প্রতীকী ছবি।
শুধু শিবির করে এতদিন লোকশিল্পীদের নাম নথিভুক্তকরণ করা হত। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় এ বার রীতিমতো মহড়া করে বাছাই করা হবে শিল্পীদের নাম। এ ক্ষেত্রে নতুন করে কোনও আবেদন নেওয়া হবে না। যে বিপুল সংখ্যক আবেদন পড়ে রয়েছে, তার থেকেই বাছাই করে নাম নথিভুক্তকরণ হবে।
মহড়ার মাধ্যমে লোকশিল্পীদের নাম নথিভুক্তকরণের কথা মানছেন জেলার তথ্য-সংস্কৃতি আধিকারিক অনন্যা মজুমদার। অনন্যাদেবীর কথায়, “অনেক আবেদন দফতরে জমা রয়েছে। সেখান থেকেই মহড়ার মাধ্যমে নাম নথিভুক্তকরণ হবে।” দফতরের এক কর্তার কথায়, “নানা কাজে এতদিন ওই সব আবেদনে নজর দেওয়া হয়নি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এ বার কাজ শুরু হবে।”
পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে লোকশিল্পের চল রয়েছে। কেউ ঝুমুর গান করেন। কেউ আদিবাসী নৃত্য করেন। কেউ ধামসা-মাদল বাজান। যিনি যে শিল্পকর্মের সঙ্গে যুক্ত, তাঁকে মহড়ায় এসে সেটি করে দেখাতে হবে। কেউ মাদল বাজালে তাঁকে মহড়ায় মাদল বাজাতে হবে। কেন গান করলে গাইতে হবে গান। তথ্য-সংস্কৃতি দফতরের কর্মীরা যাচাই করে দেখবেন, কোনও ব্যক্তি যে পরিচয় দিয়ে নাম নথিভুক্তকরণের আবেদন জানিয়েছেন, তিনি সেই কাজে আদৌ পারদর্শী কি না। মহড়া কবে, কোথায় হবে তা পরে জানানো হবে।
জেলা তথ্য-সংস্কৃতি দফতর সূত্রে খবর, লোকশিল্পীদের সুবিধার্থেই লোকপ্রসার প্রকল্প চালু করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রকল্পে নাম তোলার জন্যে লোকশিল্পীদের মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিকের দফতরে আবেদন করতে হয়। তারপরে পুরসভা কিংবা পঞ্চায়েতের মাধ্যমে যাচাই করে শিল্পীর পরিচয়পত্র মেলে।
প্রকল্প চালুর পরপরই যে সংখ্যক আবেদন জমা পড়তে শুরু করে তা দেখে চমকে ওঠে প্রশাসনের একাংশ। শুধুমাত্র পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলায় পড়ে থাকা আবেদনের সংখ্যা প্রায় ৬৩ হাজার! এতজনের মধ্যে থেকে একই সময়ে শিল্পীদের নাম নথিভুক্তকরণ কার্যত অসম্ভব। তাই শিবিরের বদলে মহড়া নিয়ে এরমধ্যে বেশ কয়েক হাজার শিল্পীর নাম নথিভুক্তকরণের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
সম্প্রতি, রাজ্য তথ্য-সংস্কৃতি দফতর থেকে এক নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, এখন আর নতুন করে আবেদনপত্র দেওয়া কিংবা জমা নেওয়া যাবে না। নির্দেশিকায় এও জানানো হয়েছে, বিভিন্ন আঙ্গিকের প্রকৃত লোকশিল্পীরা যাতে লোকপ্রসার প্রকল্পের আওতায় আসেন তা সুনিশ্চিত করতে হবে। শিল্পীদের গুনগত মানের মূল্যায়নও করতে হবে।
এখনও পর্যন্ত এই প্রকল্পে দুই জেলায় নথিভুক্ত লোকশিল্পীর সংখ্যা প্রায় ৭ হাজার। যাঁরা মাসে এক হাজার টাকা করে ভাতা পান। এ ছাড়াও একটি সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিলে এক হাজার টাকা করে পান। জেলা তথ্য-সংস্কৃতি দফতর সূত্রে খবর, এই প্রকল্পে প্রায় ১৮ হাজার শিল্পীর নাম নথিভুক্তি হতে পারে। a
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy