ফেঁপে উঠেছে মাটি। নিজস্ব চিত্র।
রেললাইনে ফাটল ও সংলগ্ন এলাকার মাটিতে ফাটলের তীব্রতা বাড়ল মহিষাদলের সতীশ সামন্ত হল্ট স্টেশন লাগোয়া এলাকায়। শুক্রবার রাত থেকে রেল বাঁধের ৭০ মিটারের ধস এসে ঠেকে ৪০০ মিটারে। সংলগ্ন রঙ্গিবসান গ্রামের পশ্চিমপল্লির মাটি ফেঁপে উঠছে, দেখা দিচ্ছে বড় ফাটলও। নিরাপত্তার কারণে স্থানীয় গ্রামের ছ’টি পরিবারের প্রায় ৩০জন সদস্যর ঠাঁই হয়েছে রঙ্গিবসান প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এলাকা জুড়ে ছড়িয়েছে আতঙ্ক। রেল বিকাশ নিগম লিমিটিডের তরফে যে বেসরকারি সংস্থাকে হলদিয়া থেকে পাঁশকুড়া রেলের ডবল লাইন তৈরির কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সেই সংস্থার আধিকারিক ওমপ্রকাশ যাদব বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আমরাও উদ্বিগ্ন। রেল বিকাশ নিগমকে সব জানানো হয়েছে। আশা করি দ্রুত এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বৃহস্পতিবার দুপুরে মহিষাদলের সতীশ সামন্ত হল্ট স্টেশনের কাছে কাজ চলাকালীন হঠাৎ ধস নেমেছিল পাঁশকুড়া-হলদিয়া শাখার নির্মীয়মাণ ডবল লাইনে। ধসের দরুন কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার রোলার মেশিনটি মাটির তলায় চলে যায়। সংস্থার এক আধিকারিক জানিয়েছিলেন, আগেই রেললাইন পাতার জন্য মাটি ভরাট করা হয়েছিল। এ বার রোলার দিয়ে তা সমান করা হচ্ছিল। সে দিন দুপুরে কর্মীরা হঠাৎ দেখেন প্রায় ৭০ মিটার লম্বা ও ১০ মিটার চওড়া অংশে প্রায় ৫-৭ মিটার ধস নেমেছে। তবে পাঁশকুড়া-হলদিয়া সিঙ্গল লাইনে ক্ষতি না হওয়ায় ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত হয়নি। ঘটনাস্থলে এসেছিলেন রেলের আধিকারিকরা। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান শেখ আমেদ আলি জানান, ১৯৬৭-১৯৬৮ সালে যখন এই এলাকায় প্রথম রেল লাইন পাতার কাজ শুরু হয়েছিল, সেই সময়ও এই একই সমস্যা দেখা দিয়েছিল। এ বারও সেই ঘটনারউ পুনরাবৃত্তি ঘটল।
শুক্রবার রাত থেকে ফাটল বাড়তে থাকে। স্থানীয় বাসিন্দা পুষ্প বেতাল, পিন্টু বেতাল বলেন, “শুক্রবার রাত থেকে ফাটলগুলো বাড়ছিল। পুকুর ভরাট হয়ে যায়। ভয়ে আমরা বাড়ি ছেড়ে চলে এসেছি। এরপর কী যে হবে কে জানে।” এলাকার বিদায়ী সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর নির্দেশে শনিবার ঘটনাস্থলে যান মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শিউলি দাস ও সহ-সভাপতি তিলক চক্রবর্তী। তিলকবাবুর অভিযোগ, “রেল কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তার কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় এলাকায় ক্ষোভ বাড়ছে।” রেল পুলিশ দিয়ে ওই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘিরে রাখার আবেদনও জানান তিনি। নিগমের চিফ প্রোজেক্ট ম্যানেজার এ কে রায় বলেন, “গভীর জলা জমিতে যেখানেই ভরাট করা রয়েছে সেখানেই এই ফাটল বাড়বে। আটকানোর কোনও ব্যবস্থা নেই।” তবে তিনি আরও জানান, আগামী দু’তিন দিনের মধ্যে বোরিং করে মাটির তলদেশ পরীক্ষা করে ফের জমি ভরাটের কাজ শুরু হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy