উদ্ধারের পরে।— নিজস্ব চিত্র
পাক্কা একুশ দিন ধরে নিখোঁজ।
এর আগে তার খোঁজ পেতে তোলপাড় হয়েছে পুকুর। তবু নাগাল মেলেনি। রবিবার সকালে বৃষ্টি মাথায় ফের শুরু হল চেষ্টা। এক ঝলক দেখলে মনে হতে পারে বড় রুই-কাতলার খোঁজ চলছে বুঝি। কিন্তু পুকুর পাড়ে এত উর্দিধারী কেন? কিছুক্ষণ পরেই রহস্যের যবনিকা পতন। রুই-কাতলা নয়। জল থেকে উঠল নিখোঁজ ব্যালট বাক্স। একটি, দু’টি নয়। সাতটি।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ব্যালট বাক্স পুকুরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। যার জেরে পুনঃনির্বাচন হয়েছিল মোহনপুরের রামপুরাতে। অভিযোগ উঠেছিল বিজেপির দিকেই। এই ঘটনায় নির্বাচন কমিশন এফআইআরও করেছিল। পুকুরে তল্লাশি চালিয়েও সে সময় ব্যালট বাক্স উদ্ধার করতে পারেনি প্রশাসন। মোহনপুরের রামপুরা এলাকার ঘটনার একুশ দিন পর রবিবার ব্যালট বাক্স উদ্ধার হল। এ দিন সাতটি ব্যালট বাক্স উদ্ধার হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। পুকুরে তল্লাশি চালিয়ে ব্যালট বাক্সগুলি উদ্ধার হয়েছে। উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে আনুষ্ঠানিক ভাবে এ ব্যাপারে কিছুই জানায়নি তারা। বেলদার এসডিপিও শামিম বিশ্বাস জানান, নিখোঁজ ব্যালট বাক্সগুলি উদ্ধার হয়েছে।
গত ৮ জুলাই পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন গন্ডগোলের জেরে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল রামপুরা এলাকার দু’টি বুথে। ছাপ্পার অভিযোগ উঠেছিল। পুলিশ গিয়েও গন্ডগোল থামাতে পারেনি। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়ার অভিযোগ উঠেছিল বিজেপির বিরুদ্ধে। ব্যালট বাক্স পুকুরে ফেলে দেওয়ার ঘটনায়ও নাম জড়িয়েছিল বিজেপির। যে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে হাই কোর্টে রক্ষাকবচ ওঠার পর বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নামে গত ২৪ জুলাই মোহনপুর থানায় এফআইআর দায়ের হয়। প্ররোচনামূলক মন্তব্যের জেরেই ছিল এই এফআইআর। নির্বাচনের আগে বুথে গোলমাল ও ছাপ্পা হলে ব্যালট জলে ফেলে দেওয়ার নিদান দিয়েছিলেন শুভেন্দু। তার পরিপ্রেক্ষিতে হাই কোর্টে মামলা হয়েছিল। বিজেপির পশ্চিম মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক গৌরীশংকর অধিকারী বলেন," পুলিশ প্রশাসন থেকেও যেখানে সাধারণ মানুষের প্রতিরোধে ভোট লুট বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে সেখানেই সাধারণ মানুষের নামে মামলা করা হয়েছে। এটাই তো এবারের নির্বাচনে দেখা গিয়েছে।" পুনঃনির্বাচনে রামপুরার একটি বুথে জয়লাভ করেছে বিজেপি। ব্লক তৃণমূলের এক নেতৃত্ব বলেন," নির্বাচনের দিন বিজেপির লোকজন যে ব্যালট জলে ফেলে দিয়েছিল। এ দিন সেগুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ।"
সমুদ্র মন্থনে একইসঙ্গে উঠেছিল অমৃত ও গরল। পুকুর মন্থনে উঠল গণতন্ত্রের আধার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy