পরীক্ষা শুরু আজ, বুধবার। কিন্তু পড়ুয়াদের মাথায় হাত। কারণ, বই তো নেই!
আজ, বুধবার পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণির প্রথম আভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। কিন্তু নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরুর তিন মাস পরেও বহু পড়ুয়ার কাছে নতুন পাঠ্যবই পৌঁছয়নি বলে অভিযোগ। আবার, বহু স্কুলে প্রয়োজনের তুলনায় কম বই আসায় অনেক পড়ুয়াই বই পায়নি। পুরনো ছেঁড়া বইয়ে পড়তে অসুবিধে হচ্ছে পড়ুয়াদের।
সরকারি নিয়ম অনুসারে, গত ২ জানুয়ারি থেকে ক্লাস শুরু হয়েছে সব স্কুলে। ওই দিন পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সমস্ত বই দেওয়া হয় সরকারি ভাবে। কাঁথি শহরের বহু স্কুল খোঁজ নিয়ে দেখা গেল, এক এক স্কুলে এক এক রকম পাঠ্য পুস্তক চাহিদার তুলনায় কম রয়েছে। কয়েকটি স্কুলে ইংরেজি মাধ্যমে পঠনপাঠন চলে। ওই স্কুলের বহু ছাত্রীর দাবি, তারা বই পায়নি। বাংলা বিভাগের যে বইপত্র দেওয়া হয়েছে, সেগুলির সাহায্যেই পড়তে হয়েছে। খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে, কাঁথি-১ ব্লকের নয়াপুট সুধীরকুমার হাই স্কুলে অষ্টম শ্রেণির ২৫ জন ছাত্র ইংরেজি বই আর ২২ জন বাংলা বই পায়নি। কাঁথি-৩ ব্লকের কয়েকটি স্কুলেও প্রয়োজনের তুলনায় কিছু কম বই এসেছে।
অভিভাবকদের অভিযোগ, দেরিতে বই আসার এই সমস্যা চলে আসছে কয়েক বছর ধরে। তবে আগে বছরে দু’বার পরীক্ষা হত। দেরিতে বই এলেও সমস্যা সামলে নেওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু ‘ইউনিট টেস্ট’ চালু হয়ে যাওয়ায় স্কুলের পঠনপাঠন শুরু হওয়ার পরেই প্রথম ইউনিট টেস্টের জন্য প্রস্তুতি আরম্ভ করে দিতে হয়। নতুন পাঠ্যপুস্তক হাতে না থাকায় সেই প্রস্তুতিতে সমস্যায় পড়ছে পড়ুয়ারা।
এ প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষকদের সংগঠন ‘অ্যাডভ্যান্স সোসাইটি ফর হেড মাস্টার অ্যান্ড হেড মিস্ট্রেস অ্যাসোশিয়েশনে’র জেলা সম্পাদক মৃন্ময় মাঝি বলেন, ‘‘এখনও কিছু কিছু স্কুলের পড়ুয়ারা নতুন বই পায়নি বলে খবর মিলেছে। কিন্তু এ নিয়ে কিছু করার নেই। স্কুলগুলোর হাতে যেসব পুরনো বই রয়েছে তার ভেতর থেকেই কিছুটা ভাল বই খুঁজে তাদের সাময়িক পড়তে দেওয়া হয়েছে।’’ সমস্যা মানছেন পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির নেতা তথা শিক্ষক সত্যজিৎ করও। তিনি বলেন, ‘‘পঞ্চম, ষষ্ঠ, নবম শ্রেণিতে কিছু ঘাটতি হতে পারে।’’
জেলা সর্বশিক্ষা দফতর থেকে এই সমস্ত পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ করা হয়ে থাকে। দফতর সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে যে তালিকা স্কুলগুলির পক্ষ থেকে স্কুল পরিদর্শকের দফতর মারফৎ পাঠানো হয়েছিল, সেই অনুযায়ী বই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বহু আগে। এরপর যারা নতুনভাবে বিভিন্ন ক্লাসে ভর্তি হয়েছে, তাদের নথি বাংলা শিক্ষা পোটালে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তার ভিত্তিতে কত বই আরও প্রয়োজন, সেই তালিকা নির্দিষ্টভাবে পাওয়া গিয়েছে। ঘাটতির সংখ্যা জানার পর আরও বই চাওয়া হয়েছে রাজ্যের কাছে।
এ বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) পলাশ রায় এবং সহকারি বিদ্যালয় পরিদর্শক সুমন্ত রানার প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়ে ফোন করা হয়। দু’জনেরই মোবাইল পরিষেবা সীমার বাইরে ছিল। জবাব দেননি টেক্সট মেসেজেরও। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলেছেন।’’
দোকানে ভাঙচুর
পটাশপুর: পুলিশ ও আবগরিকে জানিয়ে হয়নি কাজ। শেষে বেআইনি মদের দোকান ভেঙে গুঁড়িয়ে দিলেন এলাকায় মহিলারাই। পটাশপুরে নিরঞ্জন মার্কেটের কালীমন্দির এলাকায় গত কয়েক মাস ধরে একটি ইমারতি সামগ্রী দোকানের আড়ালে বেআইনিভাবে মদ বিক্রির অভিযোগে ওঠে। বেআইনি মদের দোকানে সর্বস্বান্ত হয়ে মদ্যপরা বাড়ি ফিরে পরিবারের সঙ্গে ঝামেলায় জড়াতেন বলে দাবি। এলাকায় মহিলা ও স্থানীয়রা একাধিকবার পুলিশ থেকে আবগরিকে জানিয়েছেন। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি বলে দাবি। এর পরে মঙ্গলবার দুপুরে এলাকার ১৫ থেকে ২০ জন মহিলা বেআইনি মদের দোকানে ভাঙচুর চালান। দোকানে মজুত থাকা দেশি ও বিদেশি মদের বোতল ভেঙে গুঁড়িয়ে দেন তাঁরা। এলাকায় চাপা উত্তেজনা রয়েছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)