সারের কালোবাজারি রুখতে দোকানে দোকানে পয়েন্ট অব সেলিং (পিওএস) মেশিন বসানোর ব্যবস্থা করছে কেন্দ্রীয় কৃষি দফতর। চলতি বছর ডিসেম্বরের মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুরের সব দোকানে এই যন্ত্র বসানোর লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। কিছু এলাকায় কাজ শুরুও হয়ে গিয়েছে।
এরই মধ্যে গত সোমবার জেলার একাধিক দোকানে অভিযান চালিয়েছিল জেলা কৃষি দফতর। অতিরিক্ত দামে সার বিক্রির অভিযোগের প্রেক্ষিতেই এই অভিযান বলে জানিয়েছেন দফতরের উপ-অধিকর্তা সুশান্ত মহাপাত্র। তিনি বলেন, ‘‘পরিদর্শনের সময় সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দাম নেওয়া, সার মজুত ও বিক্রির হিসেবে গরমিল পাওয়া গিয়েছে। ১০০ টিরও বেশি সারের দোকানকে শো-কজ করা হয়েছে।’’
সার বিক্রিতে বেনিয়মের অভিযোগ নতুন নয়। কৃষকের সুবিধার্থে ইউরিয়া, ডিএপি ও পটাসিয়াম-সহ বিভিন্ন সারে সরকারি ভর্তুকি দেওয়া হয়। বাজার দরের চেয়ে কম দামে প্রয়োজনীয় সার পেয়ে থাকেন চাষিরা। এই ভর্তুকিযুক্ত সার সরকার অনুমোদিত ডিস্ট্রিবিউটর ও খুচরো দোকানেই বিক্রি করা হয়।
কিন্তু অভিযোগ, এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী বিভিন্ন অজুহাতে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি টাকা দাবি করেন চাষিদের কাছে। যে হেতু কোনও প্রমাণ নেই, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিক্রেতারা কোনও পাকা রসিদ দেন না, তাই প্রশাসন পদক্ষেপও করতে পারে না। তবে এর আগে নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে এমন অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপও করা হয়েছে।
সার্বিক ভাবে সারের এই কালোবাজারি রুখতে ও বণ্টন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতে কেন্দ্র বিশেষ পরিকল্পনা নিয়েছে। তাতে পিওএস যন্ত্রের মাধ্যমে প্রতিটি সারের দোকান অনলাইনে যুক্ত থাকবে সঙ্গে কেন্দ্রীয় সার-রসায়ন মন্ত্রক এবং রাজ্যের কৃষি দফতরের সঙ্গে।
ফলে প্রতিদিন কী পরিমাণ কেনাবেচা হল, তার হিসাব সরাসরি গিয়ে পড়বে কেন্দ্রীয় সার্ভারে। আবার ওই যন্ত্র থেকে বের করে ছাপানো রসিদ দিতে হবে প্রতি ক্রেতাকে। এতে সার সরবরাহ এবং তাঁর বণ্টন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আসবে বলে কৃষি আধিকারিকদের দাবি।
জেলা কৃষি দফতরের হিসেবে, পূর্ব মেদিনীপুরে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ১২০০ সারের দোকান রয়েছে। জেলায় সরকারিভাবে বিনামূল্যে পিওএস যন্ত্র বসানোর কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে। জেলা কৃষি দফতরের সহ-অধিকর্তা (শস্য সুরক্ষা) মৃণালকান্তি বেরা বলেন, ‘‘প্রথম পর্যায়ে ৮৬৭ টি সারের দোকানে এই যন্ত্র বসানোর কাজ হচ্ছে। আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে জেলার প্রতিটি দোকানে এই যন্ত্র বসিয়ে দেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy