নোংরা পেরিয়েই যাতায়াত।
সাফাই কর্মীদের ধর্মঘটের প্রথম দিনেও মিলল না অচলাবস্থা কাটার ইঙ্গিত। শুক্রবার মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেছে মেদিনীপুর শহরে পুরসভার সাফাই কর্মীরা। সমাধানসূত্র খুঁজতে এ দিন পুরসভা ও সাফাই মজদুর ইউনিয়নের মধ্যে চিঠি চালাচালি হলেও জট কাটেনি। পুরসভার এক সূত্রে খবর, ইউনিয়নের তরফ থেকে যেমন পুর- কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে, তেমন পুর- কর্তৃপক্ষও ওই ইউনিয়নকে পাল্টা চিঠি দিয়েছে। ইউনিয়নের বক্তব্য, আলোচনায় বসে দাবিপূরণের সুনির্দিষ্ট আশ্বাস দিলে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হতে পারে। অন্য দিকে, পুর- কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, আগে ধর্মঘট প্রত্যাহার করতে হবে। তবেই আলোচনা হতে পারে। এ দিকে সাফাই কর্মীদের ধর্মঘটের প্রথম দিনেই রাস্তায় আবর্জনা জমতে শুরু করেছে। কর্মবিরতি চলতে থাকলে দুর্ভোগের আশঙ্কা করছেন শহরবাসী।
সাফাই কর্মীদের ধর্মঘট প্রসঙ্গে মেদিনীপুরের পুরপ্রধান প্রণব বসু বলেন, “অন্যায় ভাবে ধর্মঘট করা হচ্ছে। এ দিন পুরসভার সব বিভাগই খোলা ছিল। আমরা দেখছি, যাতে সব বিভাগের কর্মীরাই স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারেন।” এ দিন পুরসভার সব বিভাগেই কর্মচারীদের উপস্থিতির হার ছিল কম। ফলে পুরসভার স্বাভাবিক কাজকর্মও ব্যাহত হয়। যদিও পুর- কর্তৃপক্ষের দাবি, আবর্জনা সাফাইয়ে সমস্যা হলেও ধর্মঘটের প্রভাব পুরসভার অন্দরে পড়েনি। উপপুরপ্রধান জিতেন্দ্রনাথ দাস বলেন, “এ দিন পুরসভার ৭০ শতাংশ কর্মীই কাজ করেছেন।”
মজুরি বৃদ্ধি-সহ বেশ কয়েক দফা দাবিতে লাগাতার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে মেদিনীপুর পুরসভার সাফাই মজদুর ইউনিয়ন। শুক্রবার থেকেই শুরু হয়েছে ধর্মঘট। এ দিন সাফাই কর্মীরা কাজে যোগ দেননি। বদলে সকাল থেকে পুরসভার সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ করেন। কেন লাগাতার ধর্মঘটের ডাক? ইউনিয়নের বক্তব্য, মেদিনীপুর শহরকে বাসযোগ্য করে রাখার জন্য প্রতিদিন প্রায় পঞ্চাশ ট্রাক্টর আবর্জনা সাফাই করেন পুরসভার প্রায় চারশো সাফাই কর্মী। শহরকে জঞ্জাল- মুক্ত করতে উপযুক্ত পরিকাঠামো এবং আরও বেশি শ্রমিক নিয়োগ প্রয়োজন। অথচ, এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ উদাসীন। শ্রমিকেরা নামমাত্র মজুরি পান। সাফাই মজদুর ইউনিয়নের নেতা তপন মুখোপাধ্যায় বলেন, “আজকের দিনে যখন সমস্ত জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গিয়েছে, তখন কম মজুরি দিয়েও শ্রমিকদের শোষণ করা আমরা মানব না। এ বার মজুরিও বাড়াতে হবে।” তপনবাবুর কথায়, “জল- বিদ্যুত্ সহ বিভিন্ন বিভাগের বেশ কিছু কর্মী আমাদের সঙ্গে আছেন। ধর্মঘটে সামিল হয়েছেন। ফলে, পুরসভার স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হওয়া স্বাভাবিক।”
পুর- কর্তৃপক্ষের অবশ্য বক্তব্য, ইতিমধ্যে সাফাই কর্মীদের মজুরি কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। যাঁদের মাসে ২০ দিন কাজ পাওয়ার কথা ছিল, তাঁরা এখন মাসে ২৫ দিন করে কাজ পাচ্ছেন। কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছেন, শহরে নতুন করে পুর- কর ধার্য হয়েছে। নতুন হারে কর আদায় শুরু হলে তখন পুরসভার আয় বাড়বে। পুরসভার আয় কতটা বাড়ছে তা দেখে শ্রমিকদের মজুরি কিছুটা বাড়ানো যেতে পারে। তবে এই ধর্মঘট একেবারেই অবৈধ। শুক্রবার সকালে পুরসভায় আসেন পুরপ্রধান প্রণব বসু, উপপুরপ্রধান জিতেন্দ্রনাথ দাস-সহ তৃণমূলের বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর। পুরপ্রধান প্রণববাবুর কথায়, “পুরসভা সামর্থ্যের বাইরে গিয়ে কখনওই কিছু করবে না। কোনও প্রতিশ্রুতিও দেবে না। অন্যায্য দাবি মানা পুরসভার পক্ষে সম্ভব নয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy