Advertisement
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ঢাকনা সরাতেই কিলবিল করে উঠল লার্ভা

জলের অভাবই কাল। দূর থেকে জল আনতে হবে বলে হাঁড়ি, কলসি, বালতিতে জল জমিয়ে রাখছেন অনেকে। আর এই জমানো জলই হয়ে উঠছে মশার আঁতুড়ঘর।

নজরদারি: মশার খোঁজে স্বাস্থ্য দফতরের দল। নিজস্ব চিত্র

নজরদারি: মশার খোঁজে স্বাস্থ্য দফতরের দল। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৭ ০১:১৪
Share: Save:

জলের অভাবই কাল। দূর থেকে জল আনতে হবে বলে হাঁড়ি, কলসি, বালতিতে জল জমিয়ে রাখছেন অনেকে। আর এই জমানো জলই হয়ে উঠছে মশার আঁতুড়ঘর। মানুষকে সচেতন করতে ম্যাজিক, সচেতনতা সভা করার পরেও খড়্গপুর শহরের রবীন্দ্রপল্লিতে এমন ছবি দেখে চক্ষু চড়কগাছ স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদেরও।

ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া রোধে সোমবার থেকে স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগে খড়্গপুর শহরে শুরু হয়েছে বিশেষ কর্মসূচি। চলবে আগামী ৫ মে পর্যন্ত। প্রতি মাসে দশ দিন করে আগামী ছ’মাস ধরে এই কর্মসূচি চলবে। ফের ১৬-২০ মে পর্যন্ত পালন করা হবে এই কর্মসূচি। সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী জেলা স্বাস্থ্য দফতর ডেঙ্গি রোধে ব্যবস্থা নেবে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে সচেতন করার কাজও হবে।

সমীক্ষা শুরুর প্রথমেই রবীন্দ্রপল্লিতে হাঁড়ি, বালতির জলে মশার লার্ভার বাড়বাড়ন্ত দেখে চমকে গিয়েছেন পুরসভার স্বেচ্ছাসেবকেরা। কেন বাড়ানো যাচ্ছে না সচেতনতা? রবীন্দ্রপল্লির বাসিন্দা প্রশান্ত দে বলেন, “সঙ্কটের জন্যই জল জমিয়ে রাখতে হয়। তবে এই জমিয়ে রাখা জলেই যে ডেঙ্গির মশা জন্মেছে তা স্বাস্থ্য দফতরের লোক না এলে বুঝতে পারতাম না। জলের অভাব মিটলেই আর এত সমস্যা হয় না।’’ এলাকার কাউন্সিলর স্মৃতিকণা দেবনাথ বলেন, “জল সঙ্কট দূর করতে পুরসভায় স্মারকলিপি দিয়েছি। তাও পুরসভার কোনও হেলদোল নেই। আমরা সীমিত ক্ষমতায় যতটুকু পারছি করছি।”

শুধু জলের অভাবই নয়। বেহাল নিকাশিও মশার বাড়বৃদ্ধির কারণ। শহরের বিদ্যাসাগরপুরে অবরুদ্ধ নিকাশি নালায় মশা বাড়ছে বলে দাবি করছে খোদ স্বাস্থ্য দফতরই। এলাকার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা নিলয় সরকার বলেন, “এলাকায় একটি বড় নিকাশি নালা রয়েছে। আর কোথাও সে ভাবে নালাই নেই। চারিদিকে অপরিকল্পিতভাবে বাড়ি তৈরি হওয়ায় জল জমে থাকছে। মশার উৎপাতে আমরা অতিষ্ট।”

সমীক্ষার শুরুতেই ডেঙ্গির মশার লার্ভা পেয়ে শঙ্কিত জেলার স্বাস্থ্য কর্তারাও। জেলা উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তথা মশাবাহিত রোগের নোডাল অফিসার রবীন্দ্রনাথ প্রধান বলেন, ‘‘জলের অভাবে মানুষ জল জমিয়ে রাখছেন। আবার শহরের নিকাশির হালও খারাপ। দু’টি ক্ষেত্রেই জমা জলে মশা জন্মাচ্ছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘খড়্গপুরে আমরা দু’দিনের সমীক্ষায় দু’টি ওয়ার্ডে মশার লার্ভা পেয়েছি। মশা নিধনে নিশ্চয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে পুরসভাকেও জানানো হচ্ছে।”

জল, নিকাশির মতো পুর পরিষেবার মানোন্নয়নে কী করছে পুরসভা? সদুত্তর এড়িয়ে পুরসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক পুর-পারিষদ বেলারানি অধিকারী বলছেন, “আসলে এ বার স্বাস্থ্য দফতরের অধীনে চলা এই কর্মসূচি খুব কার্যকরী। সমীক্ষায় ডেঙ্গির মশার বৃদ্ধির জন্য যে সকল কারণ দায়ী বলে জানা যাচ্ছে, তা স্বাস্থ্য দফতরে জানানো হচ্ছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এ বিষয়ে রাজ্যেও রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে। এর ফলে মশা নিধনে রাজ্যের সহযোগিতা পাওয়া যাবে। আমরাও এলাকা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mosquito Logged water
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE