তথ্য জানাতেই ওয়েবসাইট। অথচ পেজে ক্লিক করলে অনেক জরুরি তথ্যই মেলে না। যেটুকু মেলে তাও বহু বছরের পুরনো। যেমন জনসংখ্যার তথ্য ২০০১ সালের, বার্ষিক বৃষ্টিপাতের তথ্যটি ২০০৭ সালের।
এমনই দশা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটের। সেখানে সময় মতো তথ্য ‘আপডেট’ করা হয় না। ফলে, তথ্য জানতে বসে নিরাশ হতে হয়। জেলা প্রশাসনের এক সূত্র মানছে, ওয়েব পরিষেবার বিষয়ে আরও সক্রিয় হওয়া উচিত। তথ্য আপডেটের কাজটাও ঠিকঠাক ভাবে করা উচিত। পাশাপাশি ওই সূত্রের দাবি, এ নিয়ে পদক্ষে হয়েছে। কাজও অনেক দূর এগিয়েছে। শীঘ্রই জেলার ওয়েবসাইটটি নতুন রূপে প্রকাশ হবে। জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলেন, “তথ্য আপডেটের কাজ যাতে ঠিকঠাক ভাবে হয়, সেই দিকটি দেখা হবে। শীঘ্রই নতুন রূপে ওয়েবসাইট চালু হবে।”
অনেক আগেই জেলার ওয়েবসাইট চালু হয়েছে। তবে ই-তথ্যে পশ্চিম মেদিনীপুরের ওয়েবসাইটটি বেশ পিছিয়ে। অথচ, এখানে জরুরি তথ্যগুলো থাকলে, সময় মতো তথ্য আপলোড করা হলে একদিকে যেমন জনসংযোগ বাড়ত, অন্যদিকে তেমন জেলার উন্নয়ন সম্পর্কেও অবহিত হতে পারতেন অনেকে। বিশেষ করে নতুন প্রজন্ম। কারণ, নতুন প্রজন্মের একটা বড় অংশই এখন ‘ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ডে’ অনেকখানি সময় কাটায়। পশ্চিম মেদিনীপুরের মতো জঙ্গলমহলের জেলায় ওয়েব পরিকাঠামোর অভাব থাকা উচিত নয় বলেই মনে করেন অনেকে। মেদিনীপুরের বাসিন্দা সৌরভ সাহু, সোমা দাসরা বলেন, “জেলায় প্রচুর দর্শনীয় স্থান, পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে। বহু মানুষই এ সব জানতে আগ্রহী। জেলার ওয়েবসাইটে সেই তথ্য থাকা উচিত। ওয়েবসাইটটি যাতে আকর্ষণীয় হয়, সেটাও দেখা উচিত।” এটা নেটসেটের যুগ। ইতিমধ্যে জেলায় ‘ই-গভর্ন্যান্স’ চালুর তোড়জোড় হচ্ছে। এই ব্যবস্থা চালু হলে টেবিলে ফাইল চালাচালির দিন শেষ হবে। একদিকে যেমন কাজের ক্ষেত্রে আরও স্বচ্ছতা আসবে, অন্যদিকে তেমন সাধারণ মানুষের ভোগান্তিও কমবে। তথ্যপ্রযুক্তির যুগে সব দফতরেই অনলাইন সিসেস্ট চালু করার চেষ্টা চলছে। এখন বিদ্যুতের বিল অনলাইনে জমা দেওয়া যায়। টেলিফোন বিল অনলাইনে জমা দেওয়া যায়।
রেশন কার্ডও ডিজিট্যাল করা হয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু হাসপাতালে যেমন ই-প্রেসক্রিপশন চালু হয়েছে, তেমন সরকারি বাসেও ই- টিকিট চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জেলার পঞ্চায়েত সমিতিগুলোরও নিজস্ব ওয়েবসাইট রয়েছে। সেখানে জেলার ওয়েবসাইটে কেন পরিকাঠামোগত অভাব থাকবে, সেই প্রশ্ন উঠছেই। কি ভাবে ওয়েবসাইটটি আরও আকর্ষণীয় করা যেতে পারে? অনেকের বক্তব্য, ছবি সহ নানা তথ্য আপলোড করা হলে সাইটটি আকর্ষণীয় হতে পারে। পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রচুর পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে। দর্শনীয় স্থানগুলোর ছবি, সংক্ষিপ্ত ইতিহাস, এলাকা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য, যাতায়াতের রুট, থাকার বন্দোবস্ত সংক্রান্ত তথ্য রাখা যেতে পারে। এ সব থাকলে সাইটটি জনপ্রিয়ও হবে। মেদিনীপুরের বাসিন্দা কৌস্তভ দত্তের কথায়, ‘‘পশ্চিম মেদিনীপুরে ৪টি মহকুমা, ২৯টি ব্লক, এই সব তথ্য তো কমবেশি সকলেরই জানা। জেলার সাইটের পেজে ক্লিক করলে এই সব তথ্য মিলছে। কিন্তু নতুন নতুন আরও তথ্য আপলোড করা উচিত। জেলার শিল্প, সংস্কৃতি, খেলাধুলো-সহ নানা বিষয়ের ছবি থাকলে সাইটটি আকর্ষণীয় হয়।’’ তাঁর আক্ষেপ, “ইন্টারনেটে সার্চ করেও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার প্রত্যন্ত এলাকা সম্পর্কে বিশেষ কোনও তথ্য মেলে না!’’
জেলা প্রশাসনের এক কর্তাও মানছেন, “জেলা সম্পর্কে জানার আগ্রহ অনেকেরই রয়েছে। এটা থাকাই স্বাভাবিক। জেলার নিজস্ব সাইটে পরিকাঠামোগত কোনও অভাব না থাকাই উচিত। বিশেষ করে এই তথ্যপ্রযুক্তির যুগে দাঁড়িয়ে। তবে ইতিমধ্যে নতুন রূপে সাইটটি চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়িত করার সব রকম চেষ্টা চলছে। এখানে নতুন ভাবনাও থাকবে। আশা করি, এটি জনসংযোগের মাধ্যম হয়ে উঠবে।” পাশাপাশি তাঁর স্বীকারোক্তি, “এই উদ্যোগ আরও আগে নেওয়া হলেই ভাল হত!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy