সিংহের সঙ্গে। পরবিন্দরের টেলারিংয়ের দোকান রয়েছে।

তিন কন্যা ছোট থেকে হোমে বড় হলেও তাঁরা মেদিনীপুরে এসেছেন কয়েক বছর আগে। এ ক’দিনেই সকলের আপনার জন হয়ে উঠেছিলেন তিন যুবতী। এ দিন বিয়ের অনুষ্ঠানেও আয়োজনের কোনও খামতি ছিল না। বেজেছে সানাই। কনের সাজে তিনজনকে সাজিয়েছেন হোমের কর্মীরা। শয্যাদ্রব্য থেকে বাসনপত্র, দানসামগ্রীও দেওয়া হয়েছে প্রথা মেনে। সাজপোশাকের দায়িত্ব নিয়েছিলেন খড়্গপুরের বাসিন্দা গৌরী ভদ্র। জেলা সমাজ কল্যাণ আধিকারিক প্রবীর সামন্ত, হোমের সুপার শান্তা হালদার, অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার কাকলী রায়দের উদ্যোগে চাঁদা তুলে তিনজনকে সোনার কানের দুল দেওয়া হয়েছে।

ছিল ভুরিভোজের বন্দোবস্ত। ভাত, ডাল, বাঁধাকপির তরকারি, মুরগির মাংস, চাটনি, পাপড়, দই, মিষ্টি তৃপ্তি করে খেয়েছেন সকলে। জেলা সমাজকল্যাণ আধিকারিক প্রবীরবাবু বলেন, “অনেক কষ্ট করে বড় হয়েছে ওরা। ওদের দীর্ঘ সুখী দাম্পত্য জীবন কামনা করি।”

নতুন জীবনে আনন্দে চোখে জল এল একাদশ শ্রেণিতে পড়া অরুণার। তাঁর কথায়, “আমাদের জীবনে যে এমন দিন আসবে, ভাবতে পারিনি। ভীষণ আনন্দ হচ্ছে। আবার সকলকে ছেড়ে যাওয়ার জন্য দুঃখও হচ্ছে।” অন্য দিকে, রূপার স্বামী রামগতির বৌদি রুম্পার বক্তব্য, “আমরা বাবা-মা হারা মেয়েকে ভরা সংসার ফিরিয়ে দিতেই এখানে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

অন্য বিষয়গুলি:

medinipur marriage orphans
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE