ছবি: সংগৃহীত।
সকাল পৌনে ৯টা। সবেমাত্র ঘুম ভেঙেছে আরফানের খানের। রমজান মাস। তাই ধর্মগ্রন্থ পাঠের তোড়জোড় চলছে। এমন সময় মোবাইল বেজে উঠল। ফোনে জানতে পারলেন, ক্যানসারে আক্রান্ত এক প্রবীণের রক্তের প্রয়োজন। জানতে পেরেই রোজা ভেঙে হলদিয়া ছুটলেন নাট্যকর্মী আরফান খান।
১০ দিনের মাথায় রোজা ভেঙে সাত সকালে স্নান করে তৈরি হচ্ছিলেন আরফান। ততক্ষণে ওই প্রবীণের বাড়ি থেকে পাঠানো গাড়ি পৌঁছে গিয়েছে তাঁর বড়িতে। তাতে চেপে মহিষাল থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে হলদিয়ার দূর্গাচকে পৌঁছন আরফান। একটি নার্সিংহোমে ভর্তি ওই প্রবীণের জন্য রক্ত দেন তিনি।
সংশ্লিষ্ট নার্সিংহোম সূত্রের খবর, মহিষাদলের গোপালপুরের বাসিন্দা সত্তরোর্ধ্ব চৈতন্যচরণ সাহু মাসখানেক ধরে পাকস্থলীতে ক্যানসারে আক্রান্ত। সোমবার তাঁর রক্তের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে প্রয়োজনমতো রক্ত মেলেনি। চৈতন্যবাবুর ছেলে বিপ্লব বলেন, ‘‘বাবার শরীরের রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ ক্রমশ কমছিল। তাই রক্তের খুব প্রয়োজন ছিল। লকডাউনের মধ্যে দুবার দাতা খুঁজে পেয়েছি। কিন্তু তৃতীয়বারে আরফান রোজা ভেঙে এভাবে এগিয়ে আসবেন ভাবিনি।’’
আরফান মহিষাদলের কালিকাকুণ্ডু গ্রামের বাসিন্দা। নানা সময় নানা কাজের সঙ্গে যুক্ত হলেও, নাট্যকর্মী হিসাবেই পরিচিত হলদিয়া শিল্পাঞ্চল এলাকায়। স্ত্রী নাসিমা বেগম এবং একমাত্র ছেলেকে নিয়ে মহিষাদলের বাবুরহাটে ভাড়া বাড়িতে থাকেন বছর ছত্রিশের ওই ব্যক্তি। আরফানের স্ত্রী নাসিমা বলেন, ‘‘দুজনে মিলে নিয়মিত রোজা রাখি। সোমবার সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর উনি দ্রুত বাথরুমে ঢুকে স্নান করতে যান। জিজ্ঞাসা করাতে বলেন একজনের রক্তের দরকার। তাই খুব দ্রুত খাবারের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলাম।’’
রমজান মাস উপলক্ষে ধর্মগ্রন্থ পাঠ করেই সকাল কাটে আরফানের। এ দিন তার ব্যতিক্রম ঘটল। যদিও তাতে এতটুকুও আফশোস নেই তাঁর। আরফান বলেন, ‘‘এক ক্যানসার আক্রান্ত রোগীর রক্ত লাগতে পারে বলে রবিবার সন্ধ্যায় প্রাথমিকভাবে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে আমাকে জানানো হয়েছিল। রোজায় দিনভর উপবাস করার পর শরীর দুর্বল থাকে। তাই এদিন অল্প খেয়ে রক্ত দিতে গিয়েছিলাম। নিয়ম ভঙ্গে যদি কারও প্রাণ বাঁচে, তো সেটাই করা উচিত।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy