আড়াল: মাঝে হোগলার ছই। একই ঘরে চলছে দু’টি ক্লাস।
ঘর একটাই, তাতে হোগলার ছই দিয়ে চলছে দু’টি ক্লাসের পড়াশোনা। এক চিলতে জায়গাতেই ঠাসাঠাসি করে পাতা হয়েছে টেবিল-চেয়ার-বেঞ্চ।
পূর্ব মেদিনীপুরের অধিকাংশ জুনিয়র হাইস্কুলেই এই ছবিটা চেনা। অভিযোগ, পর্যাপ্ত শেণিকক্ষের অভাবে একই ঘরেই চলছে দু’টি শ্রেণির ক্লাস।
জেলার যে সব এলাকায় প্রাথমিকের পড়াশোনার পর মাধ্যমিক স্তরের পড়াশোনার জন্য ছাত্রছাত্রীদের দূরের স্কুলে যেতে হয়, সে সব এলাকায় আপার প্রাইমারি বা জুনিয়র হাইস্কুল গড়তে উদ্যোগী হয় সরকার। পরিকল্পনা অনুযায়ী, দু’কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে হাইস্কুল নেই এমন এলাকায়, জুনিয়ার হাইস্কুল চালু হয়। স্কুলগুলিতে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পড়ানো হয়। পূর্ব মেদিনীপুরে জুনিয়র হাইস্কুলের সংখ্যা ২৯৮টি। পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত কমপক্ষে চারটি শ্রেণি কক্ষের প্রয়োজন হয়। কিন্তু অনেক স্কুলেই তা নেই বলে অভিযোগ।
তমলুকের পোলন্দা জুনিয়র হাইস্কুলে গত দু’বছর ধরে পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণির ক্লাস চলছে একটি ঘরেই। আরেকটি ঘরে সপ্তম শ্রেণির ক্লাস এবং অফিসের কাজ চলছে। এক ক্লাসের পড়ার শব্দ যাচ্ছে অন্য ক্লাসে। এর ফলে মনোনিবেশ করতে কষ্ট হচ্ছে ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। ওই স্কুলের শিক্ষক মতিলাল মাইতি বলেন, ‘‘অন্য ক্লাসের শব্দ কানে আসে। খুবই অসুবিধা হয়।’’ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নারায়ণ বেরা বলেন, ‘‘কমপক্ষে চারটি শ্রেণিকক্ষের প্রয়োজন। তা না থাকায় এভাবে ক্লাসঘর ভাগ করতে হয়েছে। আরও দুটি ঘর নির্মাণ করা জরুরি।’’
ক্লাসঘরের সমস্যার পাশাপাশি স্থায়ী শিক্ষক-শিক্ষিকার অভাব রয়েছে বলে অভিযোগ। ২০১৬ সালে চালু হওয়া পোলন্দা জুনিয়র হাইস্কুলে বর্তমানে ৫৯ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। রয়েছে চারজন অতিথি শিক্ষক-শিক্ষিকা। তা পর্যাপ্ত নয় বলে দাবি।
শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে পোলন্দা জুনিয়র হাইস্কুল-সহ ১৬টি জুনিয়র হাইস্কুল রয়েছে। স্কুলগুলিতে শ্রেণিকক্ষের সমস্যা রয়েছে, তা মানছেন শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সমরনাথ ঘড়া বলেন, ‘‘ব্লকের ১৬টি জুনিয়র হাইস্কুলের মধ্যে একটি স্কুলেই ছটি কক্ষ রয়েছে। বাকি ১৫টি স্কুলেই শ্রেণিকক্ষের অভাব রয়েছে। এছাড়া, স্থায়ী শিক্ষক শিক্ষিকার অভাবও রয়েছে।’’
এ ব্যাপারে জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ মধুরিমা মণ্ডল বলেন, ‘‘যেসব জুনিয়র হাইস্কুলে শ্রেণিকক্ষের অভাব রয়েছে, তাদের আবেদন জানাতে বলা হয়েছে। আবেদন পেলে রাজ্য সরকারকে জানানো হবে।’’
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) আমিনুল আহসান বলেন, ‘‘অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষ তৈরির আবেদন এলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হবে। স্থায়ী শিক্ষক নেই, এমন ৯৮টি স্কুলে তিনজন করে স্থায়ী শিক্ষক পদের অনুমোদন হয়েছে। ওই পদগুলিতে শিক্ষক নিয়োগের জন্য সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy