Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
খড়্গপুর কলেজ

কলেজে বহিরাগত, বিক্ষোভ সিপি-র

তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি) আশ্রিত বহিরাগত দুষ্কৃতীরা কলেজে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে আর তাতে প্রশ্রয় দিচ্ছেন টিচার ইন চার্জ এই অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার খড়্গপুর কলেজে বিক্ষোভ দেখাল ছাত্র পরিষদ (সিপি)। দুপুর একটা থেকে বিকেল পাঁচটা, দীর্ঘ চার ঘণ্টা টিচার ইন চার্জের ঘরের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ করে সিপি-র সদস্যরা।

টিচার ইন চার্জের ঘরে অবস্থান সিপি সদস্যদের। —নিজস্ব চিত্র।

টিচার ইন চার্জের ঘরে অবস্থান সিপি সদস্যদের। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৪ ০০:১০
Share: Save:

তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি) আশ্রিত বহিরাগত দুষ্কৃতীরা কলেজে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে আর তাতে প্রশ্রয় দিচ্ছেন টিচার ইন চার্জ এই অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার খড়্গপুর কলেজে বিক্ষোভ দেখাল ছাত্র পরিষদ (সিপি)। দুপুর একটা থেকে বিকেল পাঁচটা, দীর্ঘ চার ঘণ্টা টিচার ইন চার্জের ঘরের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ করে সিপি-র সদস্যরা।

শেষে টিচার ইন চার্জ অচিন্ত্যকুমার চট্টোপাধায় কলেজে বহিরাগতের যাতায়াত বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে অবস্থান তুলে নেয় সিপি। পরে টিচার ইন চার্জ বলেন, “শুনেছি সোমবার কিছু অপরিচিত যুবক কলেজে ঢুকেছিল। কিন্তু আমি তখন কলেজে ছিলাম না।” তিনি আরও জানান, এখনও সব পড়ুয়া কলেজের পরিচয়পত্র পায়নি। কয়েক দিনের মধ্যেই তা দিয়ে দেওয়া হবে এবং আগামী ১৭ নভেম্বর থেকে সচিত্র পরিচয়পত্র ছাড়া কাউকে কলেজ চত্বরে ঢুকতে দেওয়া হবে না।

বহিরাগতরা কলেজে ঢুকছে বলে এর আগেও সরব হয়েছিল সিপি। কলেজের প্রেক্ষাগৃহে বসে টিএমসিপি সমর্থক এক ছাত্র মদ্যপান করেছে ও শিক্ষক দিবসে এক শিক্ষককে নিগ্রহ করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছিল তারা। এর প্রতিবাদে গত ৯ সেপ্টেম্বর টিচার ইন চার্জের ঘরের সামনে অবস্থানেও বসেছিল সিপি। এরপরে ১২ সেপ্টেম্বর টিএমসিপি’র দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ বাধে। তখন ফের কলেজে বহিরাগত ঢোকে বলে অভিযোগ ওঠে। সব ঠিক থাকলে ডিসেম্বরের শেষে কলেজে নির্বাচন। তার আগে ফের বহিরাগতদের আনাগোনা শুরু হয়েছে বলে খবর। সোমবার দুপুরে কলেজ চত্বরে এলাকার কয়েকজন দুষ্কৃতীকে ঘোরাফেরা করতে দেখেন পড়ুয়ারা। তার জেরে এ দিন সকাল থেকেই সরগরম ছিল কলেজ চত্বর। সিপির অভিযোগ, টিএমসিপি-র সদস্যদের সঙ্গেই কলেজে ঢুকেছিল দুষ্কৃতীরা আর টিএমসিপি-র পাল্টা অভিযোগ, সিপি-র প্রশ্রয়ে দুষ্কৃতীরা ঢুকেছে।

কলেজে দুষ্কৃতী ও বহিরাগতদের যাতায়াত বন্ধ করতে হবে এই দাবিতে এ দিন সকালে মিছিল করে সিপি। অভিযোগ তোলে, টিচার ইন চার্জের প্রশ্রয়েই এ সব হচ্ছে। এরপরই কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলা হয়, কলেজে কোনও বহিরাগত ঢুকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং ১৭ নভেম্বর থেকে সচিত্র পরিচয়পত্র ছাড়া কলেজে ঢোকা যাবে না। তারপরেও টিএমসিপি-র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি, শহর সভাপতি রাজা সরকার কলেজ চত্বরে ঢোকেন। এরপরই টিচার ইন চার্জের ঘরের সামনে ঘেরাও-অবস্থান শুরু করে সিপি। বিক্ষোভে সামিল কলেজের ছাত্র তথা সিপি-র মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের সহ-সভাপতি অমিত পাণ্ডে বলেন, “টিএমসিপি কলেজে দুষ্কৃতী ঢুকিয়েছিল। তাই মিছিল করছিলাম। এর পরে রমাপ্রসাদ গিরি, রাজা সরকার এসে পড়ুয়াদের ভুল বোঝাচ্ছিলেন। নির্বাচনের আগে অশান্তি বাধাচ্ছে টিএমসিপি। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তাতে প্রশ্রয় দিচ্ছেন।”

টিএমসিপি-র অবশ্য দাবি, সংগঠনের নেতারা টিচার ইন চার্জের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। সিপি-র অবস্থান চলায় তাঁরা বাইরে অপেক্ষা করেছেন। টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদের কথায়, “সিপি সোমবার বহিরাগত দুষ্কৃতীদের ঢুকিয়েছিল। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য টিচার ইন চার্জের কাছে অনুরোধ জানাব।” আর বহিরাগত হিসেবে কলেজে ঢোকা প্রসঙ্গে তাঁর ব্যাখ্যা, “এই কলেজের ছাত্র সংসদ আমাদের দখলে। সংগঠনের জেলা সভাপতি হিসেবে আমি অধ্যক্ষের অফিসে আসতেই পারি।”

টিএমসিপি-র শহর সভাপতি রাজা সরকারের পাল্টা অভিযোগ, “এ দিন সিপি-র মিছিলে অরিত্র দে নামে বহিরাগত এক ছাত্র সামিল হয়েছিল।” এ সবের প্রতিবাদে আজ, বুধবার কলেজে মিছিল ও স্মারকলিপি পেশের কর্মসূচি নিয়েছে টিএমসিপি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE