ক্ষতি: জলের তোড়ে ঘাটালের মনসুকায় ঝুমি নদীতে ভেঙে পড়েছে সাঁকো। ছবি: কৌশিক সাঁতরা
নিম্নচাপের জের। দু’দিন নাগাড়ে বৃষ্টিতে জল বাড়তে শুরু করেছে শিলাবতী, কংসাবতী, ঝুমি নদীতে। জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে গড়বেতা-১, চন্দ্রকোনা-২ ব্লকের শিলাবতী নদীর উপর একাধিক বাঁশের সাঁকো। দুর্ভোগে পড়েছেন দুই ব্লকের নদী সংলগ্ন এলাকার বহু বাসিন্দা।
নদীতে জল বাড়ায় স্রোতে গড়বেতার সন্ধিপুর পঞ্চায়েতের রাজবল্লভপুর গ্রামে শিলাবতী নদীতে একটি নৌকো ডুবে যায়। নৌকোটিতে পাঁচজন যাত্রী ছিল। যদিও প্রাণহানির কোনও ঘটনা ঘটেনি। তবে নৌকোটি তলিয়ে যায়। একটি বাইকও তলিয়ে যায় নদীতে। জলের স্রোত বেশি থাকায় নদীতে নৌকা পারাপার বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। গড়বেতা-১ ব্লকের যুগ্ম বিডিও বিশ্বনাথ ধীবর বলেন, “জলের স্রোতে একটি নৌকা ডুবে গিয়েছে। তবে যাত্রীদের কিছু হয়নি। নদীর উপর নৌকা পারাপার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’’
ঘাটালের মহকুমা শাসক পিনাকিরঞ্জন প্রধান বলেন, “দু’একটি ফেরিঘাট বাদ দিয়ে ঘাটাল মহকুমার সব নদীতেই শনিবার দুপুর থেকে নৌকা চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। কড়া নজরদারিও চালানো হচ্ছে।” শনিবার দুপুরে ঘাটাল ব্লকের মনসুকায় ঝুমি নদীর উপর একটি বাঁশের সাঁকোও ভেসে গিয়েছে। জলমগ্ন ঘাটাল-চন্দ্রকোনা সড়কের মনসাতলা চাতালও। ফলে এ দিন দুপুর থেকেও ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ঘাটালের মহকুমাশাসক পিনাকীরঞ্জনবাবু বলেন, “নদীগুলিতে জল বাড়ছে। কয়েকটি এলাকায় জলও ঢুকছে। আমরা সতর্ক রয়েছি।” মহকুমা সেচ আধিকারিক উত্তম হাজরা বলেন, “টানা বৃষ্টির ফলে জলাধার গুলি থেকে জলও ছাড়া হচ্ছে। পরিস্থিতির উপরও নজর রাখা হচ্ছে।”
জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, নিম্নচাপের জেরে বৃহস্পতিবার থেকেই জেলা জুড়ে শুরু হয়েছে বৃষ্টি। বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলাতেও বৃষ্টি বাড়ায় ফুলেফেঁপে উঠছে শিলাবতী নদী। শুধু শিলাবতীই নয়, কংসাবতী, কেঠে খাল, ঝুমি নদীতেও জল বাড়ছে। সেচ দফতর সূত্রে খবর, একাধিক জলাধার থেকেও জল ছাড়া হয়েছে। ফলে নদীগুলিতে জল বাড়ার সম্ভবনা রয়েছে। শনিবার দুপুরেই ঝুমি নদীর জল প্রাথমিক বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইতে শুরু করেছে। একই পরিস্থিতি চন্দ্রকোনার কেঠিয়া খালেরও।
নদীগুলিতে জল বাড়ায় শনিবার সকালেই গড়বেতার-১ ব্লকের সন্ধিপুর পঞ্চায়েতের রাজবল্লভপুর, গড়বেড়িয়া, দেওয়ান, শিমুলিয়া, কালিন্দিপুর এলাকায় পাঁচটি বাঁশের সাঁকো ভেঙে গিয়েছে। চন্দ্রকোনা-২ ব্লকের ভগবন্তপুর-১ পঞ্চায়েতের চৈতন্যপুরেও ভেঙে গিয়েছে শিলাবতী নদীর বাঁশের সাঁকো। জলের তোড়ে সাঁকো ভেসে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন নদীর দুই পাড়ের ৩০-৪০টি গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দা। গড়বেতা-১ ব্লকের যুগ্ম বিডিও বিশ্বনাথ ধীবর ও চন্দ্রকোনা-২ ব্লকের বিডিও শ্বাশত প্রকাশ লাহিড়ী জানান, জল কমলেই সাঁকো তৈরি করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy