মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে সাফাই কর্মীদের অবস্থান চলায় পুরসভায় ঢোকার ঝুঁকিই নিলেন না পুরপ্রধান। ফলে, পুরবোর্ডের বৈঠক হল শহরের এক লজে। পুরপ্রধান প্রণব বসুর বক্তব্য, “পুরসভার গেটে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাই ওখানে পুরবোর্ডের বৈঠক করা সম্ভব হয়নি।”
বাজেট নিয়ে আলোচনার জন্যই এই বৈঠক ডাকা হয়েছিল। গোড়ায় ঠিক ছিল, পুরসভার মিটিং হলে বৈঠক হবে। সোমবার সকাল পর্যন্ত কাউন্সিলররা তাই জানতেন। পরে বৈঠকস্থল বদলায়। ফোন করে কাউন্সিলরদের জানানো হয়, পুরসভায় নয়, বৈঠক হবে বিবিগঞ্জের এক লজে। সেই মতো তড়িঘড়ি সব ব্যবস্থা করা হয়। এক পুর-কর্তার কথায়, “এই বাজেট-বৈঠক পিছিয়ে গেলে সমস্যা হত। তাই পুরবোর্ডের বৈঠক অন্যত্র করতে হয়েছে।” পুরসভার এক সূত্রে খবর, বৈঠক শুরু হয় দুপুর দু’টো নাগাদ। শেষ হয় সাড়ে তিনটে নাগাদ। পুরপ্রধান ছাড়াও ছিলেন উপপুরপ্রধান জিতেন্দ্রনাথ দাস সহ পুর-পারিষদেরা। তৃণমূল কাউন্সিলরদের মধ্যে একমাত্র নির্মাল্য চক্রবর্তী অনুপস্থিত ছিলেন। বাম কাউন্সিলররাও বৈঠকে যোগ দেননি। তবে কংগ্রেস কাউন্সিলররা সাফাই ধর্মঘটের প্রসঙ্গ তোলেন। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের দাবিও জানানো হয়। পুর-কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন, আলোচনার প্রশ্নই ওঠে না। ফলে, এ দিন বৈঠকের পরও সাফাই-জট কিন্তু কাটেনি।
শহর কংগ্রেস সভাপতি তথা কাউন্সিলর সৌমেন খান বলেন, “বেশ কয়েকদিন ধরে সাফাই ধর্মঘট চলছে। আমরা আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু পুর-কর্তৃপক্ষ তাতে সহমত নন।” গত ১৭ এপ্রিল থেকে সাফাই মজদুর ইউনিয়নের ডাকে ধর্মঘট চলছে মেদিনীপুরে। মজুরি বৃদ্ধি-সহ বেশ কয়েক দফা দাবিতে এই আন্দোলন। ইউনিয়নের বক্তব্য, তারা পুর-কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী। আলোচনায় বসে নির্দিষ্ট আশ্বাস দিতে হবে। তারপর ধর্মঘট প্রত্যাহার হতে পারে। আর পুর-কর্তৃপক্ষের অবস্থান হল, আগে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হোক, তারপর আলোচনা হতে পারে।
ইতিমধ্যে সাফাইকর্মীদের ধর্মঘটকে নৈতিক সমর্থন জানিয়েছে সিটু। সোমবারও পুরসভার সামনে সাফাই কর্মীরা অবস্থান করেন। ইউনিয়নের নেতা তপন মুখোপাধ্যায় বলেন, “কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের ব্যাপারে এখনও উদাসীন। আন্দোলন যেমন চলছে তেমনই চলবে।” কেন পুরবোর্ডের বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন তিনি? তৃণমূল কাউন্সিলর নির্মাল্য চক্রবর্তীর মন্তব্য, “অন্য কাজে ব্যস্ত ছিলাম। তাই বৈঠকে যেতে পারিনি।” এ দিন সকালে কর্মীদের নিয়ে নিজের এলাকায় আবর্জনা সাফাইয়ের কাজ করেন নির্মাল্য। সাফাই ইউনিয়নের দাবি, তৃণমূলের এই কাউন্সিলর নৈতিক সমর্থন জানিয়েছে তাদের। নির্মাল্যর অবশ্য বক্তব্য, “দাবি থাকতে পারে। তবে আমরা বন্ধ-ধর্মঘটের পক্ষে নই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy