এক সময় শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে পথে নামা শ্রমিকেরা ভোটের মুখে সামিল হলেন শুভেন্দুরই সমর্থনে পদযাত্রায়।
২০১২-র অক্টোবরে হলদিয়া বন্দর ছেড়ে চলে যায় পণ্য খালাসকারী সংস্থা এবিজি। কাজ হারান প্রায় সাড়ে ছশো শ্রমিক। তৃণমূল নেতৃত্বের চাপে বাড়তি শ্রমিক নিয়োগ করে লোকসানের মুখে পড়েছিলেন বলে অভিযোগ ছিল এবিজি কর্তৃপক্ষের। পরে এবিজি-কর্তাদের অপহরণের অভিযোগও ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এর পরেই এবিজি বন্দর ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
কাজহারা প্রায় দু’শো শ্রমিক গত দেড় বছর শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসি-র ব্যানারে হলদিয়ার নন্দরামপুরে মঞ্চ বেঁধে লাগাতার অবস্থান চালাচ্ছিলেন। তাঁদের সমর্থন করেছিলেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। হলদিয়ায় সভা করেন প্রদীপ ভট্টাচার্য, দীপা দাশমুন্সিরা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও নন্দরামপুরের অবস্থান-মঞ্চে যান। শুক্রবার মঞ্চ খুলে ফেলা হয়। সেখান থেকেই আন্দোলনকারী শ্রমিকদের অধিকাংশ তমলুকের তৃণমূল প্রার্থী শুভেন্দুর সমর্থনে পদযাত্রায় সামিল হন। শুভেন্দু নিজেও ছিলেন পদযাত্রায়।
এবিজি যাওয়ার পরে পুনর্বাসনের দাবিতে প্রায় সাড়ে তিনশো কাজহারা শ্রমিক নন্দরামপুরে লাগাতার আন্দোলন শুরু করেন। ২০১৩-য় পঞ্চায়েত ভোটের আগে ওই শ্রমিক আন্দোলনের অন্যতম নেতা নূর আলম-সহ প্রায় ৪০ জন শ্রমিক তৃণমূলে যোগ দেন। তাঁরা বন্দরের একটি পণ্য খালাসকারী সংস্থায় কাজও পান। ক্রমে কিছু শ্রমিক কাজ পেয়ে অন্যত্র চলে যান। বাকি শ’দুয়েক আন্দোলন চালাচ্ছিলেন।
কাজহারা শ্রমিকদের আন্দোলনে এত দিন নেতৃত্ব দেওয়া আইএনটিইউসি-র হলদিয়া জোনাল সভাপতি আরিফ আহমেদ ছিলেন এ দিনের পদযাত্রায়। তাঁর অভিযোগ, কংগ্রেস, আইএনটিইউসি শ্রমিকদের অসহায়তা ও দারিদ্রকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করেছে। কিন্তু শ্রমিকদের জন্য কিছু করেনি। ভোটের আগে কংগ্রেস নেতৃত্ব বা কংগ্রেস প্রার্থী শ্রমিকদের খোঁজ নেননি। ওই শ্রমিক নেতার দাবি, কর্মসংস্থানের প্রশ্নে প্রতিশ্রুতি পালন করতে দেখে তাঁরা তমলুকের বিদায়ী সাংসদের উপরে আস্থা রেখেছেন।
আরিফের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অধীর চৌধুরী। তাঁর কথায়, “কেউ প্রলোভনে পা দিয়ে অন্য দিকে গেলে কিছু করার নেই।” তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী শেখ আনোয়ার আলির অভিযোগ, ব্যক্তিগত স্বার্থে কয়েক জন শ্রমিককে নিয়ে তৃণমূলের দিকে ঝুঁকেছেন আরিফ আহমেদ। আরিফ অভিযোগ মানেননি। আর তাঁর সঙ্গেই পা মেলানো কাজহারা শ্রমিক চন্দন মাইতি, সুখেন্দু বেতাল, শেখ কামালদের বক্তব্য, “আগেই শুভেন্দুবাবুর প্রতি আস্থা রাখলে এত দিন হয়তো কর্মহীন থাকতাম না। আমরা ভুল করেছিলাম।”
শুভেন্দু জানান, এবিজি-র কর্মহারা প্রায় চারশো জনকে আগেই কাজের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “এলাকাবাসীর সমস্যার সমাধান করাই আমার কাজ।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy