সশস্ত্র: নিজের ওয়ার্ডের এক মন্দিরে রামনবমীর পুজোয় তরোয়াল হাতে তৃণমূলের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার (মাঝে)। নিজস্ব চিত্র
রামনবমীর শোভাযাত্রায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের হাতে অস্ত্র থাকায় ইতিমধ্যে মামলা হয়ে গিয়েছে। সেই মামলা করেছেন খড়্গপুরের এক তৃণমূল কর্মী। অথচ রামনবমীর দিনই নিজের ওয়ার্ডের এক মন্দিরে তরোয়াল হাতে বসে থাকতে দেখা গিয়েছে খড়্গপুরের পুরপ্রধান তৃণমূলের প্রদীপ সরকারকে। প্রদীপ তৃণমূলের খড়্গপুর শহর সভাপতিও। তাহলে কেন তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হবে না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। সেই সঙ্গে দলের রাজ্য সভাপতির বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছে গেরুয়া শিবির।
কাঁথিতে প্রচারে ব্যস্ত বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপবাবু শুক্রবার বলেন, “ধর্মীয় অস্ত্র প্রদর্শন করে যদি আমি প্রশাসনের চোখে অপরাধী হই, তবে পুরপ্রধানও অপরাধী। তাই ওঁর বিরুদ্ধেও একই মামলা হওয়া উচিত।” তবে অস্ত্র আইনে দিলীপবাবুর বিরুদ্ধে খড়্গপুর টাউন থানায় যে মামলা হয়েছে এখনও তার প্রেক্ষিতে সে ভাবে পুলিশি সক্রিয়তা দেখা যায়নি। পুলিশ সূত্রে খবর, তদন্ত করে পদক্ষেপ করা হবে।
এ দিন খড়্গপুরের সাউথ ডেভেলপমেন্টে বিধায়ক কার্যালয়ে বৈঠকে বসেন বিজেপির নেতারা। দলীয় সূত্রে খবর, শহরের বিধায়ক দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে মামলা রুজু নিয়েই আলোচনা হয়। মুখ্য বক্তা ছিলেন রাষ্ট্রীয় সয়ংসেবক সঙ্ঘের জেলার প্রাক্তন সম্পাদক তথা বিজেপির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সহ-সভাপতি সমিত দাস। রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে তিনি বলেন, “প্রশাসন ও তৃণমূল একজোট হয়ে যে মামলা করেছে তা হিন্দুসমাজের অপমান। তৃণমূলের পুরপ্রধানের হাতেও তো অস্ত্র ছিল। যদি আমাদের রাজ্য সভাপতি অপরাধী হন, তাহলে প্রদীপ সরকারের বিরুদ্ধেও মামলা করে গ্রেফতারের দাবি জানাব।” বিজেপির খড়্গপুর উত্তর মণ্ডল সভাপতি অভিষেক অগ্রবালেরও বক্তব্য, “পুরপ্রধানের হাতে অস্ত্র দেখেছি। তাই আমাদের রাজ্য সভাপতির বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা নিলে পুরপ্রধানকেও গ্রেফতারের দাবি জানাব।”
বুধবার রামনবমী উপলক্ষে প্রতিবছরের মতোই খড়্গপুর শহরে একাধিক আখড়া (শোভাযাত্রা) বেরিয়েছিল। সেই শোভাযাত্রায় পৃথক ভাবে যোগ দেন তৃণমূলের পুরপ্রধান ও বিজেপির বিধায়ক। তবে ইন্দার গোয়ালাপাড়ায় দু’টি শোভাযাত্রা পাশাপাশি এসে গেলে মুখোমুখি হন দিলীপবাবু ও প্রদীপ। তখন দিলীপবাবুর হাতে ছিল তরোয়াল। মোবাইল ক্যামেরা-বন্দি সেই মুহূর্তের ছবি ঘিরে ইতিমধ্যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এ বার প্রকাশ্যে এসেছে নিজের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের মন্দিরে তরোয়াল হাতে তৃণমূল পুরপ্রধানের ছবি। যদিও প্রদীপবাবুর ব্যাখ্যা, “শোভাযাত্রায় অস্ত্র প্রদর্শন করা যাবে না বলে প্রশাসন জানিয়েছিল। শোভাযাত্রায় আমার হাতে অস্ত্র ছিল না। রামনবমীর পুজোয় অস্ত্র সমর্পণ করতে হয়। তাই পুজোর আগে মন্দিরে অস্ত্র হাতে নিয়েছিলাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy