Advertisement
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Jadavpur

মদের দাম না দেওয়ায় পুলিশের মারধর, অভিযোগ অটোচালকদের

অটোচালকদের অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার ওই অটোস্ট্যান্ডে বিশ্বকর্মা পুজোর বিসর্জন উপলক্ষে সাউন্ড বক্স বাজানো হচ্ছিল। তখন পূর্ব যাদবপুর থানার পুলিশ সেখানে এসে প্রথমে মাইক বন্ধ করতে বলে।

পূর্ব যাদবপুর থানার বাইরে অটোচালকদের বিক্ষোভ। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

পূর্ব যাদবপুর থানার বাইরে অটোচালকদের বিক্ষোভ। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:৫৭
Share: Save:

মদের দাম না পাওয়ায় পুলিশের বিরুদ্ধে এ বার মারধর করার অভিযোগ উঠল। গত বৃহস্পতিবার, পূর্ব যাদবপুরের এই ঘটনায় এক বালিকা-সহ কয়েক জন জখম হন। ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলে শুক্রবার থানার সামনে জমায়েত করে বিক্ষোভ করলেন স্থানীয় মুকুন্দপুর অটোস্ট্যান্ডের চালকেরা।

অটোচালকদের অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার ওই অটোস্ট্যান্ডে বিশ্বকর্মা পুজোর বিসর্জন উপলক্ষে সাউন্ড বক্স বাজানো হচ্ছিল। তখন পূর্ব যাদবপুর থানার পুলিশ সেখানে এসে প্রথমে মাইক বন্ধ করতে বলে। তার পরে তাঁদের থেকে মদের দাম চায়। অভিযোগ, মদের দাম না দেওয়ায় পুলিশ বেধড়ক লাঠিপেটা করে অটোচালকদের। ঘটনায় এক বালিকা-সহ কয়েক জন জখম হন। পরে পুলিশ জখমদের স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করায়। যদিও পরে বিষয়টি মিটমাট করে নেওয়া হয় বলে জানান অটোচালকেরা। তাঁরা জানান, পুলিশ তাঁদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছে। অবশ্য পুলিশের দাবি, মাইক বন্ধ করতে বললে অটোচালকদের সঙ্গে গোলমাল শুরু হয়। তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জ করতে বাধ্য হয় পুলিশ।

এ দিকে পূর্ব যাদবপুর থানার পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ারের লাঠিপেটার অভিযোগ তুলে শুক্রবার সকালে থানার সামনে জমায়েত করে বিক্ষোভ দেখান অটোচালকেরা। তাঁরা জানান, কয়েক দিন ধরে পুলিশকে মদের খরচ জোগানো হলেও বৃহস্পতিবার রাতে তা দেওয়া হয়নি। তাই মাইক বাজানোর অভিযোগকে সামনে রেখে তাঁদের মারধর করা হয় বলে দাবি। অভিযোগ, পুলিশের গাড়ির চালক, সিভিক ভলান্টিয়ার ও পুলিশকর্মীরা মারধর করেন। আরও অভিযোগ, বছরের অন্য সময়ে বিনা ভাড়ায় সিভিক ভলান্টিয়ারেরা অটোয় যাতায়াত করলেও তাঁরা অটোচালকদের মারধর করেন।

আর জি-কর কাণ্ডের জেরে সাম্প্রতিক কালে পুলিশ তথা সিভিক ভলান্টিয়ারদের ভাবমূর্তি প্রশ্নের মুখে পড়েছে। এ দিন মুকুন্দপুরের ওই অটোচালকেরা পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ারদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন। অভিযুক্ত পুলিশকর্মী ও সিভিক ভলান্টিয়ারদের থানা থেকে সরানোর দাবিতে দীর্ঘক্ষণ পূর্ব যাদবপুর থানার সামনে অটোচালকদের বিক্ষোভ চলে। কয়েক জন অটোচালক বিষয়টি মিটমাট করতে চাইলে তাঁদের সঙ্গে বাকি বিক্ষোভকারীদেরও বচসা বাধে। এক অটোচালকের স্ত্রী সুমিতা দাস জানান, ওই গোলমালে তাঁর মেয়ে, ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী সুদীপাকেও মারধর করা হয়। তিনি বলেন, ‘‘আমার মেয়ের পায়ে আঘাত লেগেছে। বিশ্বকর্মা পুজোর বিসর্জনের দিনে পুলিশ মাইক বন্ধ করতে বলায় সেটা বন্ধ করে বক্স বাজানো হচ্ছিল। তখন আবার পুলিশে এসে লাঠি চালায়। এক জন সিভিক ভলান্টিয়ার, এক জন গাড়িচালক আর কয়েক জন পুলিশ ছিলেন। আমার মেয়েকেও মারা হয়। অথচ তিন দিন ধরে এসে পুলিশ মদের দাম নিয়ে যাচ্ছে। এই পুলিশদের বদলি চাই।’’

লাঠিচার্জের কথা স্বীকার করে কলকাতা পুলিশের পূর্ব ডিভিশনের এক পদস্থ আধিকারিক পাল্টা বলেন, ‘‘মদের খরচ না পেয়ে পুলিশ মারধর করেছে, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যে অভিযোগ। অটোচালকেরা নিজেদের দোষ ঢাকতে মিথ্যে বলছেন। ওঁদের মাইক বাজানোর দৌরাত্ম্যে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ গিয়ে মাইক বন্ধ করতে বললে গোলমাল শুরু হয়। তখন পুলিশ বাধ্য হয় লাঠি চালাতে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jadavpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE