Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
TMC

Midnapore: জুনের প্রাপ্তি না কি জোড়া বঙ্গ সম্মান!

মেদিনীপুরের ফেডারেশন হল। তৃণমূলের কার্যালয় নামেই পরিচিতি বেশি। মঙ্গলবার রাতে তার সামনেই আতসবাজি পোড়ানো হয়েছে। মিষ্টি বিতরণ হয়েছে।

সেই ফ্লেক্স।

সেই ফ্লেক্স। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২২ ০৬:০৯
Share: Save:

স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার। এই পরিস্থিতিতে পূর্ব মেদিনীপুরে ঘোষিত কর্মসূচি পালনে পথে নামতে কিছুটা বিব্রত তৃণমূল। পশ্চিম কিন্তু ছবিটা উল্টো।

মেদিনীপুরের ফেডারেশন হল। তৃণমূলের কার্যালয় নামেই পরিচিতি বেশি। মঙ্গলবার রাতে তার সামনেই আতসবাজি পোড়ানো হয়েছে। মিষ্টি বিতরণ হয়েছে। ‘বঙ্গভূষণ’ সম্মান পেয়েছেন অভিনেত্রী, মেদিনীপুরের বিধায়ক জুন মালিয়া। সেই সম্মান প্রাপ্তির জন্যই এমন উদযাপন।

উদ্‌যাপন ঘিরে দেখা দিয়েছে বিতর্কও। কারণ, যে ফ্লেক্স টাঙানো হয়েছিল, তাতে লেখা ছিল, ‘মাননীয়া জননেত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অসংখ্য ধন্যবাদ মেদিনীপুর বিধানসভার জনপ্রিয় বিধায়িকা জুন মালিয়া মহাশয়াকে বাংলার সর্বোচ্চ সম্মান বঙ্গবিভূষণ ও বঙ্গভূষণ সম্মান দেওয়ার জন্য। সৌজন্যে মেদিনীপুর পুরবাসীগণ।’ জুন তো এ বার বঙ্গবিভূষণ পাননি, পেয়েছেন বঙ্গভূষণ, তাহলে ফ্লেক্সে এমন লেখা কেন? ঢোঁক গিলে জুন অনুগামী বলে পরিচিত জেলা তৃণমূলের নেতা সুব্রত সরকারের সাফাই, ‘‘এটা ভুল হয়ে গিয়েছে। ছাপাখানার ভুল!’’ কাদের উদ্যোগে এই উদ্‌যাপন? পুরপ্রধান সৌমেন খান বলছেন, ‘‘বিধায়ক সম্মানিত হয়েছেন। এটা আমাদের কাছে গর্বেরই। কর্মীরা উচ্ছ্বসিত। সকলে এ ভাবে অনুভূতি ভাগ করে নিয়েছেন।’’ সুব্রত জুড়ছেন, ‘‘আমাদের সরকার ওঁকে যোগ্য মনে করেছে। সেই কারণেই এই সম্মান ওঁকে দিয়েছে। আমরা সবাই উচ্ছ্বসিত।’’

জেলার অন্য এলাকার মতো মেদিনীপুরেও তৃণমূলের কোন্দল রয়েছে। একদিকে রয়েছেন বিধায়ক জুন, পুরপ্রধান সৌমেনের অনুগামী বলে পরিচিতেরা। অন্যদিকে রয়েছেন তৃণমূলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা, দলের শহর সভাপতি বিশ্বনাথ পাণ্ডবের অনুগামী বলে পরিচিতেরা। দলের এক সূত্রে খবর, বিধায়ক অনুগামী বলে পরিচিত নেতাকর্মীরাই এমন উদযাপন কর্মসূচি আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেন। মঙ্গলবার সকালে ঠিক হয়, রাতে ফেডারেশন হলে অনুষ্ঠান হবে। সেই মতো দলের নেতাকর্মীরা যুক্ত রয়েছেন, এমন একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে জানানোও হয়, ‘সবাইকে ফেডারেশন হলে ৬টায় চেয়ারম্যান উপস্থিত থাকতে বলেছে’।

জেলা বিজেপির মুখপাত্র অরূপ দাসের খোঁচা, ‘‘একদিকে কোটি কোটি টাকা চুরি করে, শিক্ষিত বেকারদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করে, এদের মন্ত্রী গ্রেফতার হয়েছে। আর আরেকদিকে বিধায়ক বঙ্গভূষণ পেয়েছে, এই আনন্দে পার্টি অফিসে মিষ্টি খাইয়ে, বাজি ফাটিয়ে বিজয় উৎসব পালন হচ্ছে। নূন্যতম লজ্জাবোধটুকু নেই এদের। এতটাই বেহায়া এরা!’’ তাৎপর্যপূর্ণ হল, এমন কর্মসূচি থেকে ‘দূরত্ব’ রেখেছেন জেলা তৃণমূলের একাংশ নেতাও। জেলা তৃণমূলের সভাপতি সুজয় বলছেন, ‘‘লোকমুখে শুনলাম, ওখানে না কি কী একটা হয়েছে। কী হয়েছে, কারা করেছে, জানি না! কেউ হয়তো ব্যক্তিগত উদ্যোগে কিছু করে থাকতে পারেন। যে করেছেন, তাঁর হয়তো মনে হয়েছে, এই সময়ে এমন উৎসব করা যেতেই পারে, তাই করেছেন! এ নিয়ে কিছু বলার নেই আমার।’’ তৃণমূলের শহর সভাপতি বিশ্বনাথও বলছেন, ‘‘ওটা দলের কোনও কর্মসূচি নয়। দল এমন কিছু করতে বলেনি। কেউ হয়তো ব্যক্তিগত উদ্যোগে কিছু করেছেন।’’

এ সব শুনে আবার ফোঁস করছেন তৃণমূলের জেলা নেতা সুব্রত। তাঁর কথায়, ‘‘দলের নয় মানে? আমি জেলার সাধারণ সম্পাদক। আমি ছিলাম। পুরপ্রধান, উপপুরপ্রধান, বেশ কয়েকজন কাউন্সিলরও ছিলেন। কে কী বলছেন, জানি না। দলের কর্মীরাই এই অনুষ্ঠান করেছেন। উচ্ছ্বাস থেকেই এই আয়োজন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

TMC June Malia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy