—ফাইল চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটের পর এক দফা নেতৃত্ব পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু তাতেও কি জঙ্গলমহলে সংগঠনের ‘অসুখ’ সারানো যাচ্ছে না! দলীয় বৈঠকে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে এই জল্পনা শুরু হয়েছে শাসক দলের অন্দরে।
গত বুধবার ঝাড়গ্রামে তৃণমূলের জেলা কোর কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পার্থ। তৃণমূল সূত্রের খবর, সভায় জেলা ও ব্লক নেতাদের ধমক দিয়ে পার্থ জানতে চান, জেলা জুড়ে এত উন্নয়ন হচ্ছে, তা সত্ত্বেও বিজেপি বাড়ছে কী করে! দলীয় কর্মসূচিতে কেবল ছাত্র-যুব সংগঠনের এক দু’জনের উদ্যোগে লোক আনা হচ্ছে। সূত্রের খবর, বৈঠকে পার্থ জানিয়ে দেন, এমন চললে এ বার ছাত্র-যুব সংগঠনকে দিয়ে জেলায় সভা ডাকতে হবে।
২৩ জানুয়ারি ঝাড়গ্রামের গড় শালবনির মাঠে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির সভায় ভালই লোক এনেছিল বিজেপি। ওই মাঠেই গত ২ ফেব্রুয়ারি তৃণমূলের পাল্টা সভা করেন পার্থ। সভা ভরাতে বিশেষ করে নজর কাড়েন টিএমসিপির পদ বিহীন নেতা আর্য ঘোষ। তবে শুধু এই একটি ক্ষেত্রে নয়, বেশ কিছুদিন ধরেই পার্থের নজর রয়েছে আর্যের উপর। গত ২২ ফেব্রুয়ারি তারকেশ্বর থেকে ঝাড়গ্রাম গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই দিন ঝাড়গ্রামে ছিলেন পার্থ। সরকারি ওই অনুষ্ঠানে লোক নিয়ে এসেছিলেন আর্য। এমনকি, গত বুধবার ২৭ ফেব্রুয়ারি ঝাড়গ্রাম শহরে তিনটি মূর্তির উন্মোচন করেন পার্থ। । এর মধ্যে সিদো-কানহো ও বিরসা মুণ্ডার মূর্তিস্থলে দু’টি জায়গায় লোক জড়ো করেছিলেন আর্য।
একসময় বাম ছাত্র-যুব রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে থাকা আর্য রাজ্য পালাবদলের সঙ্গে দলবদল করেননি। বরং একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে চাকরি করতে শুরু করেন। ২০১৫ সালে তৃণমূলে আসেন বর্তমান পশ্চিম মেদিনীপুরে জেলা যুব সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরির হাত ধরে। পরে ঝাড়গ্রামের বিধায়ক সুকুমার হাঁসদার ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন তিনি। ২০১৭ সালের মে মাসে টিএমসিপি-র ঝাড়গ্রাম জেলার কার্যকরী সভাপতির পদ পান। পঞ্চায়েত ভোটে খারাপ ফলের জেরে টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি তথা গোপীবল্লভপুরের তৃণমূল নেতা সত্যরঞ্জন বারিককে পদ থেকে সরানো হয়। টিএমসিপি-র জেলা কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়। ফলে পদ হারান আর্যও। তবে গত ডিসেম্বরে সত্যরঞ্জনকে ফের পুরনো পদে ফেরানো হয়। আর্য পদ ফিরে পাননি।
তৃণমূল সূত্রের খবর, যুবর শীর্ষনেতৃত্বের আস্থা রয়েছে রমাপ্রসাদের উপর। আবার ঝাড়গ্রামের বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির চেয়ারম্যান সুকুমার মহাসচিবের ঘনিষ্ঠ হিসাবেই পরিচিত। সুকুমার বলছেন, ‘‘মহাসচিব আর্যের মত তরুণদের দলের কাজে লাগাতে বলেছেন।’’ আর আর্যের কথায়, ‘‘পদের কোনও মোহ নেই। দল যদি দায়িত্ব দেয় তা পালন করব। উন্নয়নমূলক কাজকে মানুষের মধ্যে নিয়ে যেতে হলে সকলকে কাজ করতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy