টেন্ডার ছাড়াই দু’-দু’খানা গাড়ি কিনে বিপাকে পড়ে গিয়েছে মেদিনীপুর পুরসভা। এবং এতে রীতিমতো আপত্তি জানিয়েছে ফিনান্স অফিসারের দফতর। পুরপ্রধানের দফতরে কড়া ‘নোট’ও পাঠিয়ে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে, এ ভাবে গাড়ি কেনা যায়না। বিষয়টি পুরোপুরিই অনুচিত।
পুরসভার কোনও কাজে ফিনান্স অফিসারের দফতরের আপত্তি র ঘটনা সাম্প্রতিককালের মধ্যে এই প্রথম। এমন কড়া ‘নোট’ পাঠানোর ঘটনাও এই প্রথমই।
এর জেরে এখনও ওই দু’টি গাড়ি কেনার প্রায় ১৭ লক্ষ টাকার বিল পাশ হয়নি।
তবে টেন্ডার ছাড়া গাড়ি কেনার পিছনে আর্থিক দুর্নীতির গন্ধও পাচ্ছেন বিরোধীরা। তাঁদের বক্তব্য, এ ক্ষেত্রে আদপেই স্বচ্ছতা বজায় রাখা হয়নি। যদিও মেদিনীপুরের পুরপ্রধান প্রণব বসু দাবি করেন, “গাড়ি কেনায় মোটেও কোনও অস্বচ্ছতা নেই।”
কিন্তু টেন্ডার ছাড়াই কীভাবে দু’-দু’টি গাড়ি কেনা হল?
প্রণববাবুর জবাব, “মানছি, এ ক্ষেত্রে একটা ভুল হয়ে গিয়েছে। এই গাড়ি কেনার জন্যও যে টেন্ডার ডাকতে হত তা আমরা বুঝতে পারিনি। এমন ভুল আর হবে না।” যা শুনে বিরোধী এক কাউন্সিলরের কটাক্ষ, “পুরপ্রধানের এই সাফাই শিশুসুলভ।”
সম্প্রতি মেদিনীপুর পুরসভা একটি ট্রাক্টর এবং একটি জেসিবি কিনেছে। সাধারণত, ৫ লক্ষ বা তার বেশি দামের কিছু কিনতে হলেই টেন্ডার ডাকার কথা। কিন্তু এ ক্ষেত্রে দু’টি গাড়ির দাম প্রায় ১৭ লক্ষ টাকা হলেও পুরসভা টেন্ডারের ধারেকাছে যায়নি। সরাসরি গাড়ি কিনে নিয়েছে। শহরের কংগ্রেস কাউন্সিলর সৌমেন খান বলছিলেন, “এই গাড়ি কেনা নিয়ে পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে কোনও আলোচনা হয়েছে বলেও মনে পড়ছে না।” একই বক্তব্য শহরের সিপিএম কাউন্সিলর জয়ন্ত মজুমদারের। তাঁর কথায়, “টেন্ডার ছাড়া এ ভাবে গাড়ি কেনা হলে প্রশ্ন তো উঠবেই।”
ফিনান্স অফিসারের দফতরের বিল আটকে দেওয়ার পদক্ষেপ যুক্তিসঙ্গত বলে মানছেন এক পুরকর্তাও। তিনি, “ফিনান্স অফিসারের দায়িত্বই তো কোথাও অনিয়ম হলে তা দেখা। পুরসভাকে সতর্ক করে দেওয়া। এ ক্ষেত্রে তাই হয়েছে।”
টেন্ডার প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে বিভিন্ন পদক্ষেপ করছে অন্য পুরসভাগুলি। কেউ দুর্নীতি রুখতে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় বদল আনছে, কেউ সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, টেন্ডারে যোগ দেওয়া বিভিন্ন ঠিকাদার সংস্থাগুলোর সঙ্গে যদি একই ব্যক্তির সরাসরি অথবা পরোক্ষ যোগ থাকে তবে ওই সব সংস্থাগুলোকে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে। সেখানে মেদিনীপুরে উলটপুরাণ! যদিও শহরের পুরপ্রধান প্রণববাবুর বক্তব্য, “এ ক্ষেত্রে দুর্নীতির কোনও ব্যাপার নেই।” একধাপ এগিয়ে মেদিনীপুরের উপপুরপ্রধান জিতেন্দ্রনাথ দাসও বলছেন, “এটা কোনও সমস্যাই নয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy