প্রবোধ পণ্ডাকে সংবর্ধনা।
বুধবারই তিনি সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার দিনভর দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গেই সময় কাটালেন প্রবোধ পণ্ডা। এ দিন সিপিআইয়ের জেলা নেতৃত্ব তাঁকে সংবর্ধিতও করেন। সকালে দলের জেলা কার্যালয়ে এক ঘরোয়া অনুষ্ঠানে নব-নির্বাচিত রাজ্য সম্পাদক প্রবোধবাবুর হাতে পুষ্পস্তবক তুলে দেন কর্মীরা। ছিলেন সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক সন্তোষ রাণাও। বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রবোধবাবু বলেন, “সময়টা কঠিন। তবে থেমে থাকলে চলবে না। মানুষকে সংগঠিত করতেই হবে।”
এ দিন নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন আর্জি জানান প্রবোধবাবুকে। কেউ বলেন, “সামনেই আমাদের এলাকায় পুরভোট আছে। আপনাকে একটু সময় দিতে হবে।” কারও বক্তব্য, “আমাদের এলাকায় একটা সভা করব ভাবছি। আপনাকে থাকতেই হবে।” কাউকেই নিরাশ করেন প্রাক্তন সাংসদ। বলেছেন, “এখন কলকাতায় বেশি সময় দিতে হবে। তা বলে কি মেদিনীপুরকে ভুলে যাব?”
গত রবিবার থেকে বর্ধমানের অন্ডালে সিপিআইয়ের রাজ্য সম্মেলন শুরু হয়েছিল। চারদিনের এই সম্মেলনের শেষ দিন ছিল বুধবার। দলের রাজ্য সম্পাদক পদে বহুদিন ছিলেন মঞ্জুকুমার মজুমদার। তাঁরই স্থলাভিষিক্তি হয়েছেন প্রবোধবাবু। প্রবোধবাবু প্রবীণ কৃষক নেতা। বছর তিনেক আগে দলের কৃষক সংগঠন কৃষকসভার রাজ্য সম্পাদক হন তিনি। পরে কৃষকসভার সর্বভারতীয় সভাপতিও হন। এখনও তিনি এই দুই পদে রয়েছেন। পাশাপাশি ছিলেন দলের রাজ্য সহ-সম্পাদক পদে। এ বার দায়িত্ব আরও বাড়ল।
প্রবোধবাবু এমন একটা সময়ে সিপিআইয়ের দায়িত্ব নিলেন, যখন রাজ্যে বামদলগুলির অবস্থা অত্যন্ত কোণঠাসা। বাম সমর্থনের একটা বড় অংশ এখন বিজেপিতে ঝুঁকছে। এই পরিস্থিতিতে ঘনিষ্ঠ মহলে সিপিআইয়ের নব-নির্বাচিত রাজ্য সম্পাদক বলছেন, “তৃণমূলকে যেমন রুখতে হবে, তেমন বিজেপিকেও রুখতে হবে। বিজেপির শক্তিবৃদ্ধি হলে রাজনৈতিক লড়াইয়ে তার সুফল তৃণমূলই পাবে।” দলের এক সূত্রে খবর, এ দিন দলের নেতা-কর্মীদেরও তিনি জানান, ভুল-ত্রুটি সংশোধন করার মধ্য দিয়েই আমাদের এগোতে হবে। মানুষের কাছে
যেতে হবে।
পরে প্রবোধবাবু বলেন, “রাজ্যে সরকারের অবস্থা বেহাল। মাত্র সাড়ে তিন বছর হল। এত অল্প দিনের মধ্যে সরকারের এই হাল বলে তা মানুষ ভাবেননি।” সঙ্গে যোগ করছেন, “কৃষক ফসলের দাম পাচ্ছে না। কৃষিকে বাঁচানোর কোনও চেষ্টা নেই। ভাবা যায়?” বৃহস্পতিবার দিনভর শুভেচ্ছা-বার্তা পেয়েছেন প্রবোধবাবু। শুধু দলের নেতা-কর্মীরাই নন, শুভেচ্ছা জানান সিপিএম-সহ বামফ্রন্টের অন্য শরিক দলে নেতা-কর্মীরা, এমনকী তৃণমূলের কয়েকজন নেতা-কর্মীও। তৃণমূল নেতা-কর্মীদের শুভেচ্ছা-বার্তা নিশ্চয়ই অপ্রত্যাশিত? ঘনিষ্ঠ মহলে সিপিআইয়ের পোড়খাওয়া এই নেতা বলছেন, “অনেকেই শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। আর তৃণমূলের সব লোক তো খারাপ নয়। ওদের মধ্যেও কিছু ভাল লোক আছেন। তাঁরাও কখনও কখনও অসহায় বোধ করেন!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy