শ্রদ্ধা: নেতাই গ্রামে শহিদ স্মরণ শুভেন্দুর। ছবি: কিংশুক গুপ্ত
আরও এক বার বিজেপি-কে রোখার বার্তা। আরও এক বার উন্নয়নের আশ্বাস। আরও এক বার সাঁওতালি ভাষা ও কুড়মিদের বোর্ড নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদক্ষেপ।— নেতাইয়ে শহিদ-তর্পণ মঞ্চ থেকে এমনই বার্তা দিলেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। প্ররোচনায় বিভ্রান্ত না হয়ে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত শক্ত করার আবেদনও জানান তিনি।
প্রতি বছরই শহিদ-তর্পণে আসেন শুভেন্দু। এত দিন তা মূলত সিপিএমের অভিযুক্ত নেতাদের শাস্তির দাবিতেই সীমাবদ্ধ থাকত। রবিবার সপ্তম বর্ষের শহিদ স্মরণ অনুষ্ঠানে উঠে এল বিজেপি ঠেকানোর বার্তাও। বর্তমান সমীকরণে পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের ‘রাজনীতি’ থেকে মুছে গিয়েছে ভারতী ঘোষের নাম। শাসকদলের অন্দরের খবর, এর ফলেই দুই জেলায় শুভেন্দুর গুরুত্ব নতুন করে বাড়তে শুরু করেছে। ফলে শহিদ-তর্পণে যে ভাবে বিজেপি বিরোধী বার্তা দিয়েছেন শুভেন্দু, তা তাত্পর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
এ দিনের অনুষ্ঠানে দুই মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র ও চূড়ামণি মাহাতো-সহ দলীয় নেতারা হাজির ছিলেন। বক্তৃতায় শুভেন্দু বলেন, “যারা আপনাদের দুঃখের দিনে ছিল না, তারা এখন লাল জামা বদলে গেরুয়া জামা পরেছে। তারা বিভাজনের রাজনীতি করতে চায়।” কেন্দ্রীয় শাসকদলের প্রতি তাঁর কটাক্ষ, “সাড়ে তিন বছরে ওরা উন্নয়ন করতে পারেনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাঁওতালি ভাষাকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। অলচিকি লিপিতে বই হয়েছে। বোর্ড গঠন করে কুড়মালি সমাজকে স্বীকৃতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।” চূড়ামণি মাহাতো, শান্তিরাম মাহাতো, সন্ধ্যারানি টুডুদের মতো জঙ্গলমহলের প্রান্তিক নেতাদের স্বীকৃতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী, দাবি শুভেন্দুর। তাঁর কথায়, “আদিবাসী নেতা দুলাল মুর্মু দার্জিলিং, রায়গঞ্জ যাচ্ছেন। আগের জমানায় এ সব ছিল না। তাই আপনারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে থাকুন।”
দিন কয়েক আগেই বিনপুরে রাহুল সিংহের সভায় বিজেপি-তে যোগ দেন হাড়দা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য ঝুমা মণ্ডল। তাঁর স্বামী রাজেশ মণ্ডলের নাম না করে শুভেন্দুর বক্তব্য, “বিনপুরের একটা ছেলের নাম বলে তাঁকে হিরো করব না। তিনি দিল্লি যাচ্ছেন। তিনি কী করছেন, খবর আছে। আমি দয়া করে বলব সাবধান হয়ে যেতে হবে।” সিপিএম-বিজেপির প্রতি একযোগে আক্রমণ শানিয়ে তিনি বলেন, “লক্ষ্মণ শেঠ বিজেপি-তে গিয়েছেন। এর পর হয়তো দেখবেন শাসনের মজিদ মাস্টার, ছোট আঙারিয়ার তপন ঘোষ-সুকুর আলিরাও বিজেপি-তে নাম লিখিয়েছেন।” অনুজ পাণ্ডে, ডালিম পাণ্ডে-র মতো নেতাই কাণ্ডে অভিযুক্ত সিপিএম নেতারা যাতে জেল থেকে বেরোতে না পারে সে ব্যাপারে নেতাইবাসীকে লক্ষ রাখার আবেদন জানান শুভেন্দু। সভা শেষে প্রয়াত লালগড় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কৃষ্ণগোপাল রায়ের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন শুভেন্দু। তাঁর ছেলে সুহৃদ রায় ও নাতি সুমন রায় অভিযোগ করেন, ওই দিন লালগড় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অক্সিজেন সিলিন্ডার না থাকায় তাঁর মৃত্যু হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy