মনোনয়নপত্র জমা দিচ্ছেন তৃণমূল প্রার্থী গীতারনি ভুঁইয়া।
উপ-নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি হতেই প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছিল সিপিএম ও তৃণমূল। সবং উপ-নির্বাচনে মনোনয়নও এগিয়ে থাকল এই দুই দল। একই দিনে মনোনয়ন জমা দিলেন তৃণমূল সাংসদ মানস ভুঁইয়ার স্ত্রী তৃণমূল প্রার্থী গীতারানি ভুঁইয়া এবং সিপিএম প্রার্থী রিতা মণ্ডল জানা।
শুক্রবার খড়্গপুরে মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে মনোনয়ন জমা দেন দুই প্রার্থী। সকালে মেদিনীপুরের বটতলাচকের কালীমন্দিরে পুজো দিয়ে মানসবাবুর সঙ্গে খড়্গপুরে পৌঁছন তৃণমূল প্রার্থী গীতারানিদেবী। তারপরে মহকুমাশাসকের কার্যালয়ের দোতলায় সবং বিধানসভার রিটার্নিং অফিসারের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন তিনি। পরে জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে মিছিল করে মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে পৌঁছে মনোনয়নপত্র জমা দেন সিপিএম প্রার্থী রিতাদেবী।
মানসবাবুর ছেড়ে যাওয়া আসনে তাঁর স্ত্রীকে তৃণমূল প্রার্থী করায় পরিবারতন্ত্রের অভিযোগে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। পাশাপাশি মানসবাবুর বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগও তুলছেন তাঁরা। সিপিএম প্রার্থী রিতাদেবী এ দিন বলেন, “সবংয়ের মানুষ গত বিধানসভা নির্বাচনে জোটপ্রার্থী মানস ভুঁইয়াকে জয়ী করেছিলেন। কিন্তু উনি সবংবাসীর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। সবংয়ের বিবেচক মানুষ কোনওদিন এই বিশ্বাসঘাতকদের মেনে নেবে না।” রিতাদেবীর আরও কটাক্ষ, “মানস ভুঁইয়া ও তাঁর দল তৃণমূল পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতি করছে। তাই মানসবাবুর স্ত্রী প্রার্থী হয়েছেন। রাজনীতিতে ব্যবসার জন্য এসেছেন মানসবাবু। সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করছেন না।”
সিপিএম প্রার্থী রিতা মণ্ডল জানা। নিজস্ব চিত্র
মানসবাবু সদলবলে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে দলের নতুন-পুরনো বিরোধ বারবার প্রকাশ্যে এসেছে। দল নতুনে আস্থা রেখে মানস-জায়াকে প্রার্থী করায় ক্ষুব্ধ পুরনো নেতা-কর্মীরা। সেই বিভেদ দূরে সরিয়ে রেখে লড়ার বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। এ দিন গীতাদেবীর মনোনয়ন চলাকালীন উপস্থিত ছিলেন মানসবাবুর বিরোধী বলে পরিচিত পুরনো তৃণমূল নেতা জেলা কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতি, তৃণমূলের সবং ব্লক সভাপতি প্রভাত মাইতি প্রমুখ। স্ত্রীর জয় নিয়ে প্রত্যয়ী মানসবাবু বলেন, “তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্ত যে সঠিক তা এই সবং উপ-নির্বাচনে প্রমাণ হবে।” আর পরিবারতন্ত্র প্রসঙ্গে মানসবাবুর বক্তব্য, “ভারতের গণতন্ত্রে প্রতিটি নাগরিকের অধিকার রয়েছে নির্বাচনে যোগ দেওয়ার। আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দূরদৃষ্টি দিয়ে বিচার করে সুচারু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পরিবারতন্ত্র, ব্যক্তিতন্ত্র, গোষ্ঠীতন্ত্র আর যেখানে থাক তৃণমূলে নেই।”
দীর্ঘ দিন সবংয়ের বিধায়ক ছিলেন মানসবাবু। এখন তিনি দলবদল করেছেন। ফলে, খাসতালুক সবংয়ে উপ-নির্বাচন মানসবাবুর কাছেও পরীক্ষা। তবে স্ত্রীর জয় নিয়ে নিশ্চিত মানসবাবু। তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদক্ষেপ, তাঁর আদর্শ, তাঁর এগিয়ে চলা আর আমার কর্মজীবনের যৎসামান্য যেটুকু পারি, এই দু’টির মিলন যদি হয় তবে সবং সবংয়েই থাকবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy