অভিষেকের সভার ঠিক আগে আগেই বিস্ফোরণের ঘটনায় এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। নিজস্ব চিত্র।
কাঁথিতে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার ঠিক আগের রাতেই বিস্ফোরণে উড়ল এক তৃণমূল নেতার বাড়ি। স্থানীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ কাঁথির ভগবানপুর-২ ব্লকের ভূপতিনগর থানার অর্জুননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের নাড়য়াবিলা গ্রামে এই বিস্ফোরণটি ঘটে। বিস্ফোরণের ফলে তৃণমূল নেতা-সহ তিন জনের মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। গুরুতর জখম হয়েছেন আরও দু’জন। ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে মোতায়েন রয়েছে ভূপতিনগর থানার পুলিশ।
সূত্রের খবর, নিহত তৃণমূল নেতার নাম রাজকুমার মান্না। এলাকার তৃণমূলের বুথ সভাপতি হিসাবে রাজকুমার পরিচিত। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই ঘটনায় নিহত বাকি দু’জন দেবকুমার মান্না ও বিশ্বজিৎ গায়েন। রাজকুমার এবং দেবকুমার সম্পর্কে দুই ভাই। আহতদের উদ্ধার করে পশ্চিম মেদিনীপুরে একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
প্রসঙ্গত, শনিবার কাঁথিতে সভা করতে যাচ্ছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও সাংসদ অভিষেক। আর তা নিয়ে এমনিতেই রাজনৈতিক তরজা চলছে। অভিষেক যেখানে সভা করছেন, সেখান থেকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কাঁথির বাড়ি খুব কাছে। তাই সভার আগে পুরো এলাকা পুলিশি নিরাপত্তার চাদরে ঘিরে ফেলা হয়েছে। ঘিরে ফেলা হয়েছে শুভেন্দুর বাড়ি শান্তিকুঞ্জও। অভিষেকের সভা নিয়ে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি তুঙ্গে। তার ঠিক আগে ঘটল এই বিস্ফোরণের ঘটনা। যাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
বিজেপির অভিযোগ, রাজকুমার নিজের বাড়িতে বোম বাঁধার কাজ করছিলেন। তখনই অসাবধানতার কারণে বোমা ফেটে এই বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণের মাত্রা এতটাই বেশি ছিল যে, বাড়ি পর্যন্ত উড়ে যায়। নিহত এবং আহতরা তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী বলেও স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ।
ভগবানপুরে বিধায়ক তথা বিজেপি নেতা রবীন্দ্রনাথ মাইতি বলেন, ‘‘রাতের অন্ধকারে বোমা বাঁধতে গিয়েই এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের উপস্থিতিতে মৃতদেহ গায়েব করার চক্রান্ত চলছে। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি না করে পশ্চিম মেদিনীপুরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। মৃতের সংখ্যা আরও বেশি বলে মনে করছি। বিষয়টি পুলিশ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে।’’ ভগবানপুরের বিস্ফোরণের ঘটনায় তিনি এনআইএ তদন্তের দাবি জানাবেন বলেও জানিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ।
কাঁথি সাংগঠনিক জেলার বিজেপির সাধারণ সম্পাদক তাপস কুমার দোলুই বলেন, ‘‘তৃণমূল নেতার বাড়িতে বোমা বাঁধতে গিয়ে এই বিপত্তি ঘটেছে। তৃণমূল নেতা-সহ দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি আমরা আরও খোঁজখবর নিয়ে দেখছি।’’
অন্য দিকে, ভগবানপুরের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক অর্ধেন্দু মাইতি বলেন, ‘‘আমরা এখনও এই বিষয়ে কিছু জানি না। খোঁজ খবর নিচ্ছি। কিছু জানতে পারলেই জানাবো।’’
শনিবার সকালে এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত ভূপতিনগর থানার পুলিশ এবং জেলা পুলিশের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, বিধানসভা নির্বাচনের সময় থেকেই উত্তপ্ত ভূপতিনগরের বিস্তীর্ণ এলাকা। রাতের অন্ধকারে বোমাবাজি ও গুলির শব্দ প্রায় দিনই শোনা যায় বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। দু’সপ্তাহ আগেই তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মিহির ভৌমিককে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠেছিল বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy