সুতাহাটার কালিপুজোয় রাতে উপচে পড়ল ভিড়। এলাকার মোড়ে মোড়ে আলোর গেট। দোকান, কলরবে মুখর গোটা এলাকা। পুজোয় কোনও রকমের অশান্তি এড়াতে রয়েছে ব্যাপক পুলিশি ব্যবস্থাও।
গোটা সুতাহাটাই কার্যত আলোর জোয়ারে ভাসছে। হলদিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ আসছেন এখানে মণ্ডপ এবং আলোর কারিকুরি দেখতে। স্থানীয় বাসিন্দা তথা শিক্ষক সন্দীপন দাস বলেন, “এই সময় এই এলাকায় এত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয় যে, কোনটা ছেড়ে কোনটায় যাই!” মধুসূদন পড়ুয়া বলছেন, এই সময় পুজো কমিটিগুলির মধ্যে সমাজসেবার যে প্রবণতা দেখা যায়, তা এলাকার মানুষ সাধুবাদ জানান।
স্থানীয় বাসিন্দা এবং পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, এখানে মোট ১৮টি বড় মাপের কালীপুজো হয়। কোথাও থিম বিশ্বকাপ ফুটবল, আবার কোথাও থিম ভ্রুণ হত্যার বিরুদ্ধে সমাজ সচেতনতা। তবে বেশির ভাগ পুজো কমিটি এ বার সমাজ সচেতনতা এবং সমাজসেবায় জোর দিয়েছেন। সুতাহাটার সাইকো ক্লাব এ বার দুই লক্ষ টাকা বাজেটের পুজোয় থিম করেছে ফুটবল বিশ্বকাপ। মণ্ডপ হয়েছে বিশ্বকাপের আদলে। উদ্বোধন করেন বিধায়ক শিউলি সাহা। ক্লাবের সম্পাদক শিবশঙ্কর ধাড়া জানান, এ বার তাঁরা বিনামূল্যে ব্লাডসুগার পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছেন।
সুতাহাতার ক্লাব প্রয়াস এ বার তাদের মণ্ডপে মরনোত্তর চক্ষুদানের অঙ্গীকার করাতে শিবির করছে। ক্লাব কর্তা শোভন মাইতি জানান, উদ্বোধন করার কথা শিল্পী মৌমিতা চক্রবর্তীর। আমলাটের নিউ তরুণ ডেভলপমেন্ট সংস্থার পুজায় এ বার থিম ভ্রুণ হত্যার বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তোলা। ক্লাবের অন্যতম কর্মকর্তা শোভন দাস জানান, তাঁরা প্রতি বছর সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে বিষয় নির্বাচন করেন। এ বার তাঁরা দেখিয়েছেন সমাজে নারী এবং পুরুষ উভয়েরই অবদান রয়েছে। ৩৪ বছরে পা দেওয়া এই পুজোর উদ্বোধনে এসেছিলেন সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী এবং টিভি সিরিয়াল অভিনেত্রী বাহামনি।
আমলাটের অভিযান ক্লাবের মণ্ডপ তৈরি হয়েছে মশারি এবং ফুল দিয়ে। ফ্যান্সি ওয়েলফেয়ার ক্লাবের পুজায় এক প্রাচীন ভগ্নপ্রায় রাজবাড়ি তুলে ধরা হয়েছে। ক্লাবের কর্মকর্তা বিমলেন্দু প্রধান জানান, তাঁদের সামাজিক ভাবে পিছিয়ে পড়াদের জন্য নানা কর্মসূচী রয়েছে। নিউতরুণ সঙ্ঘের পুজোর এ বার ৪০ বছর। উদ্যোক্তাদের দাবি, হোগলার মণ্ডপ এবং বাঁশের প্রতিমা দেখার মত। ক্লাবের কর্মকর্তা রবীন্দ্রনাথ পাহাড়ি জানান, এ বার তাঁরা থ্যালাসেমিয়া রোগীদের হাতে সাহায্য তুলে দেবেন।
এ ছাড়া মিলন সঙ্ঘ, অলস্টার ক্লাব, আকাশগঙ্গা, নিশান ক্লাবের পুজোয় ভিড় টেনেছে মঞ্চ সজ্জা এবং নানাবিধ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এ ছাড়াও দুর্গাচকের বেশ কয়েক’টি ক্লাবে বড় পুজো হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল উজান ক্লাব, চৈতন্যপুরের সংহতি ক্লাব। স্থানীয় কার্গিল সঙ্ঘের পুজোও এ বার বড় মাপের হয়েছে। হলদিয়া টাউনশিপ, আপনি বাজার কমিটি, ফ্যান্সি মার্কেট বাজার কমিটি, ল্যান্ডমার্ক কমিটির পুজোয় মণ্ডপ-প্রতিমায় বৈচিত্র্য রয়েছে। বন্দর আবাসনের পুজোয় আবাসিকদের নাটক, গান-সহ নানা অনুষ্ঠান রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy