Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Lakshmi Bhandar Scheme

Lakshmir Bhandar: ‘লক্ষ্মীর ভান্ডারে’র ভিড়ে করোনার ভয়

লক্ষ্মীর ভান্ডারে নাম তোলাতে মাস্কহীন মহিলার ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয় পু‌লিশকে।

মেদিনীপুর শহরের একটি স্কুলে দুয়ারে সরকার শিবিরে ভিড়। সোমবার।

মেদিনীপুর শহরের একটি স্কুলে দুয়ারে সরকার শিবিরে ভিড়। সোমবার। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২১ ০৬:০০
Share: Save:

সোমবার থেকে শুরু হল ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির। সবচেয়ে বেশি ভিড় ‘লক্ষ্মীর ভান্ডারে’র কাউন্টারের সামনেই। ভিড় সামলাতে হিমশিম খেয়েছেন কর্মীরা। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘সুষ্ঠুভাবেই ভিড় সামলানো হয়েছে। অনেকে আবেদন করতে এসেছিলেন। শিবিরে থাকা কর্মীরা সব রকম সাহায্য করেছেন।’’

মেদিনীপুর সদর ব্লকের শিরোমণি গ্রাম পঞ্চায়েতের বাড়ুয়া মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রের শিবিরে সোমবার দুপুরে শিবিরে গিয়ে দেখা যায় হাজার দেড়েকের ভিড়। বেশিরভাগই মহিলা। ‘লক্ষ্মীর ভান্ডারে’র কাউন্টারের সামনে লাইন এঁকেবেঁকে চলে গিয়েছে। শেষ কোথায়, বোঝা যাচ্ছে না। ভিড়, হুড়োহুড়িতে স্বাস্থ্যবিধি শিকেয় ওঠে। সামাজিক দূরত্ব ছিল না, অনেকের মুখে মাস্কও ছিল না। লাইনে দাঁড়ানো স্মৃতি গোস্বামী বলছিলেন, ‘‘করোনা আছে বলে মনে হচ্ছে না!’’ ভিড়ে জ্ঞান হারান সন্ধ্যা মল্লিক নামে এক মহিলা। তিনিও ‘লক্ষ্মীর ভান্ডারে’র ফর্ম তুলতে এসেছিলেন। তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি করাতে হয়। সন্ধ্যার মেয়ে সাগরিকা মল্লিক বলে, ‘‘লাইনে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে মা অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল। কিছুক্ষণ পরে জ্ঞান ফিরেছে।’’

সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুরে ৩২টি শিবির হয়েছে। কেশপুরের সোলিডিহায়, শালবনির বাঁকিবাঁধে শিবির হয়েছে। সর্বত্রই বেশি ভিড় ‘লক্ষ্মীর ভান্ডারে’। ‘স্বাস্থ্যসাথী’, ‘কৃষকবন্ধু’র মতো প্রকল্পের কাউন্টারের সামনে তুলনায় কম ভিড় ছিল। প্রশাসন সূত্রে খবর, তেমন হলে আগামী দিনে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডারে’র জন্য একাধিক কাউন্টার রাখা হতে পারে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক মানছেন, ‘‘গতবার স্বাস্থ্যসাথীর জন্য যে ভিড় দেখা গিয়েছিল, এ বার লক্ষ্মীর ভান্ডারের জন্য তার থেকেও অনেক বেশি ভিড় দেখা যাচ্ছে।’’

খড়্গপুর শহরের ধ্যানসিং ময়দানে মহাকবি গুরজারা হাইস্কুলে শিবিরে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। চারটি ওয়ার্ডের মানুষ সেখানে ভিড় করেন। চাহিদা বেশি থাকলেও লক্ষ্মীর ভান্ডার ও স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য আলাদা লাইন হয়নি। মাস্ক ছিল না অনেকের, দূরত্ব বিধিও উধাও।

ফর্ম বিলির দায়িত্বে থাকা স্ব-সহায়ক গোষ্ঠীর মহিলাদের বক্তব্যে বিভ্রান্তির অভিযোগ ওঠে। ফর্ম চেয়েও না পাওয়া শুভ্রা চক্রবর্তী বলেন, “স্ব-সহায়ক গোষ্ঠীর মহিলারা বলছেন, ফর্ম পূরণ করিয়ে এ দিনই জমা দিতে হবে। ২ সেপ্টেম্বর যখন শিবির হবে তখন কেন জমা দিতে পারব না?” মহকুমাশাসক আজমল হোসেন বলছেন, “আমরা মানুষের সুবিধায় একদিনেই ফর্ম জমার পরামর্শ দিয়েছি। কিন্তু পরেও জমা করা যাবে।” যাঁদের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নেই তাঁরা কীভাবে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডারে’ আবেদন করবেন তা নিয়েও বিভ্রান্তি দেখা যায়। মহকুমাশাসক জানান, আগে স্বাস্থ্যসাথীর আবেদন করে থাকলে রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে লক্ষ্মীর ভান্ডারে আবেদন করা যাবে। নতুন করে স্বাস্থ্যসাথীর আবেদন করলেও লক্ষ্মীর ভান্ডারে আবেদন করা যাবে। বিধি ভাঙার ছবি গড়বেতার তিনটি ব্লকেও।

ঝাড়গ্রামেও লক্ষ্মীর ভান্ডারে নাম তোলাতে মাস্কহীন মহিলার ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয় পু‌লিশকে। শিবির শুরুর ঘণ্টা তিনেক আগেই মানিকপাড়া হাইস্কুলের সামনে কয়েকশো মহিলা জমায়েত হয়। বেলিয়াবেড়া ব্লকের পেটবিন্ধি হাইস্কুলের সামনে থেকে প্রায় কয়েক কিলোমিটার লম্বা লাইন ছিল। বেলপাহাড়ির শিবিরে রোদে ঠায় দাঁড়িয়ে কয়েকজন মহিলা সংজ্ঞা হারান। এদিন জেলায় বিভিন্ন ব্লকে ও শহর মিলিয়ে মোট ১৮ টি শিবিরে ২৫ হাজার ৯৫৭ জনের আবেদন জমা পড়েছে। তার মধ্যে লক্ষ্মীর ভান্ডারে ১৭ হাজার ৮০৯টি আবেদন জমা পড়েছে। জনশিক্ষা সম্প্রসারণ ও গ্রন্থাগার দফতরের প্রধান সচিব রোশনি সেন এদিন জেলার বিভিন্ন শিবির পরিদর্শন করেছেন। জেলাশাসক জয়সি দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘মহিলাদের সঙ্গে বাড়ির লোকজনও এসেছিলেন। মূলত সেই কারণে ভিড় হয়। আগামী দিনে ভিড় নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Lakshmi Bhandar Scheme
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy