বেশিরভাগ স্কুলেই বিভিন্ন ক্লাসের পরীক্ষা চলছে। তবে দ্বাদশ্রেণির ক্লাস চালু। চাকরিহারা শিক্ষকরা অধিকাংশ স্কুলে না আসায় তাদের অনেক ক্লাস ঠিক মতো হচ্ছে না বলে অভিযোগ। ফলে স্কুলে আসার আগ্রহ অনেকেই হারাচ্ছে বলে দাবি। শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়িতে এই পরিস্থিতি নজরে এসেছে।
শিলিগুড়ির বেশ কিছু স্কুলের শিক্ষকদের একাংশেরও দাবি, এ রকম পরিস্থিতি চললে পড়ুয়াদের স্কুলে আসা আরও কমে যাবে। বিশেষ করে পরীক্ষার পর যখন সমস্ত ক্লাস চালু হবে তখন শিক্ষকের সমস্যা বাড়বে। ক্লাস ঠিক মতো না হলে পড়ুয়ারা আসতে চাইবে না বলে আশঙ্কা। এমন পরিস্থিতি হলে পড়ুয়াদের না পাঠানোই ভাল বলে মত অভিভাবকদের অনেকের। কয়েক জন শিক্ষকের মত এখনও পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে না। একটি স্কুলের শিক্ষকরা জানান, পড়া ঠিক মতো না হলে পড়ুয়ারা আসতে চাইবে না সেটা ঠিক। তবে এখন নববর্ষের মুখে ছুটিছাটা রয়েছে সে জন্য কিছু পড়ুয়া হয়তো স্কুলে আসছে না। পরীক্ষায় কিন্তু তারা আসছে।
জলপাইগুড়ি এবং শিলিগুড়ি শিক্ষা জেলায় স্কুলগুলির একাংশে নেই পর্যাপ্ত শিক্ষক শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মী। তার উপর শিক্ষক শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীরা চাকরিহারা হওয়ায় স্কুলগুলিতে পঠনপাঠনের কাজ ব্যাহত হবে বলে মত শিক্ষানুরাগীদের। শিলিগুড়ি স্কুল পরিদর্শকের দফতরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, তারা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছেন। কিন্তু নির্দেশ না এলে তাদেরও কিছু করণীয় নেই। কয়েকজন শিক্ষকের আফসোস করেন, এমনিতেই বাংলা মাধ্যম স্কুলগুলির প্রতি অভিভাবকদের আগ্রহ নষ্ট হয়েছে। এ রকম পরিস্থিতি হলে এর পর পরীক্ষার সময় পড়ুয়ারা এসে পরীক্ষা দেবে, বছর ভর তারা স্কুলে আসবে না। গৃহশিক্ষকের কাছে পড়েই সব করতে হবে। গরিব পড়ুয়াদের সমস্যা বাড়বে।
জলপাইগুড়ি সুনীতিবালা সদর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের পাঁচজন শিক্ষিকার নাম রয়েছে এই চাকরিহারাদের তালিকায়। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সুতপা দাস বলেন, " ছাত্রী অনুপাতে শিক্ষিকা এমনিতেই কম। তার উপর এই পরিস্থিতির জেরে আরও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। যতটা সম্ভব ক্লাস করানো যায় সেই চেষ্টাই আমরা করছি।’’
জলপাইগুড়ির অপর একটি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকের কথায়, ‘‘খুবই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। কী ভাবে সব ক্লাস করানো যাবে ভেবে পাচ্ছি না। এরই মধ্যে স্কুলে ছাত্রদের উপস্থিতির হার কমতে শুরু করেছে। চাকরিহারাদের বিষয়ে এখনও পর্যন্ত সরকারিভাবে লিখিত কোনও নির্দেশিকা পাইনি। তাই পড়াশোনার কী হবে চিন্তাতে রয়েছি।"
জলপাইগুড়ি এবং শিলিগুড়ির বিভিন্ন স্কুলের চাকরিহারা শিক্ষক শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের এক বড় অংশ এদিন কলকাতায় ছিলেন। স্কুলগুলিতে চাকরিহারারা বেশিরভাগ অনুপস্থিত। তবে একাংশের চাকরিহারারা স্কুলে গিয়ে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরও করছেন। ক্লাস নিচ্ছেন। পরীক্ষা নিচ্ছেন।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)