Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

টয় ট্রেনের পথ নিয়ে ধন্দে জেলা

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইচ্ছা, দার্জিলিং-এর মতো দিঘাতেও চালু হোক টয় ট্রেন। সেই ইচ্ছে পূরণে ইতিমধ্যেই তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছেন রাজ্যের পর্যটন দফতর। সম্প্রতি নবান্ন থেকে ঘোষণাও হয়েছে, খুব তাড়াতাড়ি দিঘা থেকে শঙ্করপুর পর্যন্ত টয় ট্রেন পরিষেবা চালু হবে।

শান্তনু বেরা
কাঁথি শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৭ ০১:৩২
Share: Save:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইচ্ছা, দার্জিলিং-এর মতো দিঘাতেও চালু হোক টয় ট্রেন। সেই ইচ্ছে পূরণে ইতিমধ্যেই তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছেন রাজ্যের পর্যটন দফতর। সম্প্রতি নবান্ন থেকে ঘোষণাও হয়েছে, খুব তাড়াতাড়ি দিঘা থেকে শঙ্করপুর পর্যন্ত টয় ট্রেন পরিষেবা চালু হবে। এমনকী আজ, সোমবার এক বিশেষ পর্যবেক্ষক দলের ওই প্রকল্পের এলাকা ঘুরে দেখারও কথা।

কিন্তু পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের দাবি, রবিবার দুপুর পর্যন্ত পরিদর্শন সংক্রান্ত কোনও নির্দেশ এসে পৌঁছায়নি। শুধু তাই নয়, প্রশাসনের দাবি, প্রস্তাবিত এলাকা বা টয় ট্রেন প্রকল্প নিয়ে তাদের কাছে কোনও তথ্যও নেই। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মি কমল বলে, ‘‘শুনেছি নবান্ন থেকে দিঘায় টয় ট্রেন প্রকল্পের কথা ঘোষণা হয়েছে। তবে প্রস্তাবিত এলাকা পরিদর্শনে কারা, কখন আসবেন, সে বিষয়ে রবিবার দুপুর পর্যন্ত কোনও নির্দেশ আসেনি।’’

প্রকল্পের বিষয়ে অন্ধকারে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদও। পর্যদের কার্যনির্বাহী আধিকারিক সুজন দত্ত বলেন, ‘‘ রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এই প্রকল্প পরিদর্শনে রাজ্যের পর্যটন দফতরের তরফে কেউ আসবেন কি না, জানা নেই।’’

শনিবার দুপুরে নবান্ন থেকে ঘোষণা করা হয়, দিঘা থেকে শঙ্করপুর পর্যন্ত ট্রয়ট্রেন চলবে। সমুদ্রের সৈকত লাগোয়া ‘দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ’ এর জমিতেই ট্রয়ট্রেনের লাইন পাতা হবে বলেও জানানো হয়। ফাঁক থেকে গিয়েছে এই প্রকল্পের পরিকল্পনাতেও। কারণ, গত ১৭ ফ্রেব্রুয়ারি পর্ষদের শেষ পরিচালন কমিটির বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ট্রয় ট্রেন চলার কথা নিউ দিঘার স্থায়ী ‘পিকনিক স্পট’ থেকে উদয়পুর পর্যন্ত। সমুদ্র সৈকত বরাবর এই দু’কিলোমিটার পথে ট্রয়ট্রেন চালানোর জন্য ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি বেসরকারি লগ্নিসংস্থার সঙ্গে পর্ষদের আলোচনা চলছে। প্রাথমিকভাবে পর্ষদের অনুমান দুই থেকে আড়াই কোটি টাকা এই প্রকল্পের জন্য খরচ হতে পারে। যদি দিঘা থেকে শঙ্করপুর পর্যন্ত ট্রয় ট্রেন চালানো হয়, সেক্ষেত্রে এই বাজেট কয়েক গুণ বাড়বে বলে অনুমান পর্যদের। ফলে আদৌ পরিকল্পনা বদলেছে কি না সেই নিয়েও ধন্দটা থেকেই যাচ্ছে।

তবে টয় ট্রেন যে চলবেই, সে বিষয়ে আশাবাদী দিঘার বাসিন্দারা। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, ‘‘যত পথ হবে হোক। টয় ট্রেন চালু হলেই হল। আর এটা হলে দিঘায় পর্যটক আরও বাড়বে। আমাদের ব্যবসার জন্য সেটা ভাল তো বটেই।’’ দিঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন-এর সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমতায় আসার পর থেকে অনেক নতুন কিছু হয়েছে। এ বার টয় ট্রেন হলে আরও ভাল হবে।’’ নিউ দিঘার রেস্তোঁরা মালিক সুজিত প্রধান, ওল্ড দিঘার ঝিনুক ব্যবসায়ী দিলীপ পতি, বেসরকারি ট্র্যাভেল এজেন্ট বাপি প্রামাণকদের কথায়, ‘‘ট্রয় ট্রেন চালু হলে দিঘা আরও সুন্দর হয়ে যাবে। বিশেষত শিশুদের কাছে আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে এই শহর।’’

মালদা থেকে সপরিবারে দিঘায় বেড়াতে এসেছেন মানিক গঙ্গোপাধ্যায়। উঠেছেন ওল্ড দিঘার একটি হোটেলে। তার কথায়, “টয় ট্রেন চেপে যেমন পাহাড়ের পাকদণ্ডি ঘুরতে ভাল লাগে, সেরকই সমুদ্রের ঢেউ দেখতেও মন্দ লাগবে না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Toy Train District Administration Route
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE