Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

যাত্রী ছাউনি নেই, রোদে ঠায় দাঁড়িয়েই বাসের অপেক্ষা

রেলের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোর একটি। প্রতিদিন কয়েকশো বাস-লরি চলাচল করে এই রাস্তার উপর দিয়েই। অসংখ্য নিত্যযাত্রীও যাতায়াত করেন। অথচ এলাকায় না আছে যাত্রী ছাউনি। না আছে পানীয় জলের ব্যবস্থা। ছবিটা পশ্চিম মেদিনীপুরের চৌরঙ্গী এলাকার। যাত্রী ছাউনি-পানীয় জলের ব্যবস্থা না থাকার ফলে সমস্যায় পড়ছেন বহু মানুষ। প্রশাসন উদাসীন।

জাতীয় সড়কের উপর বাসের অপেক্ষা। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।

জাতীয় সড়কের উপর বাসের অপেক্ষা। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৫ ০০:২৯
Share: Save:

রেলের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোর একটি। প্রতিদিন কয়েকশো বাস-লরি চলাচল করে এই রাস্তার উপর দিয়েই। অসংখ্য নিত্যযাত্রীও যাতায়াত করেন। অথচ এলাকায় না আছে যাত্রী ছাউনি। না আছে পানীয় জলের ব্যবস্থা। ছবিটা পশ্চিম মেদিনীপুরের চৌরঙ্গী এলাকার। যাত্রী ছাউনি-পানীয় জলের ব্যবস্থা না থাকার ফলে সমস্যায় পড়ছেন বহু মানুষ। প্রশাসন উদাসীন।

কেন এই অবস্থা? পরিস্থিতি দেখে অবশ্য সমস্যার কথা মানছেন কর্তৃপক্ষ। মেদিনীপুর-খড়্গপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এমকেডিএ)-এর চেয়ারম্যান তথা মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন মাইতির দাবি, ইতিমধ্যে এ নিয়ে তাঁরা পরিকল্পনা করেছেন। কেমন? মৃগেনবাবু বলেন, ‘‘জেলার গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলির মধ্যে চৌরঙ্গী একটি। ওই এলাকায় যাত্রীছাউনি থাকা উচিত। একইসঙ্গে পানীয় জলের ব্যবস্থাও থাকা দরকার। কারণ, অসংখ্য নিত্যযাত্রী ওই এলাকার উপর দিয়ে যাতায়াত করেন। ইতিমধ্যে এই সংক্রান্ত পরিকল্পনাও তৈরি হয়েছে। এ বার কাজ শুরু হবে।’’

এমকেডিএ সূত্রে খবর, সবমিলিয়ে ৪টি যাত্রীছাউনি তৈরি হবে এই এলাকায়। খরচ হবে ১২ লক্ষ টাকা। একটি গভীর নলকূপও তৈরি হবে। খরচ হবে সাড়ে ৬ লক্ষ টাকা। চৌরঙ্গীর উপর দিয়েই গিয়েছে ৬ ও ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক। ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের একদিকে কলকাতা, অন্য দিকে মুম্বই। ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের একদিকে ওড়িশা অন্য দিকে রানিগঞ্জ। চৌরঙ্গীর এক দিকে মেদিনীপুর, অন্য দিকে খড়্গপুর শহর। গুরুত্বপূর্ণ এই এলাকায় যাত্রীছাউনি যে একটিও নেই, তা নয়। রাস্তার এক পাশে একটি যাত্রীছাউনি রয়েছে। অবশ্য সেটি বহু পুরনো। সেই ছাউনির একাংশ ভেঙেও গিয়েছে। রোদ থেকে বাঁচলেও বৃষ্টির হাত থেকেও রেহাই মেলার উপায় নেই। বসার উপযুক্ত জায়গাও নেই। নিত্যানন্দ সাহা, অনিমা দাস প্রমুখ নিত্যযাত্রীদের কথায়, ‘‘পুরনো এই ছাউনিতে দাঁড়াতে ভয় হয়। যে কোনও সময় মাথায় চাঙর ভেঙে পড়তে পারে। তাছাড়া ওই ছাউনির সামনে তো বাসও দাঁড়ায় না।’’

অনিমাদেবীর কথায়, ‘‘চৌরঙ্গীর মতো এলাকায় একাধিক যাত্রীছাউনি থাকা উচিত। কিন্তু প্রশাসন উদ্যোগী হয়নি। এ বিষয়ে আগেই ভাবনাচিন্তা করা উচিত ছিল।’’ মেদিনীপুর-খড়্গপুর ও তার আশপাশের এলাকার উন্নয়নের জন্যই বছর আটেক আগে গড়ে ওঠে এমকেডিএ। রাজ্যে পালাবদলের পর চৌরঙ্গী এলাকা সাজাতে উদ্যোগী হয় এমকেডিএ কর্তৃপক্ষ। সেই মতো কাজও শুরু হয়। অবশ্য তখন যাত্রীছাউনি বা পানীয় জলের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা হয়নি। দুই জাতীয় সড়কের সংযোগস্থলে গোলাকার জায়গা রয়েছে। এই জায়গায় বাগান তৈরির পরিকল্পনাও করা হয়। ইতিমধ্যে কাজ এগিয়েছে। সুন্দর ভাবে সাজাতে এই জায়গায় বেশ কিছু গাছও লাগানো হয়েছে। বাগানের চারপাশে আলো লাগানোরও পরিকল্পনা হয়েছে। সবমিলিয়ে ৩০টি ল্যাম্প লাগানো হবে। এ ক্ষেত্রে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করা হবে।

মৃগেনবাবু বলেন, ‘‘কয়লা নির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদিত বিদ্যুতের দাম বেশি। তাছাড়া দূষণও বেশি হয়। তাই সৌর বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। এ জেলাতেও সৌর বিদ্যুতের প্রসার বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। চৌরঙ্গীতেও সৌর বিদ্যুতের সাহায্যে আলো জ্বালানোর ব্যবস্থা করা হবে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘বায়ু দূষণ কমাতে ওই এলাকায় গাছও লাগানো হয়েছে। আরও গাছ লাগানো হবে।’’ এলাকায় পানীয় জলের ব্যবস্থা না থাকায় ক্ষুব্ধ য়াত্রীরা। গ্রীষ্মকালে চড়া রোদের সময় বাস থেকে নেমে অনেকেই জলের খোঁজ করেন। এমকেডিএ সূত্রে খবর, এই এলাকায় গভীর নলকূপ তৈরির জন্য ইতিমধ্যে পিএইচই-কে চিঠি দেওয়া হয়েছে। পিএইচই সাড়া না দিলে তখন পর্ষদের তহবিল থেকে অর্থ বরাদ্দ করা হবে। এমকেডিএ-র চেয়ারম্যান মৃগেনবাবুর আশ্বাস, ‘‘চৌরঙ্গী এলাকার সার্বিক উন্নয়নের পরিকল্পনা করা হয়েছে। ধীরে ধীরে সবই বাস্তবায়িত করা হবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE