মুখ-ঢেকেছে: শালগেছিয়া এলাকায় নিকাশি নালার হাল। নিজস্ব চিত্র।
শহরের বসতি এলাকার বাড়ি ও বাজারের ব্যবসায়ীদের ফেলা জঞ্জাল সাফাইয়ে বেশ কিছু ভ্যাট কেনা হয়েছিল কয়েক বছর আগে। কিছু জায়গায় তা বসানো হলেও বহু জায়গাতেই এখনও ভ্যাট নেই। ফলে আবর্জনা পড়ে বুজছে নিকাশি নালা। জলাশয়ে বাড়ছে দূষণ। এমনই ছবি পাঁশকুড়া শহরের।
পুরসভা গঠনের পর ১৫ বছর কেটে গিয়েছে। অথচ, পাঁশকুড়া শহরে বাসিন্দাদের বাড়ির জঞ্জাল ফেলার জন্য উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়নি বলে অভিযোগ। ফলে শহরের বেশ কিছু এলাকায় বাসিন্দারা জঞ্জাল ফেলছেন কাছের নিকাশি নালায় বা জলাশয়ে। এমনকী রেললাইনের ধারেও জঞ্জাল ফেলছেন তাঁরা। ফলে শহরের বেশকিছু এলাকা অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ।
সমস্যা মেনে নিয়েছেন পাঁশকুড়ার পুরপ্রধান জাকিউর রহমান খান। তিনি বলেন, ‘‘পুরসভার জঞ্জাল ফেলার জন্য সরকারি জমি নিয়ে ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরি করা হয়েছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভ্যাট রেখে বাড়ির জঞ্জাল সংগ্রহের ব্যবস্থাও চালু করা হয়েছে। তবে জঞ্জাল সাফাই ব্যবস্থার জন্য যথেষ্ট সংখ্যক কর্মী না থাকায় সমস্যা হচ্ছে। এ জন্য কর্মী নিয়োগের চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁশকুড়া স্টেশন বাজার ও পুরাতন বাজার সংলগ্ন বসতি এলাকা নিয়ে ২০০২ সালে ১৭ টি ওয়ার্ড নিয়ে পুরসভা গঠন করা হয়। পুর এলাকায় বর্তমানে জনসংখ্যা প্রায় ৭০ হাজার। বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকায় রাস্তাঘাট পাকা করা, পথবাতি ও পানীয় জলের চাহিদা মেটানোর জন্য পুরসভা উদ্যোগী হলেও জঞ্জাল সাফাই ব্যবস্থার ক্ষেত্রে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। ফলে পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে বসতি এলাকায় নিকাশি নালা, ফাঁকা জায়গা বা জলাশয়ে আবর্জনা ফেলছেন বহু বাসিন্দা। এর জেরে শহরের অনেক নালা আবর্জনায় ভরে গিয়েছে। ফলে বর্ষায় নিকাশির ক্ষেত্রেও সমস্যা হচ্ছে। বেশ কয়েকটি জলাশয় আবর্জনায় দূষিত হয়ে উঠেছে।
পুরসভার ১ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড সংলগ্ন হলদিয়া পুকুর নামে রেলের বড় জলাশয় রয়েছে। স্থানীয় অনেক বাসিন্দা ওই জলাশয়ে আবর্জনা ফেলায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এলাকার বাসিন্দা তথা পৌর নাগরিক কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সুনীল জানার অভিযোগ, ‘‘পুরসভার জঞ্জাল সাফাই ব্যবস্থা না থাকায় অনেকেই আবর্জনা ফেলতে আসেন। এ ভাবে দীর্ঘদিন ধরে আবর্জনা ফেলায় এমন অবস্থা হয়েছে। পুরসভার তরফে কয়েক মাস আগে কয়েকটি ওয়ার্ডে কিছু সংখ্যক ভ্যাট বসানো হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম।’’
পুর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, জঞ্জাল ফেলার জন্য পুরসভা কয়েক বছর আগে ৬০ টি ভ্যাট, জঞ্জাল বহনের গাড়ি কেনে। কিন্তু জঞ্জাল ফেলার ডাম্পিং গ্রাউন্ডে যাতায়াতের রাস্তা তৈরি না হওয়ায় এবং প্রয়োজনীয় সাফাই কর্মী না থাকায় জঞ্জাল ব্যবস্থাপনা চালু হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা ভ্যাটগুলি মাসখানেক আগে পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে বসানো হয়েছে। অস্থায়ী সাফাই কর্মীদের দিয়ে কিছু এলাকায় জঞ্জাল সাফাই ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। পুরসভার অধিকাংশ এলাকায় জঞ্জাল সাফাই ব্যবস্থা এখনও অধরা। তবে শীঘ্রই জঞ্জাল ফেলার ব্যবস্থা আরও উন্নত করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy