ভাঙা রাস্তায় ঝুঁকির যাতায়াত। ওটি রোডে রামপ্রসাদ সাউয়ের তোলা ছবি।
থমকে রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ। ওড়িশা ট্রাঙ্ক রোডের চৌরঙ্গী-ইন্দামোড় অংশে ভাঙা রাস্তায় দুলকি চালে চলছে গাড়ি। বাড়ছে দুর্ঘটনার সম্ভাবনাও।
খড়্গপুর শহরের প্রবেশপথ ওটি রোড দিয়ে দিনে কয়েক হাজার গাড়ি চলাচল করে। এই রাস্তার দু’দিকে রয়েছে বহু সরকারি ও বেসরকারি অফিস। যদিও জবরদখলকারীদের দাপটে ১২০ ফুট চওড়া রাস্তা এসে ঠেকেছে ১৮ ফুটে। সঙ্কীর্ণ রাস্তায় যানজট নিত্যদিনের সমস্যা।
২০১৫ সালে ওটি রোডের ইন্দা- চৌরঙ্গী অংশে রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য দরপত্র ডাকে পূর্ত দফতরের মেদিনীপুর বিভাগ। প্রাথমিক ভাবে ওই রাস্তাটি ৫ মিটার থেকে বাড়িয়ে ১০ মিটার করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। পরে ঠিক হয় রাস্তাটি ১২ মিটার চওড়া করা হবে। এ জন্য বরাদ্দও হয় প্রায় ৯ কোটি টাকা। গত বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে রাস্তার কাজ শুরু হয়। জানুয়ারি মাসে পূর্ত দফতরের মেদিনীপুর বিভাগ এই কাজের ভার দফতরের খড়্গপুর বিভাগকে হস্তান্তর করে। তারপর থেকেই কাজের গতি থমকে যায় বলে অভিযোগ।
মাস দেড়েক আগে থেকে বন্ধ হয়ে রয়েছে রাস্তার কাজ। ইন্দার বাসিন্দা বেসরকারি সংস্থার কর্মী সুপ্রিয় ঘোষ বলেন, “দিনে বেশ কয়েকবার এই রাস্তা দিয়েই চৌরঙ্গী হয়ে মেদিনীপুরে যাতায়াত করি। সড়ক সম্প্রসারণের জন্য রাস্তার অবস্থা সঙ্গীন হয়ে গিয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘মাস খানেকের উপর রাস্তার কাজ বন্ধ। রাস্তার গর্ত এড়াতে গিয়ে দুর্ঘটনাও ঘটছে।’’
সম্প্রসারণের কাজ চলায় রাস্তা বড় বড় গর্তে ভরে গিয়েছে। জীর্ণ পথে যান চলছে ধীর গতিতে। রাতে অন্ধকারে গাড়ি চালকেরা রাস্তার গর্ত ঠাহর করতে পারছেন না। ফলে দুর্ঘটনার প্রবণতাও বাড়ছে। সম্প্রতি রাতের অন্ধকারে ওই রাস্তা ধরে চৌরঙ্গী থেকে খড়্গপুরে আসার পথে বিদ্যাসাগর শিল্পতালুকের কাছে বাইক থেকে পড়ে গিয়ে জখম হন এক দম্পতি। দিন সাতেক আগে গর্ত এড়াতে গিয়ে বাইকের নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি দুই যুবক। মোটরবাইক থেকে পড়ে গিয়ে আঘাত পান ওই দুই যুবক।
রাস্তার কাজ বন্ধ কেন? পূর্ত দফতর সূত্রে খবর, রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য জবরদখলকারীদের স্থানান্তর করা হয়েছে। বিদ্যুৎ ও টেলিফোনের লাইনও সরানো হয়েছে। রাস্তার দু’দিকের মাটি খুঁড়ে ভরাট করার কাজও এগিয়ে গিয়েছে। কাজের সময় ভারী যন্ত্রপাতি আনা ও মাটি কাটার কাজ করার সময় রাস্তায় খানাখন্দ বেড়ে গিয়েছে। ভোটের সময় রাস্তায় পিচ দেওয়া হয়েছিল। তবে সেই পিচের আবরণ উঠে গিয়েছে। ভোটের কারণে রাস্তার কাজ বন্ধ রয়েছে।
খড়্গপুরের গোবিন্দনগরের বাসিন্দা সোমনাথ আচার্য বলেন, “জেলায় তো নির্বাচন ১১ এপ্রিল মিটে গিয়েছে। কিন্তু তার পরেও কেন কাজ চালু হচ্ছে না জানি না। রাস্তায় পিচ দেওয়া হলেও তা উঠে গিয়েছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘শহরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় এখন পদে পদে বিপদ। যানজটের সমস্যা তো রয়েইছে। ধুলোর দাপটেও ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা যায় না। দ্রুত রাস্তার কাজ চালু করা উচিত।’’
সমস্যার কথা মানছেন পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরা। পূর্ত দফতরের খড়্গপুর ডিভিশনের এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার রাজীব বিশ্বাস বলেন, “ভোটের জন্য শ্রমিকেরা বাড়ি গিয়েছে। সেই কারণেই কাজ বন্ধ রয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যেই ফের কাজ শুরু করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy