Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

কৃতী পড়ুয়াদের সংবর্ধনা দিতে ঝাড়গ্রামে শুভেন্দু

লোকসভা ভোটের প্রচারে নিজের নির্বাচনী এলাকাতেই ব্যস্ত ছিলেন। জঙ্গলমহলে আসা হয়নি। পুনরায় জিতে সাংসদ হওয়ার পরই অবশ্য জঙ্গলমহলের প্রাণকেন্দ্র ঝাড়গ্রামে এলেন শুভেন্দু অধিকারী। সংসদের প্রথম অধিবেশন চলাকালীন সময় বের করে অরণ্যশহরে মা রেখেই তিনি মনে করিয়ে দিলেন, তাঁর কাছে জঙ্গলমহলের গুরুত্ব এখনও অটুট।

কৃতীদের সংবর্ধনা দিচ্ছেন তমলুকের তৃণমূল সাংসদ।

কৃতীদের সংবর্ধনা দিচ্ছেন তমলুকের তৃণমূল সাংসদ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৪ ০০:৫১
Share: Save:

লোকসভা ভোটের প্রচারে নিজের নির্বাচনী এলাকাতেই ব্যস্ত ছিলেন। জঙ্গলমহলে আসা হয়নি। পুনরায় জিতে সাংসদ হওয়ার পরই অবশ্য জঙ্গলমহলের প্রাণকেন্দ্র ঝাড়গ্রামে এলেন শুভেন্দু অধিকারী। সংসদের প্রথম অধিবেশন চলাকালীন সময় বের করে অরণ্যশহরে মা রেখেই তিনি মনে করিয়ে দিলেন, তাঁর কাছে জঙ্গলমহলের গুরুত্ব এখনও অটুট।

গত বছর নভেম্বরে ঝাড়গ্রাম পুরভোটের প্রচারে এসেছিলেন শুভেন্দু। টানা সাত মাস পরে ফের তিনি শহরে এলেন। তবে কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, রবিবার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে কৃতী ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঝাড়গ্রামে এসেছিলেন শুভেন্দু। ছিলেন ঘন্টাখানেকের জন্য। অনুষ্ঠান শেষে শুভেন্দু জানান, রবিবার সন্ধ্যায় দিল্লি রওনা হবেন।

সংসদের অধিবেশন চলাকালীনই জঙ্গলমহলে ছুটে আসা কেন? সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের মুখে শুভেন্দুর জবাব, “জঙ্গলমহল আমার ভদ্রাসন। তা ছাড়া শনি ও রবিবার আমি পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে থাকি।” বস্তুতপক্ষে, ‘নন্দীগ্রামের নায়ক’ শুভেন্দুকে তাঁর অনুগামীরা ‘জঙ্গলমহলের নায়ক’ও মনে করেন। শুভেন্দুও এ দিন অনুষ্ঠান মঞ্চে বক্তৃতা শেষে বলেন, “জঙ্গলমহলবাসীর সঙ্গে রাজনীতি, দলমত ও ধর্মমতের বাইরে আমার যে হার্দিক সম্পর্ক তৈরি হয়েছে, তা আমি অটুট বন্ধনের মতো রক্ষা করবো।”

শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে আবেগে খামতি নেই পূর্ব মেদিনীপুরে। সুতাহাটা ব্লকের বিভিন্ন এলাকায়
এমনই ব্যানার ঝুলিয়েছেন শুভেন্দু অনুগামীরা। ছবিটি সুতাহাটা বাজারের। শুভেন্দু অনুগামীদের

ওই কর্মসূচি হবে ৬ জুলাই। লোকসভা ভোটে সাফল্যের পর বিভিন্ন এলাকায় ধন্যবাদজ্ঞাপন

সভার জন্যই সংবর্ধনা কর্মসূচি পরে হবে বলে উদ্যোক্তারা জানান। এ দিকে, রবিবার জেলায়

শুভেন্দু বিরোধী শিবিরের নেতারাও বৈঠক করে সাংসদদের সংবর্ধনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র জানিয়েছেন, দুই মেদিনীপুরের পাঁচ তৃণমূল সাংসদকেই সংবর্ধনা

দেওয়া হবে। তবে তার দিনক্ষণ স্থির হয়নি।

এ দিন দুপুরে ঝাড়গ্রাম শহরের কুমুদকুমারী ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণে কৃতী পড়ুয়াদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের মূল আয়োজক ছিলেন ঝাড়গ্রামের বিধায়ক তথা পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নমন্ত্রী সুকুমার হাঁসদা। সহযোগিতায় ছিল, ওয়েস্টবেঙ্গল তৃণমূল সেকেন্ডারি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের ঝাড়গ্রাম ব্লক শাখা। ঝাড়গ্রাম বিধানসভা এলাকার ৩৭টি স্কুলের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে কৃতী ১৪৪ জন ছাত্রছাত্রীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সুকুমারবাবু বলেন, “জঙ্গলমহলে মেধার অভাব নেই। উপযুক্ত সাহায্যের অভাবে এখানকার ছেলেমেয়েরা আত্মপ্রকাশের সুযোগ পাচ্ছে না। তাদের উত্‌সাহ দিতে ও পাশে দাঁড়াতেই এই উদ্যোগ।”

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শুভেন্দু তাঁর বক্তৃতায় আগাগোড়া শিক্ষা প্রসঙ্গেই আলোচনা করেন। শুভেন্দু জানান, এলাকার সাংসদ না হওয়ায় সাংসদ তহবিলের টাকা এখানে খরচ করার ক্ষেত্রে আইনগত বাধা রয়েছে। তবে তিনি শিল্প এলাকার সাংসদ। সেখানে ‘কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি’ প্রকল্পে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলি কল্যাণমূলক কাজে অর্থ ব্যয় করে। এভাবে পশ্চিম মেদিনীপুরের বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে তিনি অর্থ সাহায্য করতে পেরেছেন বলে জানান শুভেন্দু। তিনি আরও বলেন, “আমি কয়েকটি সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান। তারাও একই ভাবে অর্থ সাহায্য করে থাকে।” এ দিন কাঁথির একটি সমবায় ব্যাঙ্কের তরফে পাঁচ লক্ষ টাকার ড্রাফ্ট কুমুদকুমারী ইস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক অনুপ দে ও স্কুল সম্পাদক দুর্গেশ মল্লদেবের হাতে তুলেও দেন শুভেন্দু। জানান, মাওবাদী সন্ত্রাসের অবসানে জঙ্গলমহলে এখন শিক্ষার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে লালগড়ে কলেজ, রামগড়ে পলিটেকনিকের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ার কথাও বলেন তিনি।

শুভেন্দুর কথায়, “আমি সব সময় ‘আমরা’র তত্ত্বে বিশ্বাস করি। এখানে আমাদের নতুন সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। আমরা সবাই মিলে একযোগে উন্নয়নের সাধ্যমতো চেষ্টা করব।” এ দিন অনুষ্ঠানে ছিলেন জেলা পরিষদের সেচ ও কৃষি কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষ, জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান স্বপন মুর্মু, শিক্ষাব্রতী দাখিনচন্দ্র মুর্মু প্রমুখ।

—নিজস্ব চিত্র।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE