তমলুক জেলা হাসপাতালে বহির্বিভাগের এই ছাদ থেকেই পড়ছে জল। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস
বৃষ্টি থেমেছে ২৪ ঘণ্টা আগে। অথচ মাথায় জল পড়ার বিরাম নেই। তমলুক জেলা হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসার জন্য এসে এ ভাবেই ভিজতে হচ্ছে রোগী ও তাঁর বাড়ির লোকজনের।
নিম্নচাপের জেরে টানা তিনদিন ধরে হাল্কা-মাঝারি বৃষ্টি চললেও শুক্রবার সকালে তা থেমে গিয়েছিল। কিন্তু শনিবার সকালেও বৃষ্টির জমা জল জেলা হাসপাতালের বহির্বিভাগ ভবনের ছাদ চুঁইয়ে পড়ে ভিজিয়ে দিয়েছে রোগী ও তাঁদের পরিজনদের। হয়রান হয়েছেন ওই বিভাগে ডাক্তার দেখাতে আসা কয়েক’শো মানুষ। এখানেই শেষ নয়, ছাদ চুঁইয়ে পড়া জলে ফিজিওথেরাপি বিভাগের ঘরেও জল থইথই অবস্থা। সেখানেও নাকাল স্বাস্থ্যকর্মীরাও। হাসপাতালে এসে এভাবে ভোগান্তির শিকার হয়ে ক্ষুব্ধ রোগী ও তাঁর পরিজনেরা।
জেলা হাসপাতালের সুপার গোপাল দাস বলেন, ‘‘বহির্বিভাগ ভবনের ছাদের একাংশে জল জমে চুঁইয়ে পড়ার বিষয়টি নজরে এসেছ। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পূর্ত দফতরকে জানানো হয়েছিল। দফতরের ইঞ্জিনিয়াররা ওই ভবনের ছাদ পরিদর্শন করেছেন। জল পড়া রুখতে দ্রুত মেরামত করা হবে।’’
এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ বহির্বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, সার্জিক্যাল, অস্থি, ফিজিওথেরাপি ও চর্ম বিভাগের ঘরের সামনে রোগী ও তাঁদের পরিজনদের লম্বা লাইন। ভিজে স্যাঁতস্যাঁতে ছাদের ফাটল দিয়ে চুঁইয়ে টুপটাপ করে জল পড়ছে লাইনে দাঁড়ানো মহিলা–পুরুষদের মাথায়। বাধ্য হয়ে অনেকে ছাতা খুলে দাঁড়িয়ে আছেন। নাগাড়ে দল পড়তে থাকায় পিচ্ছিল হয়ে গিয়েছে মোজাইকের মেঝে। হাঁটুর ব্যথায় কাতর মহিষাদলের ঝাউপাথরা গ্রামের প্রৌঢ়া মালতী প্রামাণিক সকালে এসে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন অস্থি বিভাগের সামনে। রেগেমেগে বললেন, ‘‘ডাক্তার দেখাতে এসে হাসপাতলের ভিতরেও ভিজতে হবে? তার উপর মেঝের যা অবস্থা তাতে পিছলে পড়ে না কোমর ভাঙে!’’
স্ত্রী কণিকা বেরাকে ডাক্তার দেখানোর জন্য ময়না থেকে এসেছেন দীপক জানা। লাইনে দাঁড়ানো দীপকবাবু বলেন, ‘‘প্রায় দু’ঘণ্টা দাঁড়িয়ে। মাথার উপর ছাদ থেকে যে ভাবে জল পড়ছে মনে হচ্ছে বৃষ্টি হচ্ছে। এ ভাবে রোগীদের শাস্তি দেওয়ার কী মানে!’’ অস্থি বিভাগের পাশে ফিজিওথেরাপি বিভাগের ঘরের মেঝেয় জল জমে গিয়েছে। সেই জল পেরিয়েই রোগী এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা ভিতরে যাতায়াত করছেন। চর্ম বিভাগের ঘরের ভিতরেও ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশের অভিযোগ, বহির্বিভাগের ভবন দীর্ঘদিন ধরেই বেহাল। ছাদের একাংশ ফেটে গিয়েছে। না সারানোর জন্যই এই অবস্থা। কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব না দিলে যে কোনও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy