ফের মারামারিতে জড়াল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) দুই গোষ্ঠী। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে খড়্গপুর কলেজে। এ দিন দুপুরে কলেজের নির্দেশ উপেক্ষা করে কলেজে বেশ কয়েক জন টিএমসিপি-র বহিরাগত যুবক ঢুকে যাওয়াতেই গোলমাল বাধে বলে কলেজের একটি সূত্রের দাবি। তা নিয়ে টিএমসিপি-র সদস্যেরা প্রথমে নিজেদের মধ্যে মারামারিতে জড়ায়। সিপিও সেই গোলমালে জড়িয়ে গেলে উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশ এসে পরিস্থিতির সামলায়। ঘটনায় টিএমসিপি-র একটি গোষ্ঠী অপর গোষ্ঠী এবং ছাত্র পরিষদের (সিপি) বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে।
পশ্চিম মেদিনীপুরের টিএমসিপি-র সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি বলেন, “সিপি-র ছেলেরাই দলের ছেলেদের মেরেছে।” সিপি-র নেতা অমিত পাণ্ডে বলেন, “টিএমসিপি-র শহর সভাপতির নেতৃত্বের বহিরাগত হয়েও কলেজে ঢুকেছিল ওদের ছেলেরা। প্রতিবাদ করায় আমাদের মেরেছে। অধ্যক্ষ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।” কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অচিন্ত্য চট্টোপাধ্যায় এমন ঘটনার কথা জানেন না বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, “কলেজের বাইরে কী হয়েছে বলতে পারব না।”
কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘ দিন ধরেই টিএমসিপি-র নেতৃত্বে বহিরাগতরা কলেজে ঢুকছে বলে সরব হয়েছিল কলেজ ছাত্রেরা। এমনকী কলেজের প্রেক্ষাগৃহে বসে টিএমসিপি-র এক ছাত্রের মদ্যপান ও এক অধ্যক্ষকে শিক্ষক দিবসের দিনে নিগ্রহ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল। তা নিয়ে সিপি গত ৯ সেপ্টেম্বর অধ্যক্ষের ঘরের সামনে অবস্থানেও বসে। এর পরেই ১২ সেপ্টেম্বর টিএমসিপি-র দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ বাধে। তখনও বহিরাগতদের ঢোকার অভিযোগ ওঠে। গত ১১ নভেম্বর সিপি বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ নিয়ে সরব হলে ১৭ নভেম্বর থেকে পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক করে বিজ্ঞপ্তি জারি করে কলেজে কর্তৃপক্ষ। এরপরেও বহিরাগতদের অনুপ্রবেশে লাগাম টানা যায়নি, তার প্রমাণ এ দিনের ঘটনা।
কী হয়েছিল এ দিন? কলেজের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, টিএমসিপি-র শহর সভাপতি রাজা সরকার-সহ একটি গোষ্ঠীর বহিরাগতেরা এ দিন কলেজে ঢোকে বলে অভিযোগ। তখন তারা টিএমসিপি-র অন্য গোষ্ঠীর নেতা হায়দার আলির সঙ্গে বচসায় জড়ায় বলে অভিযোগ। বচসা গড়ায় মারামারিতে। ছুটে আসে সিপির সদস্যেরা। মারামারিতে জড়ায় তাঁরাও। এর পরেই টাউন পুলিশের আইসি দীপক সরকারের নেতৃত্বে পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামলায়। পরে কলেজের মহিলা কমনরুমের নেত্রী টিএমসিপি শহর সভাপতি অনুগামী জয়ন্তী দাস থানায় নিজেদের সংগঠনের হায়দার আলি, সিপির অমিত পাণ্ডের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। জয়ন্তী বলেন, “আমাকে ওঁরা কটূক্তি করেছিল। রাজা সরকার তার প্রতিবাদ করলে হায়দার তাঁকে মারধর করে।”
শহর সভাপতি বলেন, “হায়দার দল থেকে বহিষ্কৃত। হায়দার সিপির সঙ্গে একজোট হয়ে ছাত্রীদের কু-মন্তব্য করছিল। প্রতিবাদ করতেই হামলা করেছে হায়দার।” আপনি কেন কলেজে ঢুকেছিলেন? রাজার জবাব, “অনুমতি নিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করতে যাই।” যদিও এই দাবি অস্বীকার করেছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। আর হায়দার আলি বলছেন, রাজা সরকারকে মেরেছে সিপি। তিনি ছাড়াতে গিয়েছিলেন মাত্র। তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে, অভিযোগ তাঁর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy