নারায়ণগড়ের সভায় সূর্যকান্ত মিশ্র। নিজস্ব চিত্র।
তরুণ প্রজন্মের ভোটারদের সমর্থন কমছে। কৃষক-শ্রমিকের সমর্থনেও ভাটার টান। বাড়ছে কেবল জনবিচ্ছিন্নতা। এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে রাজ্যে এ বার প্রত্যক্ষ আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিলেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। তাঁর কথায়, “এ বার রাজ্যে প্রত্যক্ষ আন্দোলন হবে। এটা সেই আন্দোলন যা এই রাজ্যের মানুষ গত ৩ বছর ৩ মাসে দেখেননি!” আগামী ৩১ অগস্ট রাজ্যের সর্বত্র শহিদ দিবস পালন করা হবে। বিরোধী দলনেতার কথায়, “ওই দিন সব গ্রামে লাল-ঝান্ডা উড়বে। মিছিল হবে। গ্রামের মিছিল ব্লক সদরে আসবে। সেখানে সভা হবে।”
সিপিএমের কৃষক সংগঠন জেলা কৃষকসভার উদ্যোগে সোমবার হরেকৃষ্ণ কোঙারের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে মেদিনীপুর শহরে এক সভা হয়। বিদ্যাসাগর হলে আয়োজিত এই সভায় ছিলেন সূর্যকান্তবাবু। সভায় হরেকৃষ্ণ কোঙারের জীবনের নানা দিক উল্লেখ করেন বিরোধী দলনেতা। পাশাপাশি কেন্দ্র-রাজ্য সরকারের নানা নীতির সমালোচনাও করেন। তিনি বলেন, “এখন যা পরিস্থিতি তাতে বড়লোক আরও বড়লোক হবে। গরিব আরও গরিব হবে। কৃষক-শ্রমিকের সঙ্কট আরও বাড়বে।”
কেন্দ্রের এনডিএ সরকারকে ইউপিএ-৩ সরকার বলেও কটাক্ষ করেন তিনি। পশ্চিম বাংলাকেই আগামী দিনে পথ দেখাতে হবে বলে সভায় জানিয়ে দেন তিনি। বলেন, “লোকসভায় বড় বিপর্যয় হয়েছে ঠিকই তবে অনেকে আমাদের সমর্থন করেছে।” রাজ্যে ভূমিহীন মানুষের সংখ্যা বাড়ছে বলেও দাবি করেন বিরোধী দলনেতা।
এই পরিস্থিতিতে গণসংগ্রামই একমাত্র পথ বলে মনে করেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর কথায়, “গণসংগ্রাম গড়ে তুলতে পারলেই এগিয়ে যাওয়া সম্ভব।” সভায় ছিলেন কৃষকসভার রাজ্য নেতা তরুণ রায়, জেলা সম্পাদক হরেকৃষ্ণ সামন্ত, জেলা সভাপতি ডহরেশ্বর সেন প্রমুখ। সভায় তরুণবাবু বলেন, “দীর্ঘ সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হতে হবে।”
এ দিন নিজের খাসতালুক নারায়ণগড়েও বৃহত্তর ‘প্রত্যক্ষ’ আন্দোলনের ডাক দেন সূর্যবাবু। এ দিন ব্লকের সবং ঘেঁষা প্রত্যন্ত চকমুকুন্দ গ্রামে ‘জনসংযোগ’ সভা করে সিপিএম। লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই একদা সিপিএমের ‘শক্ত ঘাঁটি’ নারায়ণগড়ে বিজেপির উত্থান হচ্ছে। ইতিমধ্যেই সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছেন বহু কর্মী-সমর্থক। তাই নিজের খাসতালুকে এ দিন কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের নীতি নিয়ে সরব হতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
ওই সভাতেও তৃণমূল ও কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির সমালোচনা করেন তিনি। সরব হন শিল্প থেকে কর্মসংস্থান, সারদাকাণ্ড নিয়েও। বিরোধী দলনেতার কটাক্ষ, “রাজ্যে হাজার হাজার কারখানা বন্ধ হচ্ছে আর মুখ্যমন্ত্রী সিঙ্গুর ছেড়ে সিঙ্গাপুরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অনেকে বলছেন তিনি সিঙ্গাপুর থেকে সিঙ্গাপুরি কলা নিয়ে ফিরেছেন।”
একগুচ্ছ কর্মসূচির ঘোষণা করে সূর্যবাবু জানান, ৩১ অগস্ট খাদ্য আন্দোলনের শহিদদের বেদিতে মাল্যদান দিয়ে কর্মসূচি শুরু হবে। ১ সেপ্টেম্বর সাম্রাজ্যবাদের আক্রমণের বিরুদ্ধে ও ২ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত সার্বিক প্রচার চলবে। ১১ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর বামফ্রন্ট ‘প্রত্যক্ষ’ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। লক্ষ্মীপুজোর পরে পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে কৃষসভার পদযাত্রা হবে বলেও এ দিন জানান সূর্যকান্তবাবু। সেই সময় পশ্চিমবঙ্গের ৩৮ হাজার গ্রামের মধ্যে ৩০ হাজার গ্রামে জাঠা যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy